লেখকঃ#Mahbub_Rohman_Shuvo
পর্ব ৭
✔️মেঘঃ জামিনুর এখন সুস্থ আছে। ওসি সাহেবের পায়ে যে দুই টা গুলি করেছেন সেখানে ১ টা তার পায়ের হাড়ে গেঁথে যায়। যার ফলে হাড়ে ফাটল ধরে।যার কারনে ওসি কে ৪ মাস বেড রেষ্টে থাকতে হবে।
আমিঃ ওহহ তো এখন তোরা গিয়ে জামিনুরের বাড়িতে গিয়ে দেখ ওদের কি অবস্থা।
✔️মেঘঃ ওকে ভাই৷ আমি দেখছি।
আমিঃ আচ্ছা তোরা এই দিকটা দেখ। আমি এখন একটু বাসায় যাই। আমার মাথাটা প্রচুর ব্যাথা করতাছে।
✔️মেঘঃ কি ভাই আপনার মাথা ব্যাথা করতাছে।
আমিঃ বেশি না একটু এটা মাথায় সামন্য পানি দিলেই ঠিক হয়ে যাবে।
✔️মেঘঃ ওকে ভাই।
এরপর ওরা চলে গেলো জামিনুরের বাসায় এবং আমি চলে গেলাম আমার বাসায়। আমি বাসায় গিয়ে বেশ কিছুক্ষণ শাওয়ার নিলাম। এখন মাথা ব্যথাটা কিছু কমেছে। এরপর ড্রেস চেঞ্জ করে চলে আসলাম হসপিটালে।
যতই হোক খবর শশুর মশাই পায়ে গুলি করেছি । যদি খবর না নিইতাহলে কি করে হয়?? আষাঢ়ে জামিনুর ভর্তি তাকেও তো দেখা লাগবে।
আমি হাসপাতালে গিয়ে দেখলাম সোনালিকা বাইরে বসে বসে কান্না করছে। আমি তার কাছে যেতে ঠাশ ঠাশ কথা থাপ্পর মারল। আর বলতে লাগলো,,,,
🔰 সোনালিকাঃ এই তোর সাহস তো কম না । তুই এখানেও এসেছিস ?? তুই কী এখন আমার বাবাকে মারতে চাস??
আমিঃ আমি.....
(আর কিছু বলতে না দিয়ে ঠাস করে আরও একটা থাপ্পর মেরে দিল।
থাপ্পড়টা এত জোরে বলল যে আমার ঠোঁট কেটে রক্ত বের হতে লাগলো। )
এবার আমার মাথায় রাগ উঠে গেল আমার শরীরের সমস্ত শক্তি ওকে দিয়ে থাপ্পর মারলাম। এবং বলতে লাগলাম,,,
আমিঃ এই চুপ । একদম চুপ । আমার কথা শুনে না হয় তুই যা ইচ্ছে তাই করিস। তোকে ভালোবাসি বলে তুই কথায় কথায় আমাকে থাপ্পর মারবি তা কিন্তু হবেনা।
🔰 সোনালিকাঃ ভালোবাসা হাহাহাহাহা। তোর মুখে ভালোবাসা মানে না। আরে তুই তো একটা খারাপ চরিত্রের মানুষ, যে কিনা নিজের বন্ধুর বুকে গুলি করতে একবারও দ্বিধা বোধ করল না।
এবার সোনালিকাকে আরেকটা থাপ্পড় মারে বললাম,,,,,,
আমিঃ আগে তুই আমার কথা শোন এরপর বিচার করবি । আমি যা করেছি তা কি ভুল করেছি ??
🔰 সোনালিকা এখন চুপ হয়ে গেছে,,,, কোন কথা বলছে না।। এরপর আমি বলতে শুরু করলাম।
আমিঃ আর পাঁচটা বাচ্চার মত আমারও শৈশবটা ভালই কাটছিল। কিন্তু এই ভালোটা আর বেশিদিন টিকলো না। আমি যখন ক্লাস টেন এ পড়ি। সেদিন আমাদের স্কুল টি তাড়াতাড়ি ছুটি দিয়ে দিয়েছিল।। আমি কোন দিকে না তাকিয়ে সোজা বাসায় চলে আসি। বাসায় এসে যা দেখলাম তা দেখার জন্য হয়তো কোন সন্তানের সুস্থ থাকবে না।। কারণ আমি দেখলাম আমার নিজের চাচা আমার মাকে খুন করছে। এটা দেখার পর আমার রাগ আমি কন্ট্রোল করতে পারলাম না।। তাই আমি পাশে থাকা একটা ফল কাটার ছুরি দিয়ে চাচার পেটে দিলাম ঢুকিয়ে । আমার চাচাকে খুন করে ফেললাম। চাচার পেট এখন গর গর করে রক্ত বের হচ্ছে। ঠিক এমন সময় বাবা আসলো। বাবা এসে আমাকে এ অবস্থা দেখে সহ্য করতে পারলো না। উনি হার্ট অ্যাটাক করলেন। এরপর আমার বাবা আমাকে পুলিশে দিয়ে দেয়। তিনি মনে করেছিলেন আমার মা ও চাচা কে আমি খুন করেছি।
আমি জেল থেকে ফিরে যখন বাড়িতে যাই তখন দেখতে পেলাম আমার বাবা নতুন বিয়ে করেছে। এবং তিনি আমাকে দেখে আমার কাছে আসলেইনা। বরং লাঠি দিয়ে আমাকে মেরে ঘর থেকে বের করে দিলেন। আর বললেন আমাকে নাকি সে ছেলে হিসেবে মানে না।
আমিও সেদিন আর কোন কথা না বলে চলে গেলাম বাড়ি ছেড়ে। এইবার গিয়ে যোগ দিলাম একটা গ্যাংএ । সেখান থেকে আমার জীবনটা সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে গেল। একটা সাধারণ পরিবারে জন্ম হয়ে গেল ধীরে ধীরে গ্যাংস্টার।
এরপর আমি একদিন এক বিয়ে বাড়িতে তোমাকে দেখি। সেদিনই তোমাকে ভালোবেসে ফেলি। পরে তোমার বিষয়ে জানতে পেরে বুঝতে পারলাম তুমি ঢাকায় থাকো এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তাই আমি চলে আসলাম ঢাকা। তোমার খোঁজে। আর এখানে এসে শুনলাম গ্যাংস্টার জোকার কিং এর রাজত্ব এই ঢাকা ভার্সিটিতে। আর গ্যাংস্টার জোকার কে আমার সাথে ছলনা করে এখানে চলে এসেছে। তাই ওকে মারতে এবং তোমাকে ভালোবাসি বলতে আমি ভর্তি হই এই ঢাকা ভার্সিটিতে।
এবং গ্যাংস্টার কিং এর লিডার কে আমি মেরে ফেলি।
🔰 সোনালিকাঃ তার মানে তুমি হোয়াইট গ্যাংস্টার কিং এর লিডার??
আমিঃ হুম ।
🔰 সোনালিকাঃ তারমানে তুমি জামিনুরকে কি ইচ্ছে করে খুন করতে চেয়েছো।
আমিঃ না।
🔰 সোনালিকাঃ তাহলে কে খুন করেছে??
আমিঃ আর যখন জামিনুর আসলো তখন তাকে দেখে আমার কেমন জানি সন্দেহ হচ্ছিল। তাইতো আমি তাকে নিয়ে সাইডে গিয়েছিলাম। সেখানে যাওয়ার পর আমি যা শুনলাম তা শোনার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। কারণ জামিনুর আজ আমাকে মারতে ভার্সিটিতে এসেছিল।
🔰 সোনালিকাঃ তাহলে তো বুঝে গেলাম তুমি মেরেছো জামিনুর কে।। কারণ জামিনুর এসেছিল তোমাকে মারতে যেটা তুমি সহ্য করতে না পারে তুমি ওকে গুলি করে দিলে। আর আমাকে দেখে জামিনুরকে বাঁচানোর মিথ্যা অভিনয় করলে ।তাইতো।
আমিঃ এত বেশি বুঝো কেন তুমি। ওখানে এরকম কিছুই হয়নি।
🔰সোনালিকাঃ তাহলে কি হয়েছিল??
আমিঃ আমি যখন জামিনুর কে নিয়ে ভার্সিটির পিছন দিকটা গেলাম। তখন জামিনুর আমাকে সব সত্যি কথা বলে দেয় এবং আমার পা ধরে ক্ষমা চায় । আমিও তাকে ক্ষমা করে দিই। আমি লক্ষ্য করে দেখলাম সে তার পকেটে হাত দিয়ে রেখেছে । তাই আমি তার পকেট থেকে হাত বের করতে গিয়ে দেখতে পেলাম তার পকেটে একটা পিস্তল। এরপর ওই পিস্তলটা আমি নিয়ে যাই। ঠিক সে সময় কেউ একজন এসে তাকে গুলি করে দেয়। একই সময় তুমি এসে চিত্কার করে উঠলে । আরে এসে আমাকে ভুল বুঝতে লাগলে ।
🔰সোনালিকাঃ জামিনুরের বিষয়টা না হয় বুঝলাম। কিন্তু তুমি যে আমার বাবাকে গুলি করলে এটা।
আমিঃ প্রথমত আমি একজন গ্যাংস্টার। কথা কম গুলি বেশি চলে। গত চার বছরে কত যে খুন করেছি তা আমার মনে নেই। ।
সে ক্ষেত্রে তোমার বাবা তো আমার কলার হাত দিয়েছে ।। আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দিচ্ছিল।। আমি তোমার বাবার পায়ে গুলি করি। যেন সে চুপ থাকে। আল্লাহর কাছে লাখো শুকরিয়া করেছে তাকে আমি মারেনি। আর একটা কথা কি জানো??
🔰 সোনালিকাঃ না বললে জানবো কি করে??
আমিঃ I love you Sonalika...i really really love you.... Do love me??
🔰সোনালিকাঃ না ,কখনোই না । আমি তোর মতো একটা গ্যাংস্টার ছেলেকে ভালবাসতে পারব না। তুই যদি গ্যাংস্টার গিরি ছেড়ে ভালো পথে চলে আসিস তাহলে আমিভেবে দেখতে পারি??
আমিঃ তুমি এইটা চাই শুধু তো তাই ??
🔰সোনালিকাঃ জি আমি শুধু এটাই চাই।
আমিঃ ওকে জামিনুর কে যে গুলি করেছে শুধুমাত্র তাকে বের করি। এরপর থেকে আমি আর গ্যাংস্টার গিরি করবো না। এবার খুশিতো???
🔰 সোনালিকাঃ না ।
আমিঃ না কেন??
🔰সোনালিকাঃ কারণ আপনি আপনার বাবা মার কাছে ফিরে যাবেন। এরপরই তারা যদি আমাদের বিয়ে ঠিক করে, তাহলে আমাদের বিয়ে হবে তাছাড়া কোনো মূল্যে আমি আপনাকে ভালবাসতে পারব না।
আমিঃ যথা আজ্ঞা মহারানী।
🔰 সোনালিকাঃ হুম।
হয়তো এখন সোনালিকার রাগ কিছুটা কমেছে তার কথাবার্তায় এবং আচরনে আমি এটা বুঝতে পারলাম। কিছুক্ষণ পর মেঘ কল করল এবং কল করে আমাকে বলতে লাগলো,,,
✔️মেঘঃ ভাই জামিনুর এর বাবা মা তো এখানে নেই। বাইরে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ দেখলাম কিছু লোক মিলে তাদের কোথায় যেন নিয়ে যাচ্ছে।
আমিঃ গাড়িতে করে নিয়ে গেছে না অন্য কিছু তে করে নিয়ে গেছে।
✔️ মেঘঃ কালো রংয়ের একটা প্রাইভেট কারে করে। গাড়ির নাম্বার টা নোট করেছি আমি।
আমিঃ কি নাম্বার আমাকে ইমিডিয়েটলি বলো??
✔️মেঘঃ ঢাকা মেট্রো ন -10110
আমিঃ ওকে আমি খবর নিচ্ছি গাড়িটা কার।
✔️মেঘঃ ওকে ভাই।
এবার আমি কলটা কেটে দিলাম এবং আমার গ্যাং এর হ্যাকার এর কাছে কল দিলাম। তাকে বলতে লাগলাম,,,,
আমিঃ তুমি তাড়াতাড়ি দেখো তো এই গাড়িটা কার??
🍿😀 শারমিনঃ স্যার গাড়ির নাম্বার টা বলেন??
আমিঃ ঢাকা মেট্রো ন -10110
😀 শারমিনঃ স্যার একটু ওয়েট করেন আমি দেখছি।
আমিঃ জি দেখো।
😀 শারমিনঃ জি স্যার পেয়েছি। স্যার এটা তো রাজিব খান-এর নামে রেজিস্ট্রেশন করা।
আমিঃ কোন রাজিব??
😀শারমিনঃ গ্যাংস্টার কিং এর লিডার নামে রেজিস্ট্রেশন করা।
আমিঃ ওকে তুমি মেরে ফেলেছি তাহলে ও কি করে জামিনুরের বাবা-মাকে কিডন্যাপ করেছে????
😀 শারমিনঃ জানি না স্যার কিন্তু গাড়িটা ওর নামে রেজিস্ট্রি করা হয়েছে।
আমিঃ আচ্ছা তো গাড়িটা কই আছি সেটা কি তুমি বলতে পারবে???
😀শারমিনঃ স্যার একটু ওয়েট করেন।
আমিঃ ওকে। একটু তাড়াতাড়ি বল।
😀 শারমিনঃ না স্যার ।লোকেশন ট্র্যাক করা যাচ্ছে না।
আমিঃ ও আচ্ছা।
😀শারমিনঃওকে স্যার। আমি কি আর কোন ভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি ।
আমিঃ না।
😀 শারমিনঃ ওকে ।
এরপর আমি কলটা কেটে দিলাম । কলটা কাটতেই সোনালিকা মাকে বলতে শুরু করল,,,,
🔰 সোনালিকাঃ কি হয়েছে রায়হান তুমি এত চিন্তিত কেন?? আর জামিনুর বাবা-মার কি হয়েছে?? কারাই বা তাদেরকে কিডন্যাপ করেছে।
আমিঃ জানিনা সোনালিকা । আমি কিছু জানিনা।
🔰সোনালিকাঃ কি হয়েছে আমাকে সম্পূর্ণ টা কি খুলে বলবে??
আমিঃ আমি ওই যে ভার্সিটিতে যে লোকটিকে খুন করেছিলাম। আরে গ্যাংস্টার জোকার কিং এর লিডার কে।
চলবে............