গল্পঃ পাশের বাড়ির বড় আপু পার্ট: ০৮ | Pasher Barir Boro Apu Part 08

গল্পঃ পাশের বাড়ির বড় আপু পার্ট: ০৮ | Pasher Barir Boro Apu Part 08

#নাম: পাশের বাড়ির বড় আপু
#লেখক: Osman
#পার্ট: ৮ 

__এই বলে সুবর্ণা আমার হাত ধরে টান দিয়ে। একেবারে নিজের কাছে নিয়ে। নিজের গোলাপী ঠোট দূইটা আমার ঠোঁটে লাগিয়ে দিলো ।‌ ছাড়তাছে না । ৩০ সেকেন্ড পড়ে ছাড়লো। এমন পরিস্থিতিতে আমি কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। সুবর্ণা এটা কি করলো আমি এটা মেনে নিতে পারছিনা। আমি বললাম

আমি: এটা কি করলেন। পাগল নাকি?

সুবর্ণা: পাগল হতে যাবো কেনো? 

আমি: তো এটা কি করলেন?

সুবর্ণা: যাতে তর উপর কেউ অধিকার খাটাতে না আসে সেজন্য আমি সেই অধিকার নিয়ে নিলাম। 

আমি: বললেই হলো। 

__আমার মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে। সুবর্ণার এমন কাজ আমি কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছি না। বড় বলে সম্মান করি কিন্তু তাই‌ বলে এমন কাজ করবে। আমার মাথা গরম হলে কি জানি কি বলে ফেলি তার কোনো ঠিক ঠিকানা থাকে না।

সুবর্ণা: তো।

আমি: চুপ একদম চুপ। লুচ্চা মেয়ে নিলয় ভাই আপনাকে খেয়ে ছেড়ে দিয়েছে। দেখছি না ছাদের মধ্যে আপনাদের কীর্তি কলাপ। বয়স্ক বুড়ি মেয়ে ।
এখন আসছে আমার উপর অধিকার খাটাতে। আপনাদের মতো বেহায়া মেয়েদের আমি দুই চক্ষে দেখতে পারিনা। আমার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে আপনি এমন কাজ কি করতে পারলেন। যত্তসব ফালতু মেয়ে। আর জীবনেও আমার ধারে কাছে আসবেন না।

সুবর্ণা: কি আমি লুচ্চা মেয়ে? বয়স্ক বুড়ি। নিলয় আমাকে খেয়ে দিছে। ছিঃ ছিঃ সাকিব ছিঃ তকে আমি ভালো ভাবছিলাম ।

আমি: আপনি তো সবাইকে ভালো ভাবেন। নিলয় ভাইকে ভালো ভাবছিলেন না । দেখছেন কিভাবে আপনাকে খেয়ে ছেড়ে দিয়েছে। আমারতো মনে হচ্ছে আপনার পেটে....

_ঠাস ঠাস  করে দুইটা চড় দিলো। আমার গালে। 
বলল

সুবর্ণা: চুপ কুত্তা চুপ। আর একটা কথা বললে। তকে আমি খুন করে ফেলবো। 

আমি: মারেন আমাকে আরো মারেন। ঠিকি আছে নিলয় ভাই আপনাকে ছেড়ে দিয়েছে। আপনার মতো মেয়েদের এমন হওয়া উচিত। 

সুবর্ণা: চুপ কোনো কথা বলবি না।
 
এই বলে সুবর্ণা জুড়ে জুড়ে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলো। আমার যেনো কি হয়ে গেছে?আমার মাথা ঠিক মতো কাজ করছেনা। 

আমি: প্লিজ আপু আমাকে ছেড়ে দেন। আমাকে আর জালায়েন না। আমরা এই মাসের মধ্যে আব্বাকে বলে বাসা ছেড়ে দেয়ার চেষ্টা করতাছি। প্লিজ আল্লাহর দোহাই লাগে । আমাকে আর জালায়য়েন না। 

__এই বলে আমি চলে আসলাম। আমার মাথায় রক্ত উঠে গেছে । কি কি জানি বলছিলাম সেটাই এখন খেয়াল আসছে না। বাসায় এসে দরজা বন্ধ করে শুয়ে পড়লাম।

__সাকিব যাওয়ার পর সুবর্ণা সেখানে দাঁড়িয়ে রইলো। সুবর্ণার মাথা ঠিক মতো কাজ করছেনা। কি সব ভাষা বলছে সাকিব। সাকিব এতো নোংরা কথা বলতে পারে সুবর্ণা আগে জানতো না। এর বিচার সুবর্ণা করবেই। সুবর্ণা সেখানে দাঁড়িয়ে কাঁদতে লাগলো। চোখ মুছে বাড়ির দিকে হাঁটা ধরলো । বাসায় এসে সুবর্ণা কোনো কথা না বলে শুয়ে পড়লো। শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলো সাকিব এতো নিচে নামতে পারে । নিলয় তো সুবর্ণাকে এতো নোংরা কথা বলেনি। সাকিব কে এর শিক্ষা দিতেই হবে। সুবর্ণা এমন কি করছে ? শুধু একটা কিস ওইতো করলো । আর কিস তো প্রত্যেক ছেলেই পছন্দ করে। সকল ছেলেরাই তো চায় তার প্রিয়জনের কাছ থেকে। সাকিব‌ হয়তো এসবের সাথে প্রথম তাই মেনে নিতে পারেনি। আর আমারই সব ভুল আমি বেশি তাড়াহুড়ো করে ফেলেছি । কিন্তু সাকিব যে কথাগুলো বলল। তা কখনো মেনে নেবার মতো না। তার জন্য সাকিবকে কখনো ক্ষমা করতে পারবে না। এর শিক্ষা সাকিব কে দিতেই হবে। কিন্তু কিভাবে। সুবর্ণা একটা বুদ্ধি বের করলো । সাকিব কে কোনো কিছু না জানিয়ে ডাইরেক্ট সাকিবকে বিয়ে করে ফেলা। তার জন্য সবার আগে সাকিবের বাবা মার পারমিশন নিতে হবে । সুবর্ণার টাকা পয়সার কোনো অভাব নেই। যতো টাকা দাবি করে তত টাকা দিতে পারবে। জায়গা জমিন সব আছে সুবর্ণার শুধু নেই একটা মনের মতো মানুষ। যাকে সে নিজের মতো করে রাখতে পারবে । নিজের রাগ অভিমান দুঃখ কষ্ট বলতে পারবে। এসব ভাবতে ভাবতে সুবর্ণা ঘুমিয়ে পড়লো। পরদিন নিলয় কুত্তার বিয়ে। এজন্য সেদিন সুবর্ণা বাসা থেকে বের হয়নি। দুই দিন পর সকালে খেয়াল করে দেখলো কখন সাকিব কলেজে যায়। সাকিব কলেজে যাওয়ার পর সুবর্ণা চলে গেলো তাদের ফ্ল্যাটে । সুবর্ণা সাকিবের বাসায় গিয়ে নক করলো। 

__সাকিবের মা এসে দরজা খুললো সুবর্ণা বলল

সুবর্ণা: আন্টি কেমন আছেন?

সাকিবের মা: আরে সুবর্ণানা কেমন আছো তুমি। ভিতরে আসো।

সুবর্ণা,: জী আন্টি ভালো আপনি।

সাকিবের মা: আলহামদুলিল্লাহ ভালো। ভিতরে আসো ভিতরে আসো

সুবর্ণা ভিতরে গেলো। দেখলো সাকিবের মা সবজি কাটতেছে সুবর্ণা বলল।

সুবর্ণা: আন্টি দেন আমি কাটি। আপনি বসেন।

সাকিবের মা: আরে তুমি কেনো কাটতে যাবে। তুমি মেহমান আসছো বসো ।

সুবর্ণা: আন্টি মেহমান বলে লজ্জা দিয়েন না। আর আমি সকালে অবসর থাকি।

সাকিবের মা: তুমি না ব্যাংকে চাকরি করো।

সুবর্ণা: আজকে ভালো লাগছিলো না তাই ব্যাংক থেকে জন্য ছুটি নিয়েছি।

সাকিবের মা: কেনো কি হয়েছে ? শরীর খারাপ । 

সুবর্ণা: জী না আন্টি মনটা ভালো না। 

সাকিবের মা: বুঝেছি নিলয়ের জন্য মন খারাপ হচ্ছে। 

সুবর্ণা: আন্টি প্লিজ ঐ কুত্তার নাম মুখে আনবেন না। ও আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে। জীবনেও আমি তাকে ক্ষমা করবো না।

সাকিবের মা: থাক না । ক্ষমা করে দেও। হয়তো তোমার জন্য নিলয়ের থেকে ভালো কেও অপেক্ষা করছে। 

সুবর্ণা: আন্টি তাই যেনো হয়। 

সাকিবের মা: তোমাকে কি কোনো ছেলে দেখতে আসছে?

সুবর্ণা: এক সময় অনেক প্রস্তাব আসতো । কিন্তু নিলয়ের জন্য সবাইকে না করে দিয়েছি। এখন যেহেতু বয়স বেশি হয়ে গেছে । তাই কেউ আর দেখতে আসছে না। কারণ সবাই চায় কম বয়সি মেয়ে বিয়ে করতে। 

সাকিবের মা: এখন তুমি কি করবা? এভাবেই সারাজীবন পড়ে থাকবা‌ ।

সুবর্ণা: না আব্বা আমাকে এক মাসের সময় দিয়েছে। নিজের পছন্দের ছেলে খুঁজে বের করতে । 
এক মাস পরে আব্বার পছন্দে আমাকে বিয়ে করতে হবে।( বললো মনটা খারাপ করে)

সাকিবের মা: আরে মন খারাপ করার কি আছে? দেখো আল্লাহ তোমাকে উত্তম সঙ্গী দান করবেন। 

সুবর্ণা: তাই যেনো হয়। 

__সবজি কেটে সাকিবের মাকে রান্নার কাজে হেল্প করলো সুবর্ণা। দুপুরের দিকে সুবর্ণা বাসায় চলে আসলো। পরদিন ব্যাংক থেকে এসে বিকালের দিকে আবার সাকিবের বাসায় গেলো সুবর্ণা। গিয়ে দরজায় নক করলো। দেখে সাকিব এসে দরজা খুলল ‌। অনেকটা অবাক হয়ে সাকিব বলল

সাকিব: আপনি এখানে কেনো আসছেন কেনো?

সুবর্ণা: আমি তর কাছে আসছি? আমি আসছি তর মার কাছে ।

সাকিব: আমার মার সাথে কি কাজ? আমাকে বলেন।

সুবর্ণা: সে সব জেনে তর কি লাভ? সর সামনে থেকে।

সাকিব: আবার কি পেচ লাগাতে আসছেন?

সুবর্ণা: সরবি নাকি তর মাকে ডাক দিবো।  

সাকিব: মা অসুস্থ। কথা বলতে পারবে না। এখন চলে যান। 

সুবর্ণা: সর বলতাছি।

সাকিব: না । 

__এই বলে সুবর্না সাকিব কে ধাক্কা দিয়ে ঘরে ঢুকে। সাকিবের মুখের দিকে তাকিয়ে একটা ভেংচি মেরে। সাকিবের মার কাছে চলে আসলো। সাকিব সেখানে ঠাঁই দাঁড়িয়ে রইলো। সুবর্ণা সাকিবের মাকে ডাক দিলো।

সুবর্ণা: আন্টি আপনার বলে শরীর ভালো না। 

আন্টি: সুবর্ণা মা তুমি আসছো?  গতকাল রাত থেকে শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। 

সুবর্ণা: কি হয়েছে?

আন্টি: মনে হয় জড় আসছে। 

__সুবর্ণা সাকিবের মার কপালে ধরে তাপমাত্রা চেক করে বললো।

সুবর্ণা: আপনার তো অনেক জড় । ঔষধ খেয়েছেন। 

আন্টি: না । সাকিবের আব্বা আসার সময় নিয়ে আসবে। 

সুবর্ণা: আংকেল কখন আসবেন। 

আন্টি: রাতে। ।

সুবর্ণা: এতক্ষন অপেক্ষা করবেন। দাঁড়ান আমি সাকিবকে পাঠাচ্ছি ঔষধ আনতে। 

আন্টি: তুমি কেনো শুধু শুধু কষ্ট করতে যাবে। 

সুবর্ণা: আন্টি এখন ঔষধ না খেলে । জড় আরো বাড়বে। 

__এই বলে সুবর্ণা সাকিবের রুমে আসলো। এসে সাকিবের রুমে টোকা দিলো ভিতর থেকে বললো ..আসেন। দেখে সাকিব ট্রাউজার আর জার্সি পড়ে রেডি হচ্ছে ।সুবর্ণাকে দেখে চুপ চাপ দাঁড়িয়ে পড়লো বলল।

সাকিব: আপনি এখানে কেনো?

সুবর্ণা: কোথায় যাওয়া হচ্ছে?

সাকিব: ফুটবল খেলবো?

সুবর্ণা: কোথায়?

সাকিব: ঐ সামনে একটা মাঠ আছেনা ঐখানে আমার বন্ধু সামিদের সাথে। 

সুবর্ণা: ঐখানের পোলাপান কিন্তু ভালো না। 

সাকিব: সেই চিন্তা আপনাকে করতে হবে না। আর আপনি আমাদের বাসায় কি করেন?আপনার মতলবতো ভালো ঠেকছে না।

সুবর্ণা: তর মার শরীরে অনেক জড়। আমি কয়টা ঔষধের নাম বলছি । এই ঔষধ গুলো কিনে দিয়ে। যা। 

সাকিব: বলেন নাম বলেন। 

সুবর্ণা ঔষধের নাম বলল। সাকিব সেগুলো নোট করলো মোবাইলে। সুবর্ণা বললো ।

সুবর্ণা: আর আশার সময় একটা সুপ নিয়ে আসিছ। 
মরিয়ম কোথায়?

সাকিব: মনে হয় ছাদে গিয়েছে খেলতে?

সুবর্ণা: ওকে যা। এই ঔষধ গুলো নিয়ে আস। এগুলো দিয়ে তারপর খেলতে যা।

সাকিব: ওকে। 

__এই বলে সাকিব চলে গেলো। কিছুক্ষণ পর ঔষধ আর সুপ নিয়ে আসলো সাকিব। সাকিব বললো।

সাকিব: আপনি এতো ভালো হলেন কবে। আমারতো বিশ্বাস হচ্ছে না। নিশ্চয় আপনার কোনো কুমতলব আছে। 
সুবর্ণা: আমিতো সব সময় ভালোই ছিলাম। তুই শুধু আমাকে বুঝলি না। তুই না বলে খেলতে যাবি যা।পারলে মরিয়মকে ডাক দিয়ে যা।

__এই বলে সুবর্ণা দরজা লাগিয়ে দিলো। সুবর্ণা প্রথমে সুপটা রান্না করলো । রান্না করে সাকিবের মাকে খাইয়ে দিলো । তারপর ঔষধ খাওয়ালো। সুবর্ণা বলল।

সুবর্ণা: আজ যদি আপনার ছেলের বউ থাকতো। তাহলে আপনার এতো কষ্ট করতে হতো না। 

চলবে...

পাঠক-পাঠিকারা আমরা তোমাদের জন্য গল্প লেখি।
গল্পের এক পার্ট লেখতে আমাদের ২-৩ ঘন্টা চলে যায় । আর তোমাদের একটা রিয়েক্ট দিতে এক সেকেন্ড লাগবে। তাই কেউ রিয়েক্ট না দিয়ে যাবেন না। আর ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।
ভুল ক্রটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

1 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post