পার্ট: ২৩ বা অন্তিম পর্ব,,,
লেখক-আকাশ খান
**আমি রাত্রির রুমে গিয়ে খাটের ওপর বসে আছি।কারণ রাত্রি তার আম্মুর সাথে কী যেন করছে।একটু পরে রাত্রি রুমে আসে। আর রাত্রি রুমে এসে আমাকে বলল,,,
রাত্রি : এই যে স্যার আসেন আগে কিছু খেয়ে নেন।তারপর না হয় পড়ব,,,
আমি : না এখন কিছু খাব না,,তুমি এখন পড়তে বস,,
রাত্রি : আচ্ছা ঠিক আছে পড়া শেষ খাওয়া দাওয়া করবে,,,
**বলেই রাত্রি বই নিয়ে পড়তে বসল।আমি রাত্রিকে কিছু পড়া দেখিয়ে দিছি আর রাত্রি সেগুলো চুপচাপ করতে লাগল,,,,।এখন আমি ভাবছি যে রাত্রি এত ভাল হল কবে থেকে এতদিন পর আমাকে রুমে একা পেয়ে কিছু না করে পড়তে বসল।বেপারটা আমার কাছে তেমন হজম হচ্ছে না।এভাবে রাত্রি প্রায় ৪০মিনিট টানা পড়ে। রাত্রি তার পড়াগুলো শেষ করে আমাকে দেখতে দিল।আমি মাথা নিচু করে রাত্রির খাতা দেখছি তখন রাত্রি আমাকে বলল,,,
রাত্রি : এই আবির শুনছ,,,(খুব আল্লাদি সুরে বলল)
আমি : হুম বল শুনছি(খাতা দেখতে দেখতে বললাম)
রাত্রি : আমার খুব বাসর করতে ইচ্ছে হচ্ছে।চলনা করে ফেলি,,,(রাত্রি তার নিজের চেয়ার থেকে ওঠে এসে আমার কুলে বসে কথাটা বলল)
আমি : রাত্রি এসব চিন্তা এখন মাথায় আনবে না। সামনে পরীক্ষা, আর পরীক্ষা শেষ হলে সব হবে(রাত্রির গাল টেনে বলাম)
রাত্রি : কিন্তু এখন আমার আদর লাগবে,,আর আমি এখনি তা আদায় করব,,,
**বলেই রাত্রি আমাকে টেনে নিয়ে বিছানায় সুয়িয়ে দেয়।আর নিজে আমার ওপর সুয়ে আমাকে শক্ত করে জরিয়ে দরে চার ঠোট এক করে দিল।আর আমিও রাত্রিকে জড়িয়ে ধরে ওর সাথে তাল মিলিয়ে আদর করতে থাকি।আমরা দুজন যখন একে অপরকে আদর করায় ব্যস্ত এর কিছুক্ষণ পরিই রাত্রির বোন আলো এসে দরজার নক করতে থাকে।তখন রাত্রি আমাকে ছেড়ে ওঠে যায়।আর নিজেকে একটু ঠিক করে দরজা খুলে দেয়।তখন আলো রুমে এসে একটা হাসি দিয়ে বলল,,,
আলো : দুলাভাই আপনাদের পড়া শেষ হলে এবার খেতে আসেন।আম্মু ডাকছে,,, (হেসে হেসে বলল)
আমি : আচ্ছা তুমি যাও আমরা আসছি,,,(হেসে বললাম)
**আমার কথা শুনে আলো হাসতে হাসতে রুম থেকে বেরিয়ে গেল।তখন রাত্রি আবার বলল,,,,
রাত্রি : ধূর, শান্তিতে একটু মন ভরে আদরও করতে পারি না,,খালি এসে বিরক্ত করে(মুখটা মলিন করে বলল)
আমি : হুম তুমার তো সারারাত আদর করলেও মন ভরবে না,, শুধু শুধু অন্যকে দোষ দাও কেন(হেসে বললাম)
রাত্রি : ঐ ঐ কী বললা তুমি। আবার বলত শুনি(রেগে গিয়ে বলল)
আমি : আমি কিছু বলি নি,,
**বলেই আমি রুম থেকে বেরিয়ে আসি।কারণ আমি জানি এখন এখানে থাকলে রাত্রি আমাকে খবর করে ছেরে দিবে।তাই চলে যাওয়াই মঙ্গল,,,।আমি ডাইনিং রুমে আসতেই রাত্রিও আমার পিছন পিছন চলে আসে।তারপর আমার দিকে একটা রাগি লুক দিয়ে চলে যায় ওর আম্মু কাছে।পরে সবার সাথে রাতে ডিনার করে, কিছুখন কথাবার্তা বলে বাসার উদ্দেশ্য বেরিয়ে পরি।এর মাঝে রাত্রি কয়েকবার চোখে ইসারায় বলে তার সাথে রুমে যেতে কিন্তু আমি বুঝেও না বুঝার ভান ধরে ছিলাম। কারণ আমি জানি এখন গেলে রাত্রি আর আমাকে রাতে বাসায় যেতে দিবে না।তাই আমি সেখান বেরিয়ে আসি।
**রাত্রিদের এখান থেকে বাসায় এসে সুজা নিজের রুমে চলে যাই।আম্মু অবশ্য খাওয়ার জন্য ডাকছে কিন্তু না করে দেই।পরে রুমে এসে রাত্রির সাথে কিছুখন ফোনে কথা বলে ঘুমিয়ে পড়ি।
**আর এভাবেই দেখতে দেখতে রাত্রির পরীক্ষা একদম কাছে চলে আসে।আর মাত্র দুই দিন পরে রাত্রির পরীক্ষা শুরু হবে।আর আজকে রাত্রিদের কলেজ থেকে বিদায় দেওয়া হব।তাই কলেজে আজকে একটা অনুষ্ঠান করা হইছে।আমি আজকে সকালে একটু তারাতারি কলেজে চলে যাই।কারণ আমার ওপর আজকে সকল কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।তাই আমি কলেজে গিয়ে সব কিছু দেখাশুনা করছি সব কিছু ঠিক ঠাক আছে কী না।
**আমি কলেজের মাঠে দাড়িয়ে চার পাশটা লক্ষ করে দেখছি আর এদিকে সকল শিক্ষার্থী আর গেস্টরা এক এক করে কলেজে আসা শুরু করছে।তখন দেখি রাত্রিও ওর বান্ধুবীদের সাথে কলেজে আসছে।তবে রাত্রি আজকে একটা কালো শাড়ি পরে আসছে।আর রাত্রিকে কালো শাড়িতে এত সুন্দর লাগছিল যে অভাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি তার দিকে।রাত্রি আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে আমার সামনে দিয়ে মুসকি হেসে ওর ফ্রেন্ডদের সাথে চলে যায়।তারপর সবাই কলেজে উপস্তিত হলে মুল অনুষ্ঠান শুরু হয়।
**অনুষ্ঠানে রাত্রিদের সবাইকে ফুল দিয়ে বিদায় জানানো হয়।আর এভাবেই পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠানের বাকি কাজ শেষ করে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়। অনুষ্ঠান শেষ হলে আমি স্টেজ এর কাছে দারিয়ে আছি এমন সময় রাত্রির ফ্রেন্ড তয়া এসে আমাকে বলল,,,
তয়া : স্যার,, আপনার সাথে কথা আছে একটু আসবেন,,
আমি : কী কথা এখানেই বল,,,এখন ব্যস্ত আছি কোথাও যেতে পারব না,,,
তয়া : প্লিজ স্যার না করবেন না,, আমরা যারা আপনার কাছে ক্লাস করতাম তারা সবাই আপনার সাথে একটু কথা বলতে চাই(অনুরোধ করে বলল)
আমি : আচ্ছা কোথায় সবাই,,,,
তয়া :স্যার আমরা যেই রুমে পড়তাম সবাই সেখানে আছে,,,,,চলেন স্যার
**আমি আর কিছু না বলে যেতে থাকি ওদের কাছে।তারপর সেখানে গিয়ে দেখি আমি যাদের প্রাইভেট পড়াতাম ওরা সবাই আছে এখানে,,,।তখন তনিমা আমাকে বলল,,,
তনিমা : স্যার আমাদের সবার পক্ষ থেকে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।দোয়া করবেন যাতে সবাই ভালো রিজাল্ট করতে পারি।,,
আমি : হুম তোমাদের সবার জন্য আমার পক্ষ থেকে দোয়া রইল। আর তোমরা ভাল করে মনোযোগ দিয়ে পরীক্ষা দিবে।আর আমি এখন যাই বাহিরে কাজ আছে তুমাদের সাথে পরে কথা হবে,,,,
**বলেই যেই আমি বাহির হতে যাচ্ছি তখন আনিসা আমাকে বলল,,
আনিসা : স্যার আমি আপনাকে কিছু বলতে চাই,,,
আমি পিছন ফিরে বললাম,,,
আমি : কী বলবে তারাতারি বল,,,,
**তখন আনিসা ওর হাতে থাকা ফুল গুলো নিয়ে আমার সামনে হাটু ঘেরে বসে বলল,,,
আনিসা : স্যার আমি আপনাকে ভালবাসি।প্লিজ স্যার আমাকে ফিরিয়ে দিবেন না।আপনি যদি চান তাহলে পরীক্ষার পরেই আমরা বিয়ে করে নিব,,,। I love you sir,,I love you so much,,,,
**কথা গুলা বলেই আনিসা আমাকে জড়িয়ে ধরে।আর আমি আনিসাকে ছাড়াতে যাব তার আগেই কোথায় থেকে যেন রাত্রি এসে আনিসাকে আমার কাছ থেকে ছাড়িয়ে ঠাস ঠাস ঠাস করে তিনটা চড় মারে।তখন রাত্রি বলল,,,,,
রাত্রি : তোর সাহস কী করে হয় আবিরকে প্রপোজ করার।তোকে আমি আগেও না করছি তারপরেও তুই ওকে প্রপোজ করিস কোন সাহসে।(রাগে গরগর করতে করতে বলল)
**তখন আমি রাত্রিকে কিছু বলতে যাব তার আগেই আনিসা বলল,,,
আনিসা : তুই আমার ফ্রেন্ড হয়ে আমাকে মারতে পারলি।আর আমি স্যারকে প্রপোজ করছি তাতে তোর সমস্যা কী। আমি তো দেখি তুই স্যারের সাথে লেগে থাকি। তাহলে তুই পারলে আমি পারব না কেন,,নাকি স্যার তোর একার(রেগে বলল)
রাত্রি : হুম স্যার আমার একার। কারণ আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে আরো তিন মাস আগে,,,তাই তোকে বলছি সব কিছু মাথা থেকে জেরে ফেল।আর পরীক্ষার পড়ে আমাদের বিয়ের অনুষ্ঠান করা হবে তখন এসে খেয়ে যাস,,,,,
**বলেই রাত্রি আমাকে সেখান থেকে হাত ধরে টেনে নিয়ে বাহিরে চলে আসে।আর আমাকে রাগে ফুসফুস করে বলল,,,,,
রাত্রি : ঐ তুমাকে আনিসার কাছে যেতে মানা করছি তাহলে গেলে কেনো।
আমি : আরে আমি কী জানতাম নাকি যে ওরা আমাকে ডেকে নিয়ে এসব বলবে।তাহলে কী আমি আর যেতাম।আর এখনতো তুমি বিয়ের কথা বলেই দিছ তাহলে এখন প্রবলেম হবে না।কিন্তু জানলে কেমন করে যে আমি এখানে,,,,,
রাত্রি : তুমি আমাকে দেখে না রাখলেও আমি তুমাকে ঠিকি চোখে চোখে রাখি।তুমাকে যখন তয়া ডেকে আনছিল তখন আমি দেখি।আর তুমাদের পিছন পিছন এসে সব শুনি,,,,,বুঝলে তুমি(নাক টেনে বলল)
আমি : আচ্ছা ঠিক আছে তুমি এখন বাসায় যাও। রাতে কথা হবে তুমার সাথে আর আমার একটু কাজ আছে তাই দেরি হবে,,,,
**তারপর রাত্রিকে একটা রিক্সায় ওঠিয়ে দিয়ে আমি কলেজে এসে আমার বাকি কাজ গুলো শেষ করি।কাজ শেষ করে বাসায় যেতে যেতে প্রায় রাত হয়ে যায়।তারপর বাসায় গিয়ে ফ্রেস হয়ে খাওয়া দাওয়া করে রুমে গিয়ে রাত্রির সাথে কথা বলে ঘুমিয়ে পড়ি।
**আজ দুই দিন পরে রাত্রির পরীক্ষা শুরু হয়। আর এখন আমার কাজ হচ্ছে রাত্রি কে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়া আবার ফিরে আসা।আর এভাবেই এক এক করে রাত্রির সব গুলা পরীক্ষা শেষ হয়ে যায়।
পরীক্ষার কিছুদিন পর,,,,
**আজকে আমার আর রাত্রির আনুষ্ঠানিক ভাবে আবার বিয়ে হল হচ্ছে। আমাদের বিয়ের আয়োজনটা অনেক বড় করেই হয়।সারাদিনের আনুষ্ঠানিক সব কিছু শেষ করে সন্ধ্যা রাত্রিকে নিয়ে আমাদের বাসায় চলে আসি।বাসায় আসলে আম্মু চাচি সবাই মিলে রাত্রিকে বরণ করে ঘরে তুলে নেয়।তারপর বাসায় বিয়ের বিভিন্ন নিয়ম কানুন শেষ করে বাসর ঘরে যেতে যেতে প্রায় রাত একটা বেজে যায়।
**আমি বাসর ঘরে ডুকতেই রাত্রি খাট থেকে নেমে এসে আমার পা ছুয়ে সালাম করে।পরে দুজনে মিলে দুরাকাত নফল নামাজ আদায় করে দুজনে খাটে গিয়ে বসলাম,।তখন আমি বললাম,,,,
আমি : তা মিস রাত্রি এতকিছু করে আপনি আমাকে নিজের করেই ছাড়লেন,,,,,(হেসে বললাম)
রাত্রি : এই যে শুধু ভালবাসলেই হয় না,,,কিভাবে ভালবাসা কে নিজের করে নিতে হয় সেটাও জানতে হয়।
**তখন রাত্রিকে একটু রাগানোর জন্য বললাম,,,
আমি : আচ্ছা যা হইছে ভালো হইছে।এখন আমি ঘুমাবো খুব ক্লান্ত লাগছে তুমিও ঘুমাও,,,,,
**আমি এ কথা বলার সাথে সাথে রাত্রি আমাকে ধাক্কা মেরে খাটে সুয়িয়ে দিয়ে আমার পেটে ওপর চড়ে বসে।আর আমাকে বলল,,,
রাত্রি : আর একবার ঘুমানোর কথা বললে তুমার চোখ আমি তুলে নিব,,,অনেক অপেক্ষা করছি কিন্তু আর না। আজ সবকিছু আদায় করে নিব।এখন কথা না বলে কাজ শুরু কর,,,,(মুখের মুখ এনে বলল)
আমি : আমি কোন কাজ করতে পারব না,,, এখন ঘুমাও(মুসকি হেসে বললাম)
রাত্রি : থাক তুমাকে কিছু করতে হবে না,,যা করার আমি করছি।আজকে মনের আসা পুরণ করে ছাড়ব,,,
**বলেই রাত্রি আমার ওপর হামলা শুরু করছে,,,এই যে এই হামলার বিস্তারিত বলতে পারব না।ডোনাল ট্রাম্পের নিষধ আছে,,,তাই আজকের মত টাটা,,,
আলবিদা