পার্টঃ ১২ (লাস্ট)
লেখকঃ_Osman
(আমি বাসায় আসলাম।এসে কাপড় চেঞ্জ করলাম।সন্ধ্যা হলে পারফিউম দিয়ে। একটা ফুলের তোরা নিয়ে সুমাইয়ার বাসার সামনে গেলাম। গিয়ে ফোন দিলাম সুমাইয়াকে।)
আমিঃ কোথায় তুমি?
সুমাইয়াঃ বাসায়।
আমিঃ কি করো?
সুমাইয়াঃ কিছু না তোমার কথায় চিন্তা করছিলাম।
আমিঃ একটু তোমার বাসার নিচে আসতে পারবা।
সুমাইয়াঃ কেনো?
আমিঃ আসো না।প্লিজ
সুমাইয়াঃ ওকে আসতাছি।
(একটু পর সুমাইয়া আসে। বাসার সামনে লাইটের আলোয় সুমাইয়াকে পরীর মতো লাগছিলো। আসলে সুমাইয়ার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে ফুলের তোড়া এগিয়ে দিয়ে বললাম)
আমিঃ আই লাভ ইউ সুমাইয়া। তুমি কি আমাকে বিয়ে করবে।
সুমাইয়াঃ ইয়েস...ইয়েস..... আমিও তোমাকে ভালোবাসি।
(সুমাইয়া ফুলের তোড়াটি নেয় ।আমি দাড়াই। সুমাইয়া আমাকে জড়িয়ে ধরে।
আমিই সুমাইয়াকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরি। কিছুক্ষন জড়িয়ে ধরার পর আমি আমি আমার মুখ সুমাইয়া ঠোঁটের কাছে নিতে থাকি। এবার সুমাইয়া কোনো বাঁধা দিচ্ছে না। একেবারে কাছে আনলে সুমাইয়া চোখ বন্ধ করে ফেলে। আমি হালকা ভাবে তার ঠোঁটে আমার ঠোঁট লাগাই। সে আমার হাত গুলো শক্ত করে ধরে রাখে। এক মিনিট পর ছেড়ে দেয়।)
সুমাইয়াঃ প্লিজ এখন আর না।আমি নিতে পারবো না।
আমিঃ ওকে।
(সুমাইয়া আমাকে আবার জড়িয়ে ধরে বলল)
সুমাইয়াঃ এখন বলো বিধবা মেয়েদের কেমন লাগে।
আমিঃ সেটা আর বলতে হবে।
সুমাইয়াঃ কেনো কেমন লাগে বলো?
আমিঃ সেটা আর কিছুদিন পরে বলবো।
সুমাইয়াঃ ওকে। আমি যাই। নাহলে বাবা কিছু বলবে।
আমিঃ ওকে যাও। শীগ্রই আমার বোন তোমার এখানে আসবে।
সুমাইয়াঃ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করো।
আমিঃ ওকে।
(আমি সুমাইয়াকে বায় দিয়ে বাসায় চলে আসি। পরদিন মিমের বাড়িতে যাই। গিয়ে হাসানকে বলি।)
আমিঃ হাসান আমি বিয়ে করছি।
হাসানঃ কাকে কবে?
আমিঃ তকে যে বলছিলাম সুমাইয়া।
হাসানঃ সুমাইয়ার সাথে সব ঠিক ঠাক।
আমিঃ হুম। শুন তকে আর মিমকে তাদের বাড়িতে যেতে হবে। গিয়ে তার আর আমার বিয়ের সম্পর্কে কথা বলতে হবে।
হাসানঃ ওকে কোনো সমস্যা নাই। কবে যাবো।
আমিঃ আগামীকাল।
হাসানঃ ওকে।
আমিঃ তাহলে আমি বাড়ি যাই। তুই আমাকে কল দিস।
(পরদিন হাসান আর মিম গিয়ে কথা বলে আসে। মেয়ে দেখার তারিখ ঠিক হয়। দুদিন পর আমরা সবাই যাই সুমাইয়ার বাড়িতে। আমি গিয়ে সোফায় বসি।
আমার পাশে হাসান।আর মিম সুমাইয়ার কাছে গেছে। সুমাইয়া বাবা বলল)
বাবাঃ বাবা তোমাকে জানি কোথায় দেখছি?
আমিঃ আংকেল আমি আনাস। আপনার বাসা দেখতে আসছিলাম।
বাবাঃ অহহ মনে পড়ছে মনে পড়ছে। তুমি কি সুমাইয়াকে বিয়ে করে আমার বাসায় বাড়া ওঠবা।
(আমি হাসানের কানে কানে বললাম)
আমিঃ কিছু বলনা।
হাসানঃ আসলে কি আংকেল আনাসের এমন একটা বাড়ি আছে।আর ঐদিন আনাস আপনার মেয়েকে দেখতে এসেছিলো।
বাবাঃ অহহ বুঝছি। এজন্য তোমরা দুজন এতক্ষন কথা বলছিলা।
হাসানঃ ঠিক ঠিক।
বাবাঃ আমিতো ভাবছিলাম। মনে হয় বাসা বাড়া নিবা। এ সুমাইয়ার মা তাদের কিছু খেতে দাও।
(সুমাইয়া মা আমাদের কিছু খাবার দেয়। একটু পর মিম সুমাইয়াকে সাজিয়ে নিয়ে আসে। আমি সুমাইয়ার দিকে হা করে তাকিয়ে আছি।সুমাইয়া একটা নীল কালার শাড়ি পরে। তাকে অপরুপ দেখাচ্ছে। সুমাইয়া এসে তার মার পাশে বসে। তারপর আমাকে শরবত দেয়। আমি হাসানের কানে কানে বললাম।)
আমিঃ হাসান আজকে আমি বিয়ে করবো।
হাসানঃ কি করে?
আমিঃ তুই কাজী আনার ব্যাবস্থা কর।
হাসানঃ আচ্ছা দেখি।তার বাবাকে বলে।
আমিঃ দেখ।
হাসানঃ আংকেল আসলে আনাস চাচ্ছে।
আজকেই বিয়েটা হয়ে যেতে।
বাবাঃ আজকে কেনো?
আমিঃ আংকেল আপনারাতো জানেনই শুভ কাজে দেরি নাই।
মাঃ অসুবিধা কি আজকে যেহেতু তুমি বলছো তাহলে আমি বলি আজকেই হোক।
আমিঃ আমিই তাই বলি।
হাসানঃ আমি-ই তাই বলি।
মিমঃ দেখ সুমাইয়া কি বলে?
বাবাঃ সুমাইয়া আজকে তকে বিয়ে করতে চাচ্ছে। তুই কিছু বলবি?
সুমাইয়াঃ আসলে আমি আনাসের সাথে কথা বলতে চাই।
হাসানঃ কেন নয়? যাও
(আমি আর সুমাইয়া একটা রুমে গেলাম।গেলে সুমাইয়া বলল)
সুমাইয়াঃ তোমার কি হইছে আজকেই কেনো বিয়ে করতে চাচ্ছো?
আমিঃ কেনো তোমার কোনো সমস্যা?
সুমাইয়াঃ না।
আমিঃ তাহলে।
সুমাইয়াঃ কৌতুহল বসতো।
আমিঃ শুন এখন আমি তোমাকে দেখতে এসেছি। এখন আমি তোমাকে দেখে বলবো তোমাকে পছন্দ হইছে। তারপর বিয়ের তারিখ ঠিক হবে। কখন ১-২ মাস পর। আমি এতোদিন অপেক্ষা করতে করতে চাইনা।
সুমাইয়াঃ কেনো?
আমিঃ কারণ তোমাকে আমি আজ নতুন রুপে দেখছি।
সুমাইয়াঃ তারপর এটা নিয়ে মানুষ কথা তুলবে না তোমার আত্মীয় স্বজন।
আমিঃ হুম।
সুমাইয়াঃ তাহলে কি করে?
(আমি চিন্তায় পরে গেলাম। সুমাইয়ার কথাতো ঠিক। আত্বীয় স্বজন কী বলবে।
তাদের না জানিয়ে বিয়ে করলে।দাওয়াত না দিলে। নাহ সম্ভব না।)
আমিঃ তুমি ঠিকই বলেছো।
সুমাইয়াঃ তাহলে এখন।
আমিঃ যেভাবে হওয়ার কথা সে ভাবেই হবে।
সুমাইয়াঃ কতদিন।
আমিঃ দেখি কতদিন করা যায়।
(সুমাইয়া আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে।)
সুমাইয়াঃ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করো।
আমিঃ হুম।
সুমাইয়াঃ তোমার জন্য একটা চাকরির ব্যাবস্থা করছি।
আমিঃ কোথায়? কি বলো সত্যি
সুমাইয়াঃ হুম সত্যি।
আমি আস্তে আস্তে সুমাইয়াকে ছেড়ে দেই।
আমিঃ কোন যায়গায় খুলে বলো।
সুমাইয়াঃ আমার এক ক্লোজ বান্ধবী এক কোম্পানির ম্যানেজার। দুদিন আগে তার সাথে কথা হয়।আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম। তার অফিসে কোনো পোস্ট খালি আছে নি। সে বলল আছে তারপর আমি তোমার CVটা তাকে দিই।তারপর আজ সকালে সে কনফার্ম করে। চাকরি হয়ে গেছে। বলছে আগামীকাল থেকে জয়েন দিতে।
আমিঃ তোমাকে কি বলে যে ধন্যবাদ দিবো। ধন্যবাদ
সুমাইয়াঃ ধন্যবাদ দিতে হবে না। এটা আমি তোমার জন্য এমনিই করতাম।
আমিঃ ওকে চলো সেখানে যাই
আমরা সেখানে দুজনে গেলাম।গিয়ে আমি বললাম
আমিঃ আজকে বিয়ে হবে না। যেভাবে হওয়ার কথা সে ভাবেই হবে।
বাবাঃ ওকে তুমি তাহলে কবে বলো?
আমিঃ আংকেল এক সপ্তাহ পরে দিলে।
বাবাঃ এতো তাড়াতাড়ি সম্ভব?
আমিঃ তাহলে আপনিই বলেন।
বাবাঃ এক সপ্তাহের যায়গায় দুই সপ্তাহ দিলে ভালো হবে।
আমিঃ ওকে।
(আমি পরের দিন অফিসে গিয়ে জয়েন করি। এভাবে দুই সপ্তাহ চলে যায়। আগামীকাল আমার আর সুমাইয়ার বিবাহ। আমার ঢাকার আত্মীয় স্বজন ও গ্রামের বাড়ির আত্নীয় স্বজনকে বন্ধু বান্ধব সবাইকে দাওয়াত দেই।খালি দুজন বাঁধে। সেই দু'জন হলো আমার বাবা মা।
আজ বাবা মার কথা অনেক মনে পড়ছে।
মনে মনে আজ তোমারা দু'জন থাকলে কতই না আনন্দ হতো।কতই না ভালো লাগলো।হে আল্লাহ পৃথিবীতে এতো বাবা মা থাকতে তুমি আমার বাবা মাকে নিয়ে নিলে কেনো?। আমি বিকালে বেলা কবরস্থানে যাই।বাড়িতে অনেক মানুষ।
আমি আসরের নামাজ পড়ে বাবা মার কবরের কাছে যাই। গিয়ে তাদের জন্য দোয়া করি। তারপর সন্ধ্যা বেলা বাড়ি ফিরে আসি। আমার মন একটুও ভালো না। মিম আমার মুখ দেখে জিজ্ঞেস করলো।)
মিমঃ ভাই তকে কেমন বিষন্ন দেখাচ্ছে?
আমিঃ হুম। মা বাবার কথা মনে পড়ছে। তাই এমন দেখাচ্ছে।
(মিম মা আর বাবার কথা কথা শুনে কেদে। অনেক জুড়ে জুড়ে কাঁদতে থাকে। আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। মিম বলে)
মিমঃ মা আর বাবা থাকলে কতই না আনন্দ হতো। হে আল্লাহ আমার বাবা কি দোষ করছিলো তুমি তাদের দুনিয়া থেকে ওঠিয়া নিলা।
(আমি মিমকে জড়িয়ে ধরে শান্তনা দিতে থাকি। একটু জাকিয়া আসে।)
জাকিয়াঃ মা মামা তোমারা কাঁদছো কেনো?
মিমঃ তোমার নানা-নানীর জন্য।
জাঁকিয়াঃ নানা নানিনা মারা গেছে।
আমিঃ হুম তার জন্যই। আসো কোলে আসো।
(আমি জাকিয়াকে কোলে করে সাদে নিয়ে যাই। সাদে জাকিয়ার কিছুক্ষন পাকনা কথা শুনে আমি হাসতে লাগলাম।
সুমাইয়া ফোন দেয় ভিডিও কলে। আমি কিছুক্ষন সুমাইয়ার সাথে কথা বলি। রাতের বেলা গায়ে হলুদ দেয়। আমাদের বিয়ে হয় কমিউনিটি সেন্টারে। সুন্দর করে আমাদের বিয়ে সম্পুর্ন হয়। আমি একটুও পর বাসর ঘরে ঢুকবো। আমি বাইরে হাটাহাটি করে বাসর ঘরে ঢুকলাম।
দেখি সুমাইয়া ঘোমটা দিয়ে বসে আছে। আমি গিয়ে ঘোমটা ওঠাই।)
সুমাইয়াঃ এতো দেরি করলা কেনো?
আমিঃ কোথায়?
সুমাইয়াঃ আচ্ছা আনাস তুমি আমাকে কতটুকু ভালোবাসো?
আমিঃ অনেক।শুনো আজ থেকে আমি তোমাকে সংক্ষিপ্ত ভাবে সুমো ডাকবো।
সুমাইয়াঃ ওকে। অনেক গরম করছে গয়না গুলো খুলে দেও।
আমিঃ কোথায় গরম?
সুমোঃ যা শয়তান। খুলে দেও।
(আমি আস্তে আস্তে সুমাইয়ার গয়না গুলো খুলে দেই। আমার হাতের স্পর্শে সুমাইয়ার কি জানি হয়।আমার মাথা ধরে ঠোঁটের সাথে ঠোঁট লাগিয়ে দেয়।অনেকক্ষন পরে ছাড়ে। ছাড়লে আমিও .............।
(এর অনেকদিন পর একদিন অফিস থেকে এসে বললাম)
আমিঃ সুমো এক গ্লাস ঠান্ডা পানি দিয়ে লেবুর সরবত বানিয়ে দেও।চিনি বাড়িয়ে দিউ।
(সুমো রান্না ঘর থেকে এসে বলল)
সুমোঃ কেনো? তুমি না ঠান্ডা পানি খাওনা। চিনিও না খাওয়া না।
আমিঃ আরে ঐসময়তো তোমাকে পটানোর জন্য করছিলাম।
সুমোঃ যা শয়তান।
(সুমো এসে আমাকে বালিস দিয়ে মারতে থাকে। আমি বালিস ধরে তাকে কাছে এনে। ঠোঁটের ভিতর ঠোঁট লাগিয়ে দেই।
৪ মিনিট পর ছেড়ে বললাম।)
আমিঃ এবার হবে।
সুমোঃ হুম হবে।
(সুমো রান্না ঘরে চলে যায় সরবত আনতে।)
..................সমাপ্ত...................
গল্পটা কেমন লাগলো কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দেন। আর প্লিজ হ্যাপি রেটিং দিবেন। এরকম ভালো ভালো রোমান্টিক গল্প পেতে এই পেজে লাইক করুন।
ধন্যবাদ।
ককেশাসের মেয়েঃ এখানে এটা দ্বারা বোঝানো হচ্ছে। আমরা অনেকেই জানি বিখ্যাত মুজাহিদ ইমাম শামিলের দেশ ছিলো এই ককেশাস। তখনকার যুগে এবং তারও আগে আব্বাসিয়া খেলাফত। ওসমানীও খেলাফতের যুগে পুরো পৃথিবী জুড়ে নাম ছিলো এই ককেশাসের মেয়েদের নাম ছিলো রুপের জন্য । সে সময় তাদের রুপের জন্য তারা পৃথিবী বিখ্যাত ছিলো। লেখক সে জন্য এখানে ককেশাসের মেয়ে ব্যাবহার করেছে।
আর যারা যারা এই গল্পটা পরবেন তাদেরকে এই পেজে আরেকটা গল্প আছে "সিক্রেট মিশন " এই গল্পটা পরার অনুরোধ রইলো।
Nice 👍👍👍👍
ReplyDelete