__পার্ট: ৩
__লেখক: Osman
__আমি মেসে গিয়ে খাবারের নাম উঠালাম। ঐখানে এখন খাওয়াদাওয়া করলাম। রাতে আমার হাতে কোম্পানির কার্ড পৌঁছালো। পরদিন কোম্পানির উদ্দেশ্য রওনা দিলাম। দারোয়ানকে কার্ড দেখিয়ে ভিতরে ঢুকলাম। কার্ডের সাথে আরো কিছু ফাইল ছিলো। তার মধ্যে একটায় লেখা ছিলো আমি কোথায় বসবো। আমার টেবিল হলো পাঁচ তলার একেবারে এক কোনায় । গিয়ে পিসি অন করলাম।
কিছুক্ষণ বসে রইলাম। অচেনা নাম্বারে ফোন আসলো ফোন ধরলাম ওপার থেকে বললো।
অচেনা: আমি রফিক ইলেকট্রনিক কোম্পানি থেকে বলছিলাম। আপনি কিছু দিন আগে আমাদের এই কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন ।
আমি: জী হ্যাঁ।
অচেনা: আপনার চাকরিটা হয়েছে। আপনার বেতন ৩০ হাজার টাকা। আপনি কি কোম্পানিতে জয়েন করতে চান।
আমি: আপনাকে কিছুক্ষন পর জানাচ্ছি ।
অচেনা: ওকে।
__আমি এমন খবর শুনে কপালে হাত দিয়ে বসে রইলাম। কি হলো আমার সাথে এইটা । ছয় মাস ইন্টারভিউ দিয়ে কোথাও টিকিনি। আজ অন্য কোম্পানিতে জয়েন হলাম। আজকেই কিনা অন্য কোম্পানি থেকে চাকরি হলো। আরে আমার পুরা কপাল। আর সবচেয়ে বড় বিষয় হলো। ঐ কোম্পানিত চাকরি করলে বাড়ি থেকে আসা যাওয়া করতে পারতাম। আর বেতন ও বেশি। কি করবো আমার মাথায় কাজ করছে না। মাকে ফোন দেই।
আমি মাকে ফোন দিয়ে সব বললাম মা বললো।
মা: তর কি ইচ্ছে। তর কি মনে হয় এখন যেখানে আছত সেখানে সুবিধা করতে পারবি?
আমি: মা এখানে আমি বাসা ভাড়া নিয়ে খাওয়ার জন্য মেস ঠিক করছি। আর এখন আমি অফিসে বসে আছি।
মা: এখন যেখানে আছত সেখানেই থাক।
আমি: ভেবে দেখেছো আমি বাড়ি থেকে যেয়ে কাজ করতে পারবো। আমার যে বাড়তি খরচ ঐটা লাগবে না। তারপরে মেসের খাবার বেশি ভালো না। মা আমি এইটা ছেড়ে বাড়ি চলে আসি। আর এখানে সবাই অপরিচিত। আমার ভালো লাগে না।
মা: তর যেটা ভালো মনে হয় কর।
আমি: ওকে।
__আমি ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিলাম। মনি আপুর কোম্পানির চাকরি ছেড়ে দিবো । কারণ এর চেয়ে ভালো পন্থা আছে আমার কাছে টাকা উপার্জন করার। আর শুধু শুধু এতো দুরে এসে পড়ে থেকে লাভ কি। আর বেতন ও বেশি। আমি রফিক ইলেকট্রনিক কোম্পানিতে ফোন করলাম। বলে দিলাম আমি জয়েন করবো। এখন কাজ শুধু ঢাকা থেকে বিদায় হওয়া। ভাবলাম মনি আপুকে বলে আসি। আমি আর তার কোম্পানিতে আসবো না।
আমি মনি আপুর অফিসের কাছে গেলাম। আমাকে দেখে তার পিএস সারা কাছে আসলো।
বললো।
সারা: কি প্রয়োজন? যা দরকার ম্যানেজারকে বলেন ম্যাডাম ব্যাস্ত আছে।
আমি: ওনার সাথে কথা বলা খুব প্রয়োজন ।
সারা: ম্যাডাম এখন কারো সাথে দেখা করবে না। যান।
আমি: প্লিজ আপু ম্যাডামকে বলেন রাফিদ আপনার সাথে দেখা করতে চাচ্ছে।
__সারা অনেকটা বিরক্ত হয়েই। মনি আপুর কাছে গেলো গিয়ে কি জানি বললো ? একটু পর এসে বললো।
সারা: যান।
__আমি ভিতরে গেলাম। দেখি অফিসটা তার নিজের মতো করে সাজিয়েছে । খুব সুন্দর অফিস। আমাকে দেখে মনি আপু বললো।
মনি আপু: কি রাফিদ? তরে যদি কারো প্রয়োজন হয় তাহলে তর অফিসে ফোন যাবে।
আমি: জানি ম্যাডাম। আসলে আমি আসছি অন্য বিষয়ে কথা বলতে।
মনি আপু: কি বলবি বল।
আমি: ম্যাডাম আমি চাকরিটা ছেড়ে দিতে চাই।
মনি আপু: কেনো?
__মনি আপু পিসি থেকে চোখ সরিয়ে আমার দিকে তাকালো।
আমি: আমার বাড়ির কাছেই একটা কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিয়েছিলাম। ঐখানে আমার চাকরি হয়েছে। বেতন ৩০ হাজার টাকা। সেজন্য আমি চাকরিটা ছেড়ে দিতে চাই।
মনি আপু: ভালো। এতো কষ্ট করে এখানে আসলি ।
আবার চলে যাবি।
আমি: আসলে ম্যাডাম আমার বাড়ির কাছেইতো সেজন্য।
মনি আপু: বেতন জানি কতো ৩০ হাজার টাকা। যা আমিও তকে ৩০ হাজার টাকা দিবো। এখন গিয়ে কাজ কর।
আমি: না ম্যাডাম । আসলে বাড়ির কাছেতো সেজন্য হাত ছাড়া করতে চাচ্ছি না।
মনি আপু: রাফিদ চাকরিটা ছাড়িস না। তকে আমার প্রয়োজন পড়বে।
__মনি আপুর মুখ থেকে এমন কথা শুনে। নিজের ভিতর একটু অহংকার কাজ করলো। ভাবলাম ঐসময়তো চাকরি দিতে চাচ্ছিলেন না আর এখন অনুরোধ করছেন। না! না! আমি কোনো ভাবেই আর এখানে থাকছি না। দেখি আপু এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি: সরি ম্যাডাম।
মনি আপু: রাফিদ তরে আমি ভালো করেই চিনি। আমি তর প্রতিবেশী। বিপদে আপদে আমার তর কাজে লাগতে পারে।
সারা: ম্যাডাম সে যেহেতু থাকতে চাচ্ছেন না তাহলে তাকে কেনো বিরুক্ত করছেন? (অনেকটা অস্থির হয়ে কথাটা বললো(
মনি আপু: আচ্ছা তরে আবার ভাবার সুযোগ দিলাম। আরেক বার ভেবে দেখ।
আমি: সরি আপু।
মনি আপু: ওকে।
__এই বলে আপু পিসিতে মনোযোগ দিলো। সারা আমার কাছে এসে আমার কার্ড নিয়ে নিলো।
আমি চলে আসলাম। ভাবলাম কাজ নেই চলে যাই।
গেট থেকে বের হতে যাবো এমন সময় দেখি মোবাইলে কল আসলো। দেখি রফিক ইলেকট্রনিক কোম্পানি থেকে ফোন ধরলাম ।
আমি: হ্যালো জী বলেন।
রফিক কোম্পানি: আপনি রাফিদ বলতাছেন?
আমি: জী হ্যা।
রফিক কোম্পানি: আপনাকে যে পোষ্টে চাকরি দেওয়া হয়েছে। সে পোস্টে একটা প্রোবলেম হয়েছে।
আমি: কি প্রোবলেম?
রফিক কোম্পানি: আপনি যে পোষ্টে জয়েন করতে চান। সে পোস্টে আরেকজন ঢুকার জন্য ৬ লক্ষ্য টাকা দিয়েছে। এখন আপনি যদি এর থেকে কিছু বেশি দিতে পারেন। তাহলে দুই দিনের ভিতর জয়েন করতে পারেন। অন্যথায় আপনি চাকরি থেকে বঞ্চিত হবেন।
__আমি কোনো কিছুই না ভেবে বললাম।
আমি: F*** you . Go to hell...
__আমি আবার অফিসে এসে ওয়াসরুমে ঢুকলাম। ঢুকে চোখে মুখে ইচ্ছা মতো পানি দিলাম। আমি বুঝতে পারছি না আমার সাথে এসব কি হচ্ছে। ঘুষ
চাওয়া নতুন কিছু না। এর আগে আরো অনেক কোম্পানি ঘুষ চেয়েছে। মার পরিস্কার কথা একটা টাকাও মায় ঘুষ দিবে না। চাকরি না পাইলে ক্ষেতে কাজ করে খাইতাম। অন্য অন্য কোম্পানি থেকে ঘুষ চেয়েছে কিন্তু সেটা প্রথম বার বলে দিয়েছে । কিন্তু এই কোম্পানি প্রথমে আমার চাকরি সিউর করে তারপর ঘুষ চেয়েছে। আমার সাথেই কেনো এরকম হয়। আসলে সব আমার দোষ লোভ আমার বেশি।
যেটা পেয়েছিলাম সেটা নিয়ে খুশি থাকতাম। এখন মনি আপু আমাকে আর চাকরি দিবে। আর দেখা করতে পারবো কিনা সন্দেহ। সব দোষ আমার প্রয়োজন এর চেয়ে বেশি কিছু পেয়ে গিয়েছিলাম সেজন্য মনের ভিতর অহংকার কাজ করছিলো। এখন কই তর অহংকার । কিভাবে আবার মনি আপুর সামনে যাবো। না যেতেই হবে। একবার অফিস থেকে বের হয়ে গেলে আর পাবো না। তার আগেই ধরতে হবে। দরকার হলে পায়ে পড়তে হবে। কারণ আমি মাকে আর কষ্ট দিতে চাইনা। আমি মনি আপুর অফিসে গেলাম । দরজার সামনে দেখি সারা বসে আছে। আমাকে দেখেই তার মুখের রং পাল্টে গেলো। বুঝলাম আমার খবর আছে।
চলবে...
পাঠক-পাঠিকারা আমরা তোমাদের জন্য গল্প লেখি।
গল্পের এক পার্ট লেখতে আমাদের ২-৩ ঘন্টা চলে যায় । আর তোমাদের একটা রিয়েক্ট দিতে এক সেকেন্ড লাগবে। তাই কেউ রিয়েক্ট না দিয়ে যাবেন না। আর ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।
ভুল ক্রটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।