#অথবা: পাশের বাড়ির বড় আপু যখন বউ
#লেখক: Osman
#পার্ট: ৮
__ভাবলাম ফেসবুকে কয়েকটি ছবি আপলোড দেই। ফেসবুকে ঢুকে টাইমলাইন চেক করছিলাম ।
একটা পোস্টের উপর আমার চোখ আটকে যায় ।
দেখি সুবর্ণা আর তার বস একসাথে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেছে । আইডি চেক করে দেখি তার বসের আইডি। আমার কলিজায় গিয়ে আঘাত লাগলো। এটা আমি কি দেখছি। আমার কেনো জানি বিশ্বাস হচ্ছে না। সুবর্ণা এমন কাজ কি করে করতে পারলো। কেনো জানি অনিচ্ছা সত্ত্বেও চোখ দিয়ে পানি বের হচ্ছে। এখন তাকে কিছু্ বলবো না। সে ঠিক মতো বাড়িতে আসুক। পড়ে না হয় এটার ফায়সালা করবো। পরদিন রাতে সে আসলো। আমি দরজা খুলে দিলাম। আসলে আমি আবার ঘুমিয়ে গেলাম।
__সুবর্ণা তার পাশের মেয়েটার প্রতি প্রচন্ড রাগ হচ্ছে। সাকিবের ফোন কেটে দিয়ে । সুবর্ণা বললো.
সুবর্ণা: আমার খেয়াল রাখার জন্য । বস আছে এই কথার মানে কি?
মেয়ে: তো বসইতো আপনার ভালো খেয়াল রাখে ।
সারাক্ষণ বসের অফিসে বসে থাকেন।
সুবর্ণা: কখন দেখছেন আপনি?
মেয়ে: কয়েকদিন আগে দেখেছি না।
সুবর্ণা: তো এই কথা আপনাকে কে বলছে? আমার হাসবেন্ড কে বলতে?
মেয়ে: বোকা পাইয়া সুন্দর একটা ছেলেকে বিয়ে করে ফেলেছেন। তার সত্য কথা জানা উচিত না।
সুবর্ণা: চুপ যত্রসব ফালতু কেনো যে বস এদেরকে ব্যাংকে চাকরি দেয়। খালি মানুষের সংসারে ঝামেলা করার জন্য বসে থাকে।
মেয়ে: এখন তো ফালতু বলবেনই কারণ সত্যি কথা বলছি না।
সুবর্ণা: আর একটা কথাও বলবেন না।
__সুবর্ণাদের কক্সবাজার আসতে সকাল হয়েছে। সবাই সবাই হোটেল বুকিং করা রুমে চলে গেলো। একটু পর মরিয়ম তারা বললো । বিচে যাবে। সুবর্ণা তাদের নিয়ে বিচে আসলো । বিচে তারা এসে অনেক খুশি সুবর্ণা তাদের বলে দিলো পানিতে না নামতে। একটু পর খেয়াল করলো তাদের অফিসের অনেকেই বিচে আসলো। অনেকেই তাদের ওয়াইফ নিয়ে আবার একা ছেলে মেয়ে নিয়ে। কে জানি সুবর্ণা বলে ডাক দিলো। সুবর্ণা চেয়ে দেখে । তার বস বস বললো।
বস: তোমার জামাই কোথায়?
সুবর্ণা: সে আসেনি।
বস: এমন একটা ট্যুরে তোমাকে সে একা আসতে দিলো?
সুবর্ণা: স্যার ও একটা টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা আছে সেজন্য ও আসেনি।
বস: সে তোমার হাসবেন্ড হয়! তার কাছে খেলা বড় নাকি তুমি বড়। তার আসা উচিত ছিলো।
সুবর্ণা: হুম।
বস: আমার মনে হয় । সে তোমাকে ভালোবেসে না। দেখো সে এখনো ছোট সে এখনো তোমার গুরুত্ব বুঝে না। প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে তোমাকে ছুড়ে ফেলে দিবে।
সুবর্ণা: না স্যার ও এমন না।
বস: চলো এদিকটায় যাই।
সুবর্ণা: হুম।
বস: চলো একটা ছবি তুলি ।
__বস বলাতে সুবর্ণা না করতে পারলো না। বস ছবি তুললো তার মোবাইল দিয়ে।
বস: আমি তোমাকে কিছু কথা বলতে চাই।
সুবর্ণা: জী স্যার বলেন।
বস: দেখো তোমার পিচ্চি হাসবেন্ড তোমাকে না ভালোবাসে না তোমাকে কেয়ার করে প্রয়োজন শেষে তোমাকে ছেড়ে অন্য কোনো মেয়ের সাথে দেখবে চলে যাবে। তারচেয়ে ভালো সময় থাকতে সাবধান হও।
সুবর্ণা: স্যার বুঝলাম না।
বস: মানে যদি তুমি তোমার হাসবেন্ড কে ভালো না লাগে তাহলে আমি আছি। তুমি আমার কাছে আসতে পারো।
__বসের মুখ থেকে এমন কথা বের হবে সুবর্ণা কল্পনাও করেনি। কি নিচু মনের মানুষ । দেখতাছে আমার জামাই আছে তারপরেও কি বেহায়ার মতো প্রস্তাব দেয়। আর সাকিবকে ছাড়া সুবর্ণা কিছুই কল্পনা করতে পারেনা। সাকিবই সুবর্ণার সব । সুবর্ণার চুপচাপ দেখে বস বললো ।
বস: তোমাকে আমি চাপ দিচ্ছি না। আজকে ভালো ভাবে চিন্তা করে আমাকে জানাও। ওকে । আমি যাই।
__এই বলে বস চলে গেলো। সারাদিন এদিক সেদিক ঘুরে চলে গেলো । পরদিন আবার বসের সাথে হোটেলে দেখা বস বললো।
বস: তো সুবর্ণা কি চিন্তা ভাবনা করলা?
__সুবর্ণা কোনো দ্বিধা ছাড়াই বলতে লাগলো।
সুবর্ণা: না স্যার। আমি তাকে ছাড়তে পারবোনা। তাকে ছাড়া আমি কিছুই কল্পনা করতে পারিনা। সাকিবের জন্য আমি সব দিয়ে দিবো। সে যদি আমাকে ব্যাবহার করে ফেলে দেয়। তাহলে সেটা ভেবে নিবো আমার কপাল ভালো না । বাঁচলে তার জন্য বাঁচবো মরলে তার জন্যই মরবো । সাকিবকে আমি ভালোবাসি স্যার তাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না। সরি স্যার।
বস: ভেবে চিন্তে বলছো তো।
সুবর্ণা: জী স্যার আমি তার স্ত্রী। আর আমি তাকে খুবই ভালোবাসি। এখন না বুঝলে সে কয়েকদিন পর সে ঠিকই বুঝবে।
বস: তোমার এই একটায় দোষ । তুমি মানুষকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করো। নিলয়কে বিশ্বাস করেছিলে না। সে তোমাকে কি দিয়েছে। ওলটা তোমার জীবন থেকে পাঁচটি বছর কেড়ে নিলো। বুঝবা একদিন ঠিকই বুঝবা।
সুবর্ণা: না স্যার সবাইতো আর নিলয়ের মতো না। আর আমি সাকিবকে অন্ধের মতোই বিশ্বাস করি । এই অন্ধকেই সে একদিন পথ দেখাবে।
বস: তুমি চাইলে আরো কয়েকদিন সময় নিতে পারো।
সুবর্ণা: না স্যার আমার আর সময় লাগবে না। এটাই আমার ফাইনাল সিন্ধান্ত। আশাকরি এই বিষয়ে আমাকে আর বিরক্ত করবেন না।
বস: আর ইউ সিউর ।
সুবর্ণা: জী স্যার।
বস: ওকে।
__এই বলে বস চলে গেলো। সুবর্ণা ভাবলো এই বস নিজের বউয়ের খেয়াল রাখতে পারে না নিজের বউ ডিভোর্স দিয়ে চলে যায়। এখন আসছে আমার খেয়াল রাখতে যত্তসব ফালতু। রাতে তাদের বাস ছাড়ে । বাসায় আসতে আসতে অনেক রাত হলো এসে দরজায় টোকা দিলো সাকিব দরজা খুলে দিলো। সাকিব কিছু না বলে আবার ঘুমিয়ে গেলো। সুবর্ণাও ফ্রেস হয়ে সাকিবের পাশে শুয়ে পড়লো।
__সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি। সুবর্ণা আমাকে জড়িয়ে ধরে দিব্বি ঘুমাচ্ছে। আমার তার মুখের দিকে তাকালাম ভাবলাম নিষ্পাপ মুখ মিথ্যা বলতে পারেনা। ভাবলাম এখন ঘুমাক পরে জিজ্ঞেস করবো। আমি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা রেডি করলাম।
পরে সুবর্ণাকে ডাক দিলাম নাস্তা করতে । সুবর্ণা ওঠে
ফ্রেস হয়ে নাস্তার টেবিলে আসলো। আমার শরীর রাগে গজগজ করতেছে। পর পুরুষের সঙ্গে রাত কাটিয়ে এসে আমার পাশে শুয়ে ঘুমালো। আর আমি তাকে নাস্তা বানিয়ে খাওয়াচ্ছি। আমার মুখের এমন অবস্থা দেখে সুবর্ণা বললো।
সুবর্ণা: কিরে তুই মুখ এরকম ঘুমরা করে রাখছত কেনো?
আমি: চুপ একদম চুপ। তুমি এক্ষুনি এই বাড়ি থেকে বের হয়ে যাও। তোমাকে আমার একটুও প্রয়োজন নেই।
__আমি মোবাইল থেকে ছবি বের সুবর্ণাকে দেখালাম।
সুবর্ণা: শুন তুই আমার কথা শুন।
আমি: তোমার কথা আমি বিন্দু পরিমাণ বিশ্বাস করি না। আমি আগেও দেখছিলাম তোমার সাথে তোমার বসের খুব ভাব। কিন্তু আমি ভাবছিলাম সেটা আমার ব্যর্থতা আমি তোমাকে ভালোবাসতে পারিনি। তখন ঠিক করেছিলাম তোমাকে আর কষ্ট দিবো না। এর পর থেকে তুমিই বলো আমি তোমার কথার অবাধ্য হয়েছি।
সুবর্ণা: দেখ বস যদি আমাকে ডেকে অফিসে বসিয়ে রাখে সেটাতে আমার কোনো দোষ আছে।
__আমি প্রচন্ড রাগ ওঠে গেছে। রাগ ওঠলে আমি কি বলি আমি নিজেই জানিনা।
আমি: এখন বস যদি বলে চলো রুম ডেটে যাই তখনো বলবা বস বলছে না করতে পারিনা। ছিঃ ছিঃ সুবর্ণা ছিঃ । আমি তোমাকে সত্যি ভালোবেসে ছিলাম। আর কক্সবাজার গিয়ে তোমারা গিয়ে কি করছো । আল্লাহয় জানে। তোমার সাথে আমি এক মুহুর্ত থাকবো না। এক্ষুনি এই বাসা ছেড়ে চলে যাও।
সুবর্ণা: তুই মাথা ঠান্ডা কর আমি তকে ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলছি।
আমি: এখন কতো কিছু বানিয়ে বলবা।
__আমি ওঠে রুমে চলে আসলাম । এসে সিগারেট ধরাইলাম । সুবর্ণা আমার পাশে এসে বসলো । আর বললো।
সুবর্ণা : (সুবর্ণা ভ্রুমনে গিয়ে বসের সাথে যা যা কথা হয়েছে সব সাকিব কে বললো)
আমি: একটা কথাও বিশ্বাস করি না আমি।
__সুবর্ণা আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো । বললো
সুবর্ণা: আমি তকে সত্যি বলছি। আমি তকে অনেক ভালোবাসি। তকে ছাড়া আমি বাঁচবো না।
__আমি সুবর্ণাকে আমার শরীর থেকে ছাড়িয়ে নিলাম। বললাম
আমি: আমার শরীরে টাচ করবেন না। যত্তসব ফালতু কথা। তোমার প্রতি আমার ঘৃনা হচ্ছে। এতদিন আমি কার সাথে থাকলাম। আমার এখন মনে হচ্ছে এসব তোমার আর বসের পরিকল্পনা ছিলো । ট্যুরের ডেট তোমরা আমার ফাইনাল খেলার দিন দিয়েছো। যাতে আমি না যেতে পারি। আর তোমরা গিয়ে ঐখানে ইনজয় করতে পারো।
সুবর্ণা: আমি সত্যি বলছি এরকম কিছু ছিলোনা। প্লিজ আমাকে বিশ্বাস কর।
আমি: তোমার কোনো কথা আমি বিশ্বাস করি না। তুমি এক্ষুনি চলে যাও। তুমি আমাকে এতদিন ব্যাবহার করেছো?
সুবর্ণা: আল্লার দোহাই লাগে আমাকে বিশ্বাস কর সাকিব।
__এই বলে সুবর্ণা কাঁদতে লাগলো।
আমি: তুমি এক্ষুনি বাড়ি থেকে চলে যাও।
__সুবর্ণা কেঁদে বলতে লাগলো।
সুবর্ণা: প্লিজ সাকিব আমাকে বের করে দিস না। তুই আমাকে মার বক যেটা মনে চায় কর প্লিজ আমাকে বের করে দিস না। তর পায়ে পড়ি। তর পায়ে পড়ি।তরে ছাড়া আমি বাঁচবো না।😭😭😭
চলবে....
পাঠক-পাঠিকারা আমরা তোমাদের জন্য গল্প লেখি।
গল্পের এক পার্ট লেখতে আমাদের ২-৩ ঘন্টা চলে যায় । আর তোমাদের একটা রিয়েক্ট দিতে এক সেকেন্ড লাগবে। তাই কেউ রিয়েক্ট না দিয়ে যাবেন না। আর ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।
ভুল ক্রটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।