#অথবা: পাশের বাড়ির বড় আপু যখন বউ
#পার্ট: ২
#লেখক: Osman
সুবর্ণা: যেখানে চাস । তাড়াতাড়ি আসিস । আর ফোন দিলে ফোন ধরিস।
আমি: না ধরবো না।
সুবর্ণা: সাকিব 🤬।
__এই বলে আমি ঘর থেকে বের হয়ে বাইরে চলে আসলাম। বাইরে এসে আমি সিগারেট ধরাইলাম। ধরিয়ে এক জায়গায় বসলাম। বসে বসে ভাবতাছি সুবর্ণার সাথে যা করছি তা কি ঠিক করতেছি? অব্যশই ঠিক করতেছি । তার সবচেয়ে বড় কারণ হলো আমাকে না বলে না জানিয়ে হুট করে বিয়ে করে ফেলা । এটা আবার কোন ধরনের ফাজলামো আমাকে তো অন্তত একটি বার জিজ্ঞেস করতে পারতো । আর মা আব্বা কি করে আমাকে বিয়ে এই মেয়ের সাথে বিয়ে দিতে পারলো। সুবর্ণার বয়স বেশি অবশ্য সেটা কোনো প্রোবলেম না। কারণ এক হিসাবে আমার আপুদের ভালো লাগে । কিন্তু সুবর্ণাকে কেনো জানি আমার মন মেনে নিতে পারছে না। তার কোনো কারণ আমি খুঁজে পাচ্ছি না। সেকি আসলেই অনেক জ্বালাতন করে। সেটা পরে দেখা যাবে । আমি যেভাবে বলি সুবর্ণা কী সেভাবে চলবে?
আর সেতো ব্যাংকে চাকরি করে । সেখানে কতো মানুষের সাথে কথা হয় কতো মানুষের সাথে দেখা হয়। সবার মন মানসিকতা কি এক?আমি বললেই কি সে ব্যাংক থেকে চাকরি ছেড়ে দিবে? আর আমারতো কোনো ইনকাম নেই। কিভাবে কী? এখন কেনো যে আব্বা মা আমার উপর এতোবড় একটা বুঝা দিয়ে দিলো। আচ্ছা সুবর্ণা চলে গেলে কি সব আবার আগের মতো হবে। আবার আগের মতো আমি আমার মতো চলতে পারবো । পরে নিজের পছন্দ মতো বিয়ে করে একটা সংসার করতে পারবো । না না এসব কি ভাবছি আমি। যতই হোক সুবর্ণা আমার বউ। তার উপর আমার একটা দায়িত্ব আছে।
নিশ্চয় সুবর্ণার একটা মতলব আছে । না হলে হঠাৎ করে আমাকে না জানিয়ে না বলে ডাইরেক্ট আমাকে বিয়ে করে ফেললো কেনো? সে জানতো আমাকে বললে আমি রাজি হবো না । তাহলে কি সুবর্ণা কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে আসলো? নিলয় ভাই বললো
সে খুব প্যারা দেয় । সেটা কোনো ব্যাপার না সংসারে এরকম ঝগড়া হয়েই। সে বললো ঐদিন আমি তাকে বকছি সে জন্য সে আমাকে শান্তি দিবে।
শাস্তিটা কি তাকে কিস করতে? তাহলে আমাকে মাফ করে দিবে । খুবই হাস্যকর । পরে আমার কাছে মাফ চাইলো। কিছুদিন সুবর্ণাকে ইগনোর করে দেখি সুবর্ণা কি করে ? ও যেদিন বলবে আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে। সেদিন আমি তাকে আপন করে নিবো ।
এসব হাজারো চিন্তা আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে । কারো ফোনে আমার ধ্যান ভাঙল। দেখি সামি কল করছে? সামি বললো।
সামি: দোস্ত কোথায় তুই?
আমি: বাড়ির আশেপাশেই আছি।
সামি: কিরে বাসর রাত কেমন কাটলো?
আমি: সালা তরা বেইমানি করে । আমাকে সুবর্ণার
সাথে বিয়ে দিছত?তুই জানিস না আমি তাকে দুই চক্ষে দেখতে পারিনা।
সামি: দোস্ত আমি কিছুই জানতাম না। তর মা আগামীকাল ফোন দিয়ে এসব বলছে। আমার কি কিছু করার আছে।
আমি: এখন তো সাধু সাজবি।
সামি: শুন বিকালে মাঠে আসিছ। মাঠে একটা টুর্নামেন্ট খেলা। সেখানে তর নাম দিয়েছি।
আমি: ওকে আসবো।
সামি: আসিস কিন্তু । সুবর্ণাকে পেয়ে আমাদের ভুলে যাস না।
আমি: ধুর হালা।
__এই বলে ফোন কেটে দিলাম। কি করা যায়? দেখি সামনে আইসক্রিম এর দোকান। ভাবলাম সুবর্ণাতো আইসক্রিম খুব পছন্দ করে। যাওয়ার আইসক্রিম নিয়ে যাবো। আবার ভাবলাম ধুর সে আমার কে তার জন্য আইসক্রিম নিয়ে যাবো। আমি দুপূরের দিকে। বাসায় আসলাম। দেখি সুবর্ণা মার সাথে রান্না করতেছে। আমি আমার রুমে গিয়ে গোসল করে নামাজের উদ্দেশ্যে বের হলাম। নামাজ পড়ে রুমে এসে শুয়ে রইলাম। কিছুক্ষণ পর সুবর্ণা আসলো ।
বললো।
সুবর্ণা: খেয়ে যা।
আমি: আপনাকে বলতে হবে না।
সুবর্ণা: হুম।
__আমি গিয়ে খেয়ে আসলাম। এসে ভাবলাম একটা ঘুম দেই। এসে বিছানায় শুয়ে শুয়ে মোবাইল টিপতাছি। সুবর্ণা এসে বাথরুমে ঢুকছে গোসল করার জন্য। আমার ঘুমে ধরছে ঘুমিয়ে গেলাম । কারো শরীরের স্পর্শে আমার ঘুম ভেঙে গেলো। দেখি সুবর্ণা আমাকে জড়িয়ে ধরে বেদম ঘুমাচ্ছে। আমি ভাবলাম এ কোন জ্বালায় পড়লাম। আমি তাকে আমার থেকে ছাড়িয়ে নিলাম। দেখি এসে আবার আমাকে জড়িয়ে ধরলো । ভাবতেছি ইচ্ছা করে করছে নাকি ঘুমের মধ্যে এমন করছে। এমন সময় আসরের আজান দিলো । মনে হলো সামি তো বলছিলো মাঠে যেতে যাই। একটু ফুটবল খেলি আসি। আমি বিছানা থেকে নেমে বাথরুমে ঢুকে ফ্রেশ হলাম। তারপর ট্রাউজার পড়ে রেডি হলাম। বাইরে যাওয়ার জন্য। এমন সময় সুবর্ণা বলে উঠলো!
সুবর্ণা: কোথায় যাস?
আমি: খেলতে।
সুবর্ণা: যাস না। আমার সাথে শুয়ে থাক। আমার ভালো লাগছে না।
আমি: আপনার সাথে শুতে আমার বয়েই গেলো।
সুবর্ণা: আরেকটু পড়ে যা।
আমি: কেনো?
সুবর্ণা: আমাকে একটু জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাক। আমার ভালো লাগছে না।
আমি: পাগল নাকি। ভালো লাগছেনা তো আমি কি করবো?
সুবর্ণা: এমন করিস কেনো? আমার কষ্ট লাগে।
__এই বলে সুবর্ণা বিছানা থেকে উঠে এসে আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। আমি বললাম
আমি: আরে কি করছেন? কেউ দেখে ফেলবে তো।
সুবর্ণা: দেখলে দেখুক।
আমি: ছাড়েন বলছি।
সুবর্ণা: না ছাড়বো না। ছাড়বো আমাকে জড়িয়ে ধর।
আমি: ধুর।
__এই বলে আমি ধাক্কা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিলাম। ঘর থেকে বের হয়ে আসলাম। আসতে আসতে ভাবতে লাগলাম। এ কোন মেয়ের পাল্লায় পড়লাম আমি। আসলে তার কি দোষ সবাইতো বিয়ের পর এগুলো করে। কিন্তু আমার কেনো জানি তাকে ভালো লাগে না। মনে চায় তার থেকে ধুরে ধুরে থাকতাম। বউ বলেই কি? অথচ অন্য কোনো মেয়ের প্রতি আমার কোনো ইন্টারেস্ট নাই । যাকে দেখি সুবর্ণার চেয়ে সুন্দরী না। যাইহোক এসব ভাবতে ভাবতে আমি মাঠে চলে আসলাম। খেলাধুলা করে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। বাসায় এসে ফ্রেস হলাম। দেখি সুবর্ণা নাই । মাকে জিজ্ঞেস করলে বলে ছাদে গিয়েছে মরিয়মের সাথে। ভাবলাম ছাদে কি করে এতো মানুষের মাঝে। ধুর সেসব ভেবে লাভ নাই । ও যেটা মনে চায় সেটা করুক। মাগরিবের নামাজ পড়ে রুমে আসলাম । দেখি মার সাথে কি যেনো করতেছে? আমি রুমে এসে একটা গল্পের বই পড়তাছি। এমন সময় সুবর্ণা সেমাই নিয়ে রুমে প্রবেশ করলো বললো।
সুবর্ণা: নে সেমাইটা খেয়ে নে।
আমি: খাবো না।
সুবর্ণা: তুই না । জীবনেও ভালো হবি না। এদিকে আয় আমি খাইয়ে দেই।
আমি: আমার সাথে এরকম করতে আইসেন না। আমি খাবো না।
__সুবর্ণা গরম সেমাই চামুচে নিয়ে । ফুদিয়া ঠান্ডা করে মুখের কাছে এনে দিলো। বললো।
সুবর্ণা: হা কর।
আমি: না।
সুবর্ণা: হা কর বলছি।
আমি: না।
সুবর্ণা অনেকক্ষন ধরে । চামচ আমার মুখের সামনে দিয়ে ধরে রাখলো । আমার হা করায় আসায়। দেখি আমি হাঁ করছি না। তারপর সে নিজেই সেটা খেয়ে ফেলে। দেখি তার চোখের কোনায় পানি। মনে হয় কষ্ট পেয়েছে। কষ্ট পেয়েছে আমার কি? সেমাই রেখে এসে বললো।
সাকিব: সাকিব তুই কি আমার উপর রাগ করে আসত?
আমি: না রাগ করে থাকবো কেনো?
সুবর্ণা: তাহলে তুই আমার সাথে এমন করিস কেনো?
তর কাছে তো আমি মাফ চাইছি।
আমি: আমার আপনাকে ভালো লাগে না। প্লিজ আপু আপনি চলে যান । আমাকে একা থাকতে দিন।
সুবর্ণা: সাকিব এমন কথা বলিস না। আমার অনেক কষ্ট লাগে।
আমি: কোথায় কষ্ট লাগে আপনার। আমার মনে হয় আপনার পেটে কষ্ট লাগে ।
সুবর্ণা: সাকিব।
আমি: কি আপু?
সুবর্ণা: তুই এখনো আমাকে আপনি করে বলিস কেনো? তুমি করে বল । আমরাতো জামাই বউ।
আমি: কিন্তু আমিতো বউ হিসাবে মানি না আপনাকে।
সুবর্ণা: এমন করলে কিন্তু আমি চলে যাবো।
আমি: যান তাতে আমার কি?
সুবর্ণা: সত্যি কিন্তু আমি চলে যাবো।
আমি: যান আপনি গেলে আমি বাঁচি।
সুবর্ণা: হঠাৎ দেখবি আমি একদিন আমি চলে যাবো।
আমি: হঠাৎ কেনো? এখনই চলে যান।
__সুবর্ণা কাঁদা শুরু করলো। কাঁদতে কাঁদতে শুয়ে রইলো। আমিও না শুনার ভান করে বই পড়তাছি।
সুবর্ণা বললো।
সুবর্ণা: আমি আগামীকাল থেকে ব্যাংকে যাবো।
আমি: যান।
সুবর্ণা: তর কলেজ খুলবে কবে।
আমি: জানি না।
সুবর্ণা: চল না কোথাও ঘুরতে যাই ।
আমি: আপনার সাথে আমি কোথায় যাবো না।
সুবর্ণা: কেনো?
আমি: এমনি ভালো লাগে না।
সুবর্ণা: চল না যাই। দেখবি ভালো লাগবে।
আমি: না আমি কোথাও যাবো না।
সুবর্ণা: ওকে।
__এই বলে সুবর্ণা বাইরে চলে গেলো। কিছুক্ষন পর এসে বললো । খেয়ে যাইতে। আমি খেয়ে দেয়ে শুয়ে রইলাম। চোখে ঘুম আসতাছে। দেখি সুবর্ণা ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলো। আর আমার পাশে এসে শুয়ে পড়লো। আমি বললাম
আমি: আমি আপনার সাথে শুবো না।
সুবর্ণা: প্লিজ সাকিব এমন করিস না। শুধু আজকের রাতটা থাক। পরে থাকিস না।
আমি: এক মুহুর্ত না।
আমি বিছানা থেকে নামলাম। নেমে বালিশ নিচে দিয়ে শুয়ে রইলাম। সুবর্ণা ওপরে শুয়ে রইলো। আমি অনেকক্ষন এদিক সেদিক করে ভাবলাম। যাই আজকে রাতটা সুবর্ণার সাথে শুই। এই ভেবে আমি
সুবর্ণার পাশে শুয়ে পড়লাম। পিছন থেকে তাকে জড়িয়ে ধরলাম। আর কানে কানে বললাম।
আমি: শুধু আজকে রাতের জন্য।
__সুবর্ণা আমার দিকে ফিরলো। ফিরে একটা মুচকি হাসি দিলো। আর আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। একটা পা আমার শরীরের উপর উঠিয়ে দিলো🤭।
চলবে....
পাঠক-পাঠিকারা আমরা তোমাদের জন্য গল্প লেখি।
গল্পের এক পার্ট লেখতে আমাদের ২-৩ ঘন্টা চলে যায় । আর তোমাদের একটা রিয়েক্ট দিতে এক সেকেন্ড লাগবে। তাই কেউ রিয়েক্ট না দিয়ে যাবেন না। আর ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।
ভুল ক্রটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
❤️❤️❤️❤️❤️
ReplyDelete