রাগী_ম্যাডাম 🍂 #Part_9,10

 


#রাগী_ম্যাডাম 🍂

#Part_9

#Writer_Srabon


বিকালে ঘুম ভাংল কারো হাসির আওয়াজে।। বিছানা থেকে উঠে ফ্রেশ হলাম। এরপর 


বাইরে এসে দেখি আব্বু,আম্মু এবং আপু জোরে জোরে হাসাহাসি করতেছে। তাই আমি তাদের কাছে গিয়ে মজা করার জন্য বললাম।


--- কিরে আপু?? এতো হাসি কিসের.?? তোর বিয়ে ঠিক হয়েছে নাকি? (আমি)

--- জী না, আমার কোন বিয়ে টিয়ে ঠিক হয় নাই।(আপু)

--- তাহলে..?? (আমি)

--- আমরা হসতেছি অন্য একটা কারনে।(আপু)

--- কি কারন???? (আমি সোফায় বসে বললাম)

--- কাকে জেনো কোন নতুন ম্যাডাম ঠাসসসসস করে চর দিয়েছে সেটা নিয়ে হাসতেছি🤣🤣(আপু)

--- ওরে পেত্নীর বাচ্চা পেত্নী 🤬 (আমি)

--- আব্বু দেখছ..?? (আপু)

--- আমি কি বলব?? আমার তো হাসি পাচ্ছে। কি চরটাই না দিয়েছিল..(আব্বু)


এটা বলার পরেই সকলে মিলে হাসতে লাগল।।

আমি রাগ করে বাইরে চলে এলাম।।।


বাইরে এসে বেষ্টুকে ফোন দিলাম। শাওন😅


--- কিরে বেচে আছিস..??(শাওন)

--- না আমি শ্রাবনের ভুত বলতেছি৷ (রাগ করে বললাম)

--- আরে রাগিস কেন?? আমি রহিম চাচার দোকানে আসতেছি। তুই ও আয়।। (শাওন)

--- হুম।।।। আয়।।


আজ মনটা একটু কেমন কেমন যেনো লাগতেছে। তাই বাইক না নিয়ে হেটে যেতে লাগলাম। কারন হাটলে নাকি মনটা ফ্রেশ হয়ে যায়। সবাই তাই বলে, হয়তো বা হয়। তাই আমিও হাটতে লাগলাম। রহিম চাচার দোকান এখান থেকে ১০ মিনিট। 


রাস্তার পাশ দিয়ে হেটে যাচ্ছি। আমার ডান পাশ দিয়ে অনেক গুলো গাড়ি যাচ্ছে। এটা শহর এলাকায় স্বাভাবিক। তবে রিকশার সংখ্যা বেশি। 

হাটতেছি আর রাস্তার গাড়ি যাওয়া আসা দেখতেছি।।


হটাৎ একটা রিকশায় চোখ গেল। 

একটা মেয়ে আর একটা ছেলে যাচ্ছে। হয়তো গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড।। মেয়েটা ছেলেটার কাদে মাথা দিয়ে আছে চোখ বুজে।  


আমিও হয়তো একদিন এইভাবে কাউকে নিয়ে ঘুরে বেরিয়েছি দিন রাত সব সময়। আর আজকে কোথায় সেই মেয়ে? কোথায় সেই ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি।। হটাৎ কেন জানি না, গান শুনতে ইচ্ছে করতেছে। কিন্তু চারিদিকে অনেক শব্দ। কাছে হেডফোন থাকলে বেশ ভালোই হতো। কি করতে করতে যেনো পকেটে হাত গেল। পকেটে হাত দিয়ে দেখি হেডফোন মামু পকেটে। তখনই মনে পরল, রাতে পকেটে রেখেছিলা।। আমাকে আর পায় কে??


সাথে সাথে বের করে কানে দিয়ে মোবাইলে গান চালিয়ে দিলাম।।।।


অনেক পছন্দের একটা গান।। শুনতে লাগলাম। আর সাথে গুন গুন করে গাইতেছিলাম।।।


" এক সাথে রয়েছি দুজন

এক ডোরে বাধা দুটি প্রান। 

ছিরবে না কভু এ বাধন, 

আসলে আসুক তুফান।


এক সাথে রয়েছি দুজন

এক ডোরে বাধা দুটি প্রান। 

ছিরবে না কভু এ বাধন, 

আসলে আসুক তুফান।


তুমি আমারি, বলব শত বার

 ও আমার বন্ধু গো, 

  চির সাথী পথ চলার

  তোমারি জন্য হয়েছি

আমি মেঞ্জিল ভালোবাসার। "

 

গান শেষ হতে হতে দেখি দোকানের সামনে চলে এসেছি। শাওন আগে থেকেই এসে বসে আছে।


--- কেমন আছিস..?(শাওন)

--- মজা নিস...?(আমি)

--- তোর এই ত্যারামি করে কথা বলা কোন দিন যাবে না।। 

--- হুম।। 

--- আমি ভেবেছি আংকেল বকাবকি করেছে তাই বললাম কেমন আছিস??? 

--- আরে আব্বু কি বলবে?? যা করার রাইসা সব করে গেছে। আমার মান সম্মান সব শেষ করে দিছে।।


--- কিতা(কি) করছে ভাবি..??(শাওন)

--- আব্বুর সামনে আমাকে চর দিছে😥

--- কি বলিস?? কেন?? খুলে বল তো আমাকে।।।

--- [সব খুলে বললাম৷] (আমি)

--- আহারে বেচারা। শুধু শুধু মার খেলি।।

--- তা কি আর বলতে?? 

--- হুম, আর তোর বোনটা তো আছেই?? পচানোর জন্য🤣🤣

--- তুই এইটা একটা ঠিক কথা কইলি।

--- আমি সব সময়ই ঠিক কথা কই।।😎(শাওন)

--- কি খাবি?? চা না কপি??(আমি)

--- তুই জানিস না???

--- চাচা, দুই কাপ কফি দাও,, চিনি বেশি আমারটায়।। (চাচা আমাদের পরিচিত। সেই কলেজ লাইফ থেকে এখানে আসি)

--- আচ্ছা। (চাচা)


কিছুক্ষণ বসে বসে আমি আর শাওন আড্ডা দিলাম আর পিওর কফি খেলাম🤣


আরেকটু বলে নেই আপনাদের।  

চাচার দোকানটা আমাদের কলেজের পাশে। (ইন্টার যে কলেজে পরেছি)

পাশেই কলেজ ক্যাম্পাস৷ সাথে পুকুর আছে একটা।। 

আমি আর শাওন সোজা ওখানে চলে গেলাম।। মানে পুকুর পারে। যাওয়ার পথে ছোট ভাইরা বলছিল ক্রিকেট খেলতে। আমরা না করে দিয়েছি। 

মুড নেই ক্রিকেট খেলার এখন।।।


--- ভাই কি করবি এখন???(শাওন)

--- কি আর করব?? এখানে বসে বসে খেলা দেখি।।(আমি)

--- হুম, তাই দেখি চল।।


কিছু সময় দেখার পর,,,আমি বললাম 

--- ধুর ভালো লাগতেছে না।। কি যে করি??

--- আমার কাছে একটা প্লান আছে🙂(শাওন)

--- কি প্লান বল..?(আমি)

--- চল পাব্জি খেলি...(শাওন)

--- এইটা তুই কোন কথা বললি?? সালা আগে থেকে মনে করায় দিবি না???😅

--- হুম।।। 

--- গেমে ঢোক। আর এই কয়েকদিনে রাইসার চিন্তায় গেমে ঢুকতে পারি নাই।।

--- প্রেমিক ছাড়া প্রেমের মানুষ বাচে না ।।। (শাওন মজা করে বলল)

--- হাহাহাহহা।।।


এরপর শুরু হলো দুই নুবের পাব্জি খেলা।।

গেম খেলতে খেলতে কখন যে রাত হয়ে গেছে খেয়াল করি নাই।। গেমে ঢুকলে আর কিছু মনে থাকে না।। 


--- এ ভাই রাত হয়ে গেছে চল বাসায় যাই।। (শাওন)

--- বাসায় যাবি???

--- হুম।।।(শাওন)

--- চল তাইলে।।। (আমি)

--- বাসা তো কাছেই চল হেটে হেটে বাসায় যাই। মজা হবেনে😁(শাওন)

--- ওকে চল।।।

--- তুই হাটতে থাক আমি আসতেছি৷ এক মিনিটেই।। 

--- ওকে।।।।


শাওন চলে গেল। আমি একা একা হাটতে লাগলাম।।। 

আমি আবার গান শুনতে থাকলাম।।।


" লাল শাড়ি পড়িয়া কন্যা

     রক্ত আলতা পায়ে

আমার চোখের জল মিশাইলা,

      নিলা না বিদায়। 

তুমি ফিরাও না চাইলা একবার,

     চইলা গেইলা হায়।

জানি আজ রাত্র হইবা পরের

   আর ভাইবো না আমায়।


চান্দের মতো মুখটি যখন

   ভাসতো নয়ন জলে,

আদর কইরা মুইছে দিতাম

              গালে। 

ঘাটে আইসা পাশে বইসা 

   জরাইতা এ বুকে।

কইবো আমি এই কথা কেমনে.?

তবে ভালো কেন বাসিলা

স্বপ্ন কেন দেখাইলা,

ভালো কেন বাসিলা আমারে....."


আনমনে হয়ে রাস্তার আলোয় হাটতে হাটতে এই 

বাংলা গানটা শুনতেছিলাম। আর চোখ থেকে পানি পরতেছিল টপ টপ করে। ঠিক তখনই শাওন এলো। এসে আমার হাতে একটা স্পিড এর ক্যান দিল। শাওন আমার দিকে ফিরেই বলল...


--- তুই আবার কাদিতেছিস...??(শাওন)

--- কই নাতো?? (চোখের পানি মুছে)

--- দেখ শ্রাবন আমার কাছে লুকিয়ে লাভ নেই৷ আমি দেখেছি। (শাওন)

---........ চুপ (আমি)


শাওন হয়তো বুজতে পারছে আমারা আজকাল অতীত খুব মনে পরতেছে। তাই শাওন আমার মন ভালো করার জন্য বলল।।।।


--- তুই শালা একটা ফাউল। তীর দারা প্রেম ভালোবাসা কিচ্ছু হবে না। হুদাই লাফালাফি।। (শাওন)

--- কেন?? (আমি অবাক হয়ে)

--- এই যে তোর মধ্যে কোন রোমান্টিক দৃশ্য নেই।।(শাওন)

--- যেমন??? (আমি)

--- এ ভাই তুই ম্যামকে পটাতে চাস তাই তো নাকি???

--- হুম। কেন???

--- তাহলে তুই এই ছ্যাকা খাওয়া গান কেন শুনতেছিস???(শাওন)

--- তাহলে কি শুনব???(আমি)

--- রোমান্টিক গান শুনবি।।।

--- হুম।।।।

--- আমি হলে কি গান শুনতাম জানিস???(শাওন)

--- কি গান????(স্পিড খেতে খেতে)

--- বলব??? (শাওন)

--- না বললে বুজব ক্যামনে...?(আমি)


শাওন আর কিছু না বলে অরিজিত সিং এর একটা হিন্দি গান গাওয়া শুরু করল🙂


আজ ফির তুম পে

   পেয়ার আয়া হে,

  আজ ফির তুম পে

   পেয়ার আয়া হে

বেহাত অর বেসুমার 

       আয়া হে ♬ ♬ 


--- হাহাহাহহাহা। এ হারামি তুই থাম।।।(আমি জানি শাওন আমার মন ভালো করার জন্য এটা করেছে। সত্যি ওর মতো ফ্রেন্ড পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার)

--- এখন থেকে এই গুলা শোন। কাজে লাগবে।।(শাওন)

--- আর তুই স্পিড আনতে গেছিলি তখন??(আমি)

--- হুম।।। 

--- গুড,,, তুই ওই জে একটা কাজের মতো কাজ করলি।।।(আমি)

--- হুম😎😎

--- আহা কি ফিলিং।।। নির্জন রাস্তা। ল্যাম্পপোস্টের আলো আর পাশে বেস্ট ফ্রেন্ড। আর কি লাগে।।। গফ হলে অন্য কথা😁

--- হুম ভাই ঠিক🙂🙂


--- এ ভাই বাসায় চলে এসেছি।। তুই যা এখন।। (শাওন)

--- ওক্কে বেবি। লাভ ইউ।।। বায় (আমি)

--- ওকে সুইট হার্ট বায়।।।🤣🤣(শাওন)

--- ওরে বাটপার🤣 


এরপর আমি একা একা হাটা শুরু করলাম। ৫ মিনিট পরে বাসায় চলে এলাম।।


বাসায় এসে কলিং বেল বাজালাম। 

আপু এসে দরজা খুলে দিল।।।


--- কিরে ভিতুর ডিম। কোথায় ছিলি এতক্ষণ??? (আপু)

--- তুই আমাকে ভিতুর ডিম বললি কেন..??(আমি)

--- ইস!! যে একটা মেয়ের হাতে মার খেতে পারে। তাও একটা সামান্য ব্যাপার নিয়ে। সে আবার ভিতু না তো কি???

--- তুই ভিতু, তোর চোদ্দগুষ্টি ভিতু🤬🤬

--- হাহাহাহা বলদ কোথাকার।। তুই কোন বংশের??? 

--- উফ তোর সাথে কে পারে?? তোকে যে বিয়ে করবে তার লাইফ শেষ। আমি আজকে বলে রাখলাম।।।

--- ভাইয়ায়ায়ায়া তোকে আমি????


আমি এক দৌড়ে রুমে চলে এলাম।।।

আর আমার পাগলি বোনও হয়েছে একটা। বিয়ের কথা শুনলে হয়। একদম রেগে আগুন।।


মাঝে মঝে খুব খারাপ লাগে একটা কথা মনে পরলে। যে একদিন আমার এই পাগলি ছোট্ট বোনটাও একদিন আমাকে আমার পরিবারকে ছেড়ে অন্য কোথাও গিয়ে সংসার করবে। যখন কোন মেয়ে তার নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্য বাড়ি চলে যায় তখন সকলেরই খুব খারাপ লাগে। কেউ কান্না করে সেটা প্রকাশ করে আর কেউবা মুখ বুজে সেটা সহ্য করে। তবে আমি এইটুকু বলতে পারি সকল ভাইয়ের কাছে তার বোন খুব আদরের হয়। সব ভাই তার বোনকে ভালোবাসে। কেউ প্রকাশ করে কেউবা করে না। যাদের বোন নেই তারা কোন দিন বুজবে না বোনের মানে কি?? থাক আর না বেশি বলে ফেললাম। 


আজকে আর নয়।।।  


[ Wait for next part ]

#রাগী_ম্যাডাম 🍂

#Part_10

#Writer_Srabon


আপুর দৌড়ানি খেয়ে রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। 

নিচে আব্বুকে দেখলাম না। হয়তো রুমে আছে।

আম্মু যে এখন রান্না ঘরে রান্না করতেছে সেটা আমি জানি।


একটু বই না পড়লেই নয়। হাতে সময় আর বেশি নেই। আব্বুর তো একটা মান সম্মান আছে৷ আমি তার ছেলে হয়ে যদি ভালো একটা রেজাল্ট করতে না পারি? আর ভেবে লাভ নেই৷ পড়ার টেবিলে বসে গেলাম।।।


অনেক দিন পড়ে পড়তে বসে অনেক বড় ঝামেলাতে পড়লাম। সারা বই আন কপ্লিট। 

কিভাবে যে শেষ করব বুজতে পারতেছি না। আমি আরেকটু উদাহরণ দিয়ে আপনাদেরকে বোঝাই। মনে করেন ৫ মাস পরে ফেইসবুকে ঢুকলেন। তখন ফেইসবুকে ঢুকলে দেখা যাবে যে, অনেক গুলো ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট, নোটিফিকেশন, মেসেজ, পোস্ট ইত্যাদি। তো লেখাপড়া তো অনেক দিন করি না। তাই আমার অবস্থাও ঠিক ৫ মাস পরে ফেসবুকে ঢোকার মতো একটা অগুছালো অবস্থা 🤣🤣🥴।


যাক অনেক কষ্ট করে একটা ব্যাবস্থা করলাম। 

Eng বইটা একটু খুলে দেখতেছিলাম। তখনই আপু এসে বলল


--- ও মাগো😮 ভাইয়া তুই বই পড়তেছিস...??(আপু)

--- হুম কেন?? রোজই তো পড়ি😎(আমি)

--- তুই থাম ভাইয়া। আমি জানি তুই রোজ বই মেলে রেখে পৃথিবীর সব বাজে চিন্তা করিস🤣

--- তাহলে আজকে বললি কেন যে বই পড়ি..?(আমি)

--- হুহ,,, আমি আজকে অনেকক্ষণ দাড়িয়ে দেখছি তুই মন দিয়ে পড়তেছিলি😅😅

--- তার মানে তুই এতক্ষণ এখানে ছিলি??

--- হুম।।।

--- কিছু বলবি নাকি...??(আমি)

--- হুম।।। নিচে আয়।। আম্মু খেতে ডাকছে তোকে।

--- এত তাড়াতাড়ি..?? (আমি)

--- তাড়াতাড়ি মানে?? ঘরি দেখ রাত ১১ টা বাজে। আব্বু খেয়ে নিয়েছে। বাকি আছি আমরা তিনজন.(আপু)

--- কিহ..?? ১১ টা বাজে। omg

--- হুম।।

--- তুই যা আমি আসতেছি।।।

--- ওকে।।।


বই খাতা সব গুছিয়ে রেখে আমি নিচে চলে গেলাম।


--- বই পড়া শেষ হলো তবে..??(আম্মু)

--- হুম আম্মু।।।(আমি)

--- নে এই বার খেয়ে নে।।

--- হুম।।


আমি,আম্মু,আপু খেয়ে যে যার রুমে চলে গেলাম।


রুমে এসে মোবাইলটা অন করলাম।

পরিক্ষার রুটিন দরকার তাই হিমুর বাচ্চারে ফোন দিলাম।।


--- কিরে এত রাতে ফোন দিলি কেন..?(হিমু)

--- পরিক্ষার রুটিন আছে না তোর কাছে..??(আমি)

--- হুম।।। কিন্তু কেন.?

--- আমাকে এখনি মেসেঞ্জারে পাঠা তো।।

--- তুই রুটিন দিয়ে কি করবি আবার..?

--- ওরে হুমুর বাচ্চা।। রুটিন দিয়ে কি করে??? তুই বেশি কথা না বলে পাঠা আগে।।

--- ওকে ওয়েট।


কিছুক্ষণ পরে রুটিন পেয়ে গেলাম।

এখন গায়ে একটা পরিক্ষা পরিক্ষা ভাব চলে এসেছে। 


পরিক্ষা শেষ হবে ২৭ তারিখ। 

এখানেই আমি সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছি।

আর তার কারন হচ্ছে। ওই মাসের ২৮ তারিখ হচ্ছে রাইসা ম্যাডামের বার্থডে।। কি কপালরে ভাই চিন্তা করেন।। যাক ভালোই হবে পরিক্ষা দিয়ে পরের দিন ম্যাডামের জন্মদিনে গিয়ে wish করব। আর সাথে আবার প্রপোজও করব।😁


রাইসার কথা মনে পরায়। সাত পাচ না ভেবে কল দিলাম।।।


প্রথমবার রিং হলো ধরল না। পরপর ৩ বার কল করার পর চার বারের বার কল ধরল।।


--- এই বেয়াদপ ছেলে তুমি বার বার কল দিচ্ছ কেন.??(ম্যাম)

--- ওলে বাবা বাবু আমার রাগ করছে..??(আমি 🤣)

--- ওরে শ্রাবন তুই কালকে আয় একবার ভার্সিটিতে। 

--- কেন..? দেখতে ইচ্ছে করে খুব..?

--- তোকে আজকের মতো কাওলকেও মার খাওয়াবো স্যারের কাছে।।

--- তোমার জন্য আমি সব কিছু খেতে পারি সুইটহার্ট 

--- এই সব কিছু আমি স্যারকে বলব। মনে রাখিস তুই..?

--- সেটা তোমার ব্যাপার। আমি জানি তুমি বলবা না। আর বললে বুঝব তুমিও আমাকে লাভ করো🤣

--- উফফফ। তুই ফোন রাখ।।। (বলে কেটে দিল)


হাহাহাহাহা মনটা ফ্রেশ হয়ে গেল। রাগলে ম্যামের কথা উফফ জোস লাগে😅😅


খুব ঘুম পাচ্ছিল। তাই আর কিছু না ভেবে সকালে ঘুমিয়ে গেলাম।।। গুড নাইট 😁


খুব সকালে ঘুম থেকে উঠিলাম। উঠে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। এখন থেকে রোজ সকালেই উঠব বলে ঠিক করেছি। তার কারন পরিক্ষার আর বেশি দেরি নেই। তাই সকাল সকাল উঠে একটু লেখাপড়া করব। 😀


বই পড়তেছিলাম তখনই আম্মু আমার রুমে এলো। এসেই আম্মু অবাক হয়ে গেলো। অবাক হবারই কথা। আজ প্রায় ২ বছর পরে সকালবেল বই পড়তেছি আমি। 


--- শ্রাবন আব্বু তুই ঠিক আছিস তো..?(আম্মু)

--- হুম। কেন??

--- না মানে, তুই আজ কত দিন পরে আবার আগের মতো সকালে পড়তে বসেছিস??

--- হাহাহাহাহা,,, পুরনো কথা মনে করে লাভ নেই। (শুকনো হাসি দিয়ে৷)

--- আব্বু আমি জানি, এটা তোর মনের হাসি না। কারো জন্য জীবন কখনো থেমে থাকে না। তাই সব ভুলে গিয়ে আবার শুরু কর৷(আম্মু) 


(আমার অতীতের গল্পটা অন্য একদিন বলব)


--- হুম। আব্বুর কথা ভেবেই পড়তেছি। (আমি)

--- হুম ভালো।। আর পরিক্ষা শেষ হলে আমার জন্য বৌমা খুজতে হবে না..?😀😀(আম্মু)

--- আম্মু তুমি... আমি এখনো বাচ্চা😅

--- বাচ্চা..??? তাহলে তো খুব তারাতাড়ি তোর বিয়েটা দিতে হচ্ছে😁

--- আম্মু তুমি যাও তো। আমাকে পড়তে দাও।।

--- হুম যাচ্ছি। আর আমি কফি বানিয়ে দিয়ে যাচ্ছি। তুই পড়তে থাক।।(আম্মু)

--- ওকে।।।


সকালের খাবার খেয়ে বেরিয়ে গেলাম ভার্সিটির উদ্দেশ্যে।। 

আজকে কলেজ থেকে তাড়াতাড়ি বাড়ি আসতে হবে। তাই বাইক নিয়ে বেড় হলাম।।

শাওনকে ফোন দিলাম।।।


--- কই তুই...?(আমি)

--- রহিম চাচার দোকানে আয়।।।(শাওন)

--- ওকে, ওয়েট কর আমি আসতেছি। 


শাওনকে পিক করে নিয়ে সোজা ভার্সিটির ভিতরে ঢুকে গেলাম।।


বাইক রেখে। আমি আর শাওন ক্যাম্পাসের একটা ফাকা জায়গায় গেলাম।


--- ভাই আমি একটা সিধান্ত নিয়েছি।(আমি)

--- কি সিধান্ত বল...(শাওন)

--- কাল থেকে আর ভার্সিটি আসব না। (আমি)

--- কিহ...???(শাওন)

--- হুম। আমি অনেক ভেবে দখলাম। আব্বুর একটা মান সম্মান আছে। তাই আমাকে ভালো রেজাল্ট করতে হবে। আর ম্যাডামকে পেতে হলেও একটা ভালো রেজাল্ট দরকার।।। (আমি)

--- তো ভালো কথা। কিন্তু ভার্সিটি আসবি না কেন???(শাওন)

--- তুই জানিস না..?? আমি একা একা পড়তে ভালোবাসি। একা একা পরলে মনে থাকে ভালো।(আমি)

--- ওকে বন্ধু। আমি চাই তুই ভালো কিছু কর। 

--- হুম, সেটা আমি জানি।।

--- চল ভাই ক্লাসে যাই।।।

--- হুম।।।।


ক্লাসে গিয়ে বসলাম। প্রথম ক্লাস শুরু হলো।।


--- ভাই আর একটা কথা।।(আমি)

--- কি কথা বল??(শাওন)

--- আমি ক্লাসে না আসলে ম্যাডাম আমাকে মিস করে কি না তুই একটু দেখিস..??

--- ওরে সালা।। ম্যাডাম আবার তোকে মিস করবে??🤣🤣

--- চুপ হারামি।।

--- হাহাহাহাহা

--- আর একটা কথা,,(আমি)

--- কি??

--- আমাদের পরিক্ষার যেদিন শেষ হবে তার পরের দিন ম্যাডামের জন্মদিন।।(আমি)

--- হুম, তারপর..??

--- ওই দিন ম্যামকে প্রপোজ করব।। আর সে যদি রাজি হয় তাহলে সোজা বিয়ে🙂🙂

--- বাহ ভাই বাহ!!! 🤣🤣

--- আমি সিরিয়াস😤(আমি)

--- ওকে।।। 


গল্প করতে করতে প্রথম ক্লাস শেষ হলো।।

এবার রাইসা ম্যাডাম এলো।

সবাইকে আজকের পড়া জিজ্ঞেস করতেছে। আর আমি তাকে দেখে যাচ্ছি। 

এক সময় আমার পালা এলো।।


--- এই বেয়াদব পড়া বলো..??(ম্যাম)

--- পারি না,,,(আমি)

--- ওকে, আমার সাথে এসো।।।।(ম্যাম)

--- ম্যাডাম আজকে আবার???? (আমি)

--- হুম।।। এসো।


আমি ম্যাডামের সাথে সাথে আব্বুর রুমে গেলাম। অফিসে।


--- মিস রাইসা আজকে আবার এই বান্দরটা কি করছে..??(আব্বু)

--- আমার ক্লাসে ঘুমিয়ে ছিল (ম্যাডাম মিথ্যা বলল)


[আমি চোখ বড় বড় করে ম্যাডামের দিকে তাকালাম। ম্যাম একটা শয়তান মার্কা হাসি দিল]


--- স্যার আমি ঘু.....(আজিকে স্যার বললাম নিজের আব্বুকে।) 

--- বেয়াদব, চুপ থাক (ম্যাম)

--- আপনি এক কাজ করেন,,, ওকে একটা চর দিন (আব্বু)


ঠাসসসসসসসস (বলার সাথে সাথে মেরে দিল)


আমি বলদের মতো আব্বুর দিকে চেয়ে আছি।।🥺🥺


--- আপনি এবার জান। আমি ওকে দেখিতেছি।।(আব্বু)

--- ওকে স্যার।।(ম্যাম)


ম্যাম যাবার পরে,,


--- আব্বু তুমি আমাকে মার খাওয়ালে কেন???(আমি)

--- আমি তো মারি নাই।।(আব্বু)

--- আমি বাসায় গিয়ে আম্মুকে বলব।।(আমি)

--- হাহাহা,,আমি তো মারি নাই😁(আব্বু)

--- যাক বাদ দাও। আমি তোমাকে একটা কথা বলতে চাই।।(আমি)

--- কি কথা...??(আব্বু)

--- আমি আর ভার্সিটিতে আসতে চাই না।

--- কেন???

--- এই দুই মাস আমি বাড়ি বসে পড়তে চাই।। আর তুমি তো জানো, আমার একা একা পড়তে ভালো লাগে।।(আমি)

--- হুন বুজলাম।৷ কিন্তু তোর যদি কোন হেল্প দরকার হয়..??(আব্বু)

--- আমি সেটা জানি না।

--- এক কাজ করি,, তোর রহিম স্যারকে বলে দেই। সে রোজ বিকালে গিয়ে তোকে কিছু সময় হেল্প করবে।। (আব্বু)

--- ওকে আব্বু।। আসি

--- আর শোন ভালোভাবে পড়াশোনা করিস কেমন??

--- ওকে আব্বু।।।


এরপর আমি ভার্সিটি থেকে সোজা বাসায় চলে এলাম।। ধুর আজকেও আব্বুর জন্য শুধু শুধু মার খেলাম। মনটা খারাপ এই দুই মাস ম্যামকে চাইলেও দেখতে পারব না🥺


মন খারাপ করে দরজায় বেল দিলাম।।।


আম্মু এসে দরজা খুলে দিল,,,


[Wait for next part ]

1 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post