গল্পঃ সিনিয়র বস পার্ট ০৭ | Senior Boss Part 07

 
গল্পঃ সিনিয়র বস পার্ট ০৭ | Senior Boss Part 07

#নাম: সিনিয়র বস
#পার্ট: ৭
#লেখক: Osman


__রাত ১টা সময় দরজায় টোকা দেওয়ার কারণে আমি কিছুটা হকচকিয়ে উঠলাম। আমার মাথায় কাজ করছেনা কে দরজায় টোকা দিলো। আমি লাইট জ্বালিয়ে চশমা চোখে দিয়ে। দরজার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম কে? 

__মনির জীবনটা খুব অদ্ভুত। মনির আব্বু তাকে ব্যাবসা দিয়ে দিয়েছে। বলছে তার নিজের মতো করে
ব্যাবসা সাজিয়ে নিতে। মনিও তার কোম্পানি ধরে রাখতে অনড়। সে জন্য সে খুব কঠোর আচরণ করে কর্মচারীদের সাথে। ব্যাবসার পিছনে ছুটতে ছুটতে কখন যে তার বয়স ২৫ কোঠায় গিয়ে ঠেকেছে সে নিজেও জানে না। মনির একজনকে খুব প্রয়োজন। 
তার  কোম্পানির সাথে অন্য আরেকটি কোম্পানি মিলিতো হয়ে যৌথ মিলনে নতুন একটা প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছে। যার সাথে কাজ করা হচ্ছে। তার নাম হচ্ছে মি: আজিম। তার সাথে মনির খুব ভাব । অনেক সময় সে মিট করতে চায়। মনিও আপত্তি করে না। কারণ তার এখন একজনকে খুব দরকার। মনি তার চাহিদা গুলো বুঝতে পারছে। মনির টাকার অভাব নেই। মনির যে টাকা আছে। সে টাকা দিয়ে মনির চৌদ্দ গুষ্টি খেয়ে যেতে পারবে। মনির সেক্রেটারি সারা খুব ভালো মেয়ে। কিন্তু খুব যেদি। অব্যশ্য মনির কম যেদ না। কিন্তু সারা মারামারিতে উস্তাদ। একাই দুই জন পুরুষকে কাবো করে ফেলতে‌ পারে। এজন্যই সারা এক হিসাবে মনির বডিগার্ড আবার সেক্রেটারি ও। ও মনির মতোই এখনো বিয়ে করেনি। সে এখন মনিকে  নিয়ে ব্যাস্ত । মনি বিয়ে করলে ও করবে। কিন্তু মনি ইদানিং একটা সমস্যায় পড়েছে। সেটা হলো‌ রাতে ঘুমাতে পারে না। তার কারণ হলো কিছুদিন আগে তার প্রতিবেশী একজন তার কোম্পানিতে জয়েন করে । তার নাম হলো রাফিদ। অন্য সবার থেকে সে একটু অন্যরকম।  এই রাফিদ কিনা ছোট বেলা মনিকে কোমড়ে ঘুষি মারছিলো। এটা মনে হতেই মনির মাথায় রক্ত উঠে যায়। সে জন্য রাফিদকে আচ্ছা মতো ধোলাই দিয়েছে। কিন্তু মারটা একটু বেশিই হয়ে যায়। বেচারা মরতে বসেছিলো । কিন্তু ভাগ্যর বিষয় হলো রাফিদের রক্ত আর মনির শরীরের রক্ত একই। তাই মনি তাড়াতাড়ি এক ব্যাগ রক্ত দেয়। যার জন্য রাফিদ বেচারা বেঁচে যায়। এটা ভেবে খুশি লাগছে মনির মতোই রাফিদকে কানা বানাতে পারলো। মনি জানে রাফিদ আর তার কোম্পানির মুখ দেখবে না। সেসব ভেবে মনির লাভ নেই। আর তাকে সরি বলার কোনো ইচ্ছা নেই মনির। সব কিছুই ঠিক ছিলো সমস্যা হয়েছে রাতে । রাতে ঘুমানোর পর মনি রাফিদ কে নিয়ে  সপ্ন দেখে । দেখে রাফিদ সেই রক্তাক্ত মুখ নিয়ে মনির পাশে শুয়ে আছে । দেখে তার মুখ থেকে টপ টপিয়ে রক্ত পড়ছে ।  
দেখে রাফিদ মনির আরো কাছে চলে এসেছে । এসে  মনিকে জড়িয়ে ধরলো । তার নাক মুখ থেকে যে রক্ত গুলো পড়ছে সেগুলো মনির মুখে পড়ছে।  মনি চিৎকার দিয়ে ঘুম থেকে উঠে যায় । উঠে তাড়াতাড়ি এক গ্লাস পানি খায় । মনি এমন সপ্নের কথা মনে হলেই শরীর কাঁটা দিয়ে ওঠে। ওই দিন রাতেই আর মনি ঘুমায়নি। পরদিন অফিসের কাজ শেষ করে অনেক রাতে আসলো মনি । প্রচন্ড ঘুমে ধরছিলো। 
তাই ফ্রেস না হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুমের মধ্যে আবার দেখতে থাকে মনি। রাফিদের সেই রক্তাক্ত মুখ নাক দিয়ে টপটপিয়ে রক্ত পড়ছে এক চোখ বন্ধ । দেখে হেঁটে তার খাটের কাছে আসলো এসে মনির পাশে শুয়ে পড়লো শুয়ে মনির ঠোঁটের কাছে মুখ নিতে থাকে। একেবারে যখন ঠোঁটের কাছে মুখ চলে আসে তখন মনির ঘুম ভেঙ্গে যায় । এই এসির মধ্যই মনির শরীর দিয়ে টপটপিয়ে ঘাম বের হচ্ছে। মনি বুঝতে পারছে না এসব কি হচ্ছে মনির সাথে ।‌ শুধু রাফিদ কেনো আসবে তার সপ্নে। মনি বুঝতে পারছে রাফিদের সাথে অন্যায় করছে। সে জন্য সপ্নে আসছে রাফিদ বার বার। আচ্ছা যদি রাফিদের কাছে ক্ষমা চায় তাহলে বোধহয় আর আসবেনা রাফিদ সপ্নের মধ্যে। আচ্ছা আসুক ভালো কথা কিন্তু এভাবে রক্তাক্ত মুখ নিয়ে আসলে কে ভয় না পাবে। আবার আসে আমাকে কিস করতে কতো বড় সাহস। মনি গিয়ে ফ্রেস হলো। ঘুমানোর কোনো ইচ্ছায় নেই মনির। ঘুমালে যদি আবার ঐ সপ্ন দেখে । 
মনি সারা রাত কোম্পানির কাজ নিয়ে শেষ করে ফেললো । যদিও শেষ রাতে ঘুমিয়ে যায়। সকালে ঘুম থেকে উঠে মনের মুখটা দেখার মতো ছিলো। দুই চোখ লাল । গাল গুলো ফুলা ফুলা। সারা মনির এমন অবস্থা দেখে । অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো।

সারা: ম্যাডাম আপনি কি রাতে ঘুমান নাই?

মনি: কেনো?

সারা: আপনার চোখ এমন কেনো? চোখ দুটো লাল হয়ে আছে। 

মনি: তেমন কিছু না। রাতে অফিসের কাজ নিয়ে একটু ব্যাস্ত ছিলাম। 

__সারা অবাক হয়ে বললো

সারা: ওহ। 

মনি: মনে হয় রাফিদকে একটু বেশিই মেরে ফেলছি। 

__মনির মুখে রাফিদের কথা শুনে । সারা যেনো 
আকাশ থেকে পড়লো। বললো

সারা: জী ম্যাডাম একটু বেশিই মেরে ফেলেছেন। 

মনি: আমার কি তার কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। আচ্ছা তুই কি রাফিদের লোকেশন বের করতে পারবি।

সারা: জী ম্যাডাম । আর আমার মনে হয় তার প্রয়োজন নেই। 

মনি: ওহ।

সারা: আপনার যদি শুধু রাফিদের ঐ ঘটনার কথা মনে পড়ে । তাহলে আপনি মি: আজিমের সাথে ভালো একটা সময় কাটাতে পারেন। 

মনি: একদম ঠিক বলেছত। এক্ষুনি মি: আজিমকে ফোন কর বল । তার সাথে আজকে দেখা করবো।

সারা: ওকে। ম্যাডাম তাড়াতাড়ি একটা বিয়ে করেননা । আমারওতো বিয়ে করতে মনে চায় ।

মনি: সারা তুই প্রতিশ্রুতি দিয়ে কি বিপদে পড়ছত দেখছত। এর চেয়ে ভালো তুই প্রতিশ্রুতি উঠিয়ে নে। 

সারা: এখন আপাতত থাক। মনের মতো কাওকে পেলে উঠিয়ে নিবো। 

মনি: তর আবার পছন্দের বাকি আছে।

সারা: ওকে। 

__সারা আর মনি অফিসে গেলো। অফিসে সারাটা দিন ঘুমিয়ে কাটালো। রাতে মি: আজিমের সাথে দেখা করলো। মি: আজিমের সাথে ভালো একটা মুহূর্ত কাটালো। রাতে বাসায় ভাবলো মনের মতো করে একটা ঘুম দিবে।  শুয়ে সাথে সাথে ঘুমিয়ে গেলো । আবার একি সপ্ন কিন্তু এবার এসে রাফিদ সোজা মনির উপরে উঠে গেলো । আস্তে আস্তে রাফির রক্তাক্ত ঠোঁট মনির ঠোঁটের কাছে আনতে লাগলো আর মাত্র এক ইঞ্চির ব্যাবধান তখনই মনির ঘুম ভেঙ্গে যায় । চোখ খুলে দেখে কেও নাই। মনির শরীর দিয়ে ঘাম বের হচ্ছে। এক গ্লাস পানি খেলো । ঐ দিন রাতেও মনি ঘুমাতে পারলো না। পরদিন সারাকে বললো তার বাসায় থাকতে। মনি ঠিক করলো যদি আজকে রাতেও যদি এই সপ্ন দেখে তাহলে কিছু একটা করবে। মনি ক্লান্ত শরীরটা নিয়ে শুয়ে পড়লো । তিন দিন ধরে মনি ঘুমাতে পারে না। বিছানায় গা এলিয়ে দেওয়ার সাথে সাথে মনি ঘুমিয়ে পড়লো‌ । মনি সপ্ন দেখতে লাগলো । রাফিদের রক্তাক্ত ঠোঁট মনির গোলাপী মিষ্টি দুটি ঠোঁটের থেকে ইঞ্চিখানিক দুরে। মনি অনেকটা যেদের বসেই । রাফিদের রক্তাক্ত ঠোঁটের সাথে নিজের ঠোঁট লাগিয়ে দিলো । অনেকক্ষন মনি রাফিদ কে কিস করলো । কিস করতে যে এতো ভালো লাগে মনি সেটা আগে জানতো না। মনি এখন রাফিদকে ছাড়তে চাচ্ছে না। মনি আস্তে আস্তে রাফিদকে জড়িয়ে ধরলো কিন্তু ততক্ষণে রাফিদ মিলিয়ে গেলো । মনি ঘুম থেকে উঠে সারাকে কল করলো বললো।

মনি: রাফিদের ঠিকানা বের করছস?

সারা: জী ম্যাডাম । 

মনি: এক্ষুনি গাড়ি বের‌ কর? এক্ষুনি রাফিদের বাসায় যাবো। 

সারা: ম্যাডাম এখন রাত ১টা বাজে সকালে যাই। 

মনি: না এক্ষুনি বের হো। 

সারা: ওকে ম্যাডাম। 

__সারা গাড়ি নিয়ে বের হলো। মনি গাড়িতে উঠে সোজা রাফিদের বাসার সামনে এসে বললো। 

মনি: যা ওরে ধরে নিয়ে আয়। 

সারা: ওকে। ।

__সারা গিয়ে দরজায় টোকা দিলো। 

__দরজার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম কে?
উপার থেকে একটা মেয়ে কন্ঠ ভেসে আসলো । বুঝলাম এটা সারা ।

সারা: আমি সারা দরজা খুল।

আমি: কেনো আসছেন?

সারা: তুই দরজা খুল পরে বলছি।

আমি: না দরজা খুলবো না। এতো রাতে আমার এখানে কেনো আসছেন। আমাকে মেরে ফেলার চিন্তা করছেন । 

সারা: তেমন কিছু না । ম্যাডাম আসছে তর সাথে কথা বলবে। 

আমি: আপনারা দুজন চলে যান। আপনাদের সাথে কোনো কথা নাই। আপনারা দুজন শুধু আমাকে মারতে আসছেন। প্লিজ সারা আমাকে ছেড়ে দেন । 

সারা: ম্যাডাম তর সাথে দেখা করতে আসছে। প্লিজ ম্যাডামকে ফিরিয়ে দিস না। 

আমি: আপনাদের কাওকে আমি চিনিনা। চলে যান।

সারা: তুই যদি দরজা না খুলস। নাহলে কিন্তু দরজা ভেঙে ঢুকবো। 

__এই বলে দরজায় লাথি দিতে লাগলো। আমি বললাম

আমি: ওকে ম্যাডামকে বলেন আসতে। 

সারা: আচ্ছা। 

__একটু পর মনি আপুর কন্ঠ শুনতে পারলাম। 

মনি আপু: রাফিদ তর সাথে কথা আছে। প্লিজ‌ দরজা খুল। 

আমি: ওকে আপু আমমি  দরজা খুলছি। যদি কিছু করার চেষ্টা করেন। তাহলে আপনাদের দুজনকেই আমি মেরে ফেলবো। 

মনি আপু: আচ্ছা।‌ 

__আমি হাতের মধ্যে একটা ছুরি নিয়ে দরজা খুললাম। দরজা খুলার সাথে সাথে । সারা আমার হাত থেকে ছুরি কেড়ে নিলো। আমার টি_শার্টের কলার ধরে । গাড়ির সামনে নিয়ে গেলো । গাড়ির দরজা খুলে আমাকে গাড়ির ভিতর ঢুকিয়ে দিলো। দেখি আমার পাশে মনি আপু বসে আছে।

চলবে.....

 
পাঠক-পাঠিকারা আমরা তোমাদের জন্য গল্প লেখি।
গল্পের এক পার্ট লেখতে আমাদের ২-৩ ঘন্টা চলে যায় । আর তোমাদের একটা রিয়েক্ট দিতে এক সেকেন্ড লাগবে। তাই কেউ রিয়েক্ট না দিয়ে যাবেন না। আর ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।
ভুল ক্রটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post