গল্পঃ সিনিয়র বস পার্ট ০৮ | Senior Boss Part 08

 
গল্পঃ সিনিয়র বস পার্ট ০৮ | Senior Boss Part 08

#নাম: সিনিয়র বস
#পার্ট: ৮
#লেখক: Osman
#Copywritealert❌

__আমি হাতের মধ্যে একটা ছুরি নিয়ে দরজা খুললাম। দরজা খুলার সাথে সাথে । সারা আমার হাত থেকে ছুরি কেড়ে নিলো। আমার টি_শার্টের কলার ধরে । গাড়ির সামনে নিয়ে গেলো । গাড়ির দরজা খুলে আমাকে গাড়ির ভিতর ঢুকিয়ে দিলো। দেখি আমার পাশে মনি আপু বসে আছে। মনি আপু বললো। 

মনি: অফিসে যাস না কেনো?

আমি: আর আর আপনার কোম্পানীতে চাকরি করবো না।

মনি: দেখ তকে আমি এভাবে এসে বলতাছি এটা তর সৌভাগ্য । 

আমি: লাগবে না আমার সৌভাগ্য। আপনি চলে যান। 

মনি: সরি আমি অত্যান্ত দুঃখিতো। তর সাথে এমন করার জন্য। 

__মনি আপুর মুখ থেকে সরি শুনে নিজেকে অন্যরকম মনে হচ্ছে। আমি ভাবলাম মনি আপু টাকার পিছনে ছুটে শুধু। আসলে কি জানেন? প্রত্যাকটা মানুষেরই একটা মন থাকে এই অতিরিক্ত রাগের কারনে মানুষ সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। সময় ফুরিয়ে গেলে সঠিক সিদ্ধান্ত মাথায় আসে। তখন যদি সে সেটা সমাধান করে। সেটা হলো বুদ্ধিমানের কাজ । মনি আপু সেটাই করছে। 

আমি: ইটস ওকে। নো প্রবলেম। 

__বললাম মুখে হাসি টেনে। মনি আপু আমার মোবাইল দিয়ে বললো

মনি: এই নে তর মোবাইল। 

আমি: ধন্যবাদ। 

মনি: আগামীকাল থেকে অফিসে জয়েন কর।
 
আমি: ওকে। কিন্তু আপু সারাকে বলেন। আমার সাথে ভালো ব্যাবহার করতে। 

মনি: আচ্ছা বলবো। 

__আমি মনি আপুর মুখের দিকে তাকালাম। দেখি চোখে দুটো চশমা। চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে। বুঝতে পারলাম না কেনো? কেঁদেছে অনেক । আমার তা মনে হয় না। মনি আপুর হাত থেকে মোবাইল নেওয়ার জন্য হাত বাড়ালাম। মোবাইল নেওয়ার সময় মনির হাতের সাথে আমার হাত লেগে যায়। আমি তার হাতটা অনুভব করলাম। আমি হাতের তুলনায় মনি আপুর হাতটা অনেক উশ্ন ।  নিজের শরীরের মধ্যে বিদ্যুৎ খেলে গেলো। আমি বললাম।

আমি: আমি যাই। 

মনি: ওকে যা। আগামীকাল তকে যেনো অফিসে দেখতে পাই। 

আমি: জী আপু। 

মনি: অফিসের মধ্যে কিন্তু আপু ডাকিস না । 

আমি: ওকে। 

__আমি চলে আসলাম। গাড়ির আওয়াজ শুনলাম। তারা চলে গেছে। আমি ভাবতে লাগলাম। মনি আপু মনে হয় আমাকে একটু বেশিই কেয়ার করছে। তার কি কোনো কারন আছে। নাকি আবার নতুন কিছু করার ফন্দি করছে। কেনো জানি মনি আপুর জন্য মনের ভিতর নতুন একটা ফিলিংস‌ কাজ করছে। ফিলিংস কাজ করলে কি লাভ হবে। আমার সব কিছু ঘিরেই মাকে নিয়ে। মা যেভাবে চায় সবকিছুই সেভাবে হবে। মা যে মেয়েকে বলবে বিয়ে করতে আমি সে মেয়েকে চোখ বুজেই বিয়ে করবো। আমার আব্বা সেই অনেক আগেই মারা গেছে যখন আমার পনেরো বছর আর এখন 23 চলে মানে আট বছর আগে আমার পিতা মারা গেছে। আট বছরে মা আমাকে তিল তিল করে বড় করেছে। কোনো কিছুর অভাব হতে দেয়নি। যে সময় যেটা চেয়েছি। সে সময় সেটা দিয়েছে। এখন কোনো কিছুর জন্য আমি মাকে কষ্ট দিতে চাইনা। আর কোথায় মনি আপু আর আমি। আমি কি চিন্তা করছি। এখন যেহেতু মনি আপু রাত ১টা  সময় এসে বলে গেছে তার কোম্পানিতে জয়েন করতে। তাহলে অবশ্যই আমি জয়েন করবো। আমি পরদিন অফিসে হাজির হলাম। গিয়ে আমার কাজে মনোযোগ দিলাম। কাজ করতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পর খেয়াল করলাম কে জানি মোবাইল এ কল দিলো। আমি চিন্তে পারলাম এটা রাহাত। 

আমি: রাহাত কি খবর? কেমন আছোস?

রাহাত: ভালো। মামা তুই কোথায় জানি চাকরি করস।

 আমি: জেনি ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড। 

রাহাত: এটা কোথায়? 

__আমি যায়গার ঠিকানা বললাম।

রাহাত: সেই যায়গার আশেপাশে একটা কোম্পানিতে আমি আজ চাকরির ইন্টারভিউ দিতে আসবো। আমি কি এক রাত থাকতে পারবো তর সাথে

আমি: অবশ্যই। 

রাহাত: আমি আগামীকাল আসছি। 

আমি: ওকে এসে কল দিস। 

রাহাত: আচ্ছা। 

__আমি রাহাতের ফোন কেটে দিলাম। ভাবলাম একটা কফি খাওয়া যাক। অফিসের মধ্যে কফি বানানোর মেশিন আছে। যে যার মন ইচ্ছা মতো কফি বানিয়ে খেতে পারে। আমি কফির মেশিনের কাছে গিয়ে কফি বানাতে লাগলাম। এক মেয়ে এসে বললো।

মেয়ে: একটু তাড়াতাড়ি করেন? আমার কাজ আছে। 

আমি: আমিতো আর মেশিন না । আপনি মেশিনকে বলেন তাড়াতাড়ি করতে। 

মেয়ে: না আপনিই তাড়াতাড়ি করেন। 

আমি: আচ্ছা দাঁড়ান আমারটা আপনি নিয়ে যান। 

মেয়ে: আপনি কি সোগার বেশি খান?

আমি: হুম। 

মেয়ে: আমি কম খাই ওকে। এখন তাড়াতাড়ি করেন।
 
__এই বলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে। নিজে যায়গা দখল করে নিলো। আমি এতক্ষন মেয়েটার দিকে না তাকিয়ে কথা বলছিলাম । তাকিয়ে দেখি সারা। আমি ভাবলাম সারা ছাড়া এই কাজ আর কেইবা করতে পারে। ও কন্ঠস্বর চেঞ্জ করে এমন করছে। আমি বুঝলাম এটা ইচ্ছেকৃত আমি বললাম।

আমি: এটা কি করলেন?

__সারা হাঁসি দিয়ে বললো 

সারা: মজা করলাম। এই নে তর কফি । 

__আমি কফি হাতে নিলাম সারা বললো।

সারা: আচ্ছা তুই কি ভাব একটু কম ধরে অফিসে আসতে পারস না। এমন ভাব ধরে আসছ যেনো তুই অফিসের বস আর আমরা কর্মচারী।

আমি: কই আমি ভাব ধরলাম।

সারা: আবারো ভাব ধরিস।
 
আমি: আবার কোথায় ভাব ধরলাম?

সারা: আবারো। 

আমি: রাখেন আপনার ভাব আমি গেলাম। 

__এই বলে আমি হাঁটা ধরলাম। কি ভেবে যেনো পিছনে তাকালাম । পিছনে তাকিয়ে দূই পা আগালাম। সামনে কার সাথে যেনো ধাক্কা খেলাম। ধাক্কা খেয়ে আমার হাতের গরম কফি উনার শরীরে পড়ে গেলো। উনি হকচকিয়ে উঠে আমাকে কষে একটা চড় দিলেন। আমার চশমা পড়ে গেলো। আমি চশমা চোখে দিয়ে বললাম।

আমি: সরি‌ স্যার সরি স্যার। 

স্যার: চুপ বেয়াদব। দেখেশুনে হাঁটতে পারিস না।

আমি: সরি স্যার‌ আমারি ভুল।
 
স্যার: ভুলতো‌ তরি।

__এই‌ বলে তিনি তার শরীর থেকে শার্ট খুলে ফেললেন। দেখি উনার‌ সিক্স প্যাক‌ সেই লেভেলের বডি। অফিসের সকল মেয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইলো। কারণ হ্যান্ডসাম ছেলে । সিক্স পেক। আমিও একটা সময় সিক্স প্যাকের ট্রাই করেছিলাম। পরে অলসতার জন্য আর করা হয়নি। সারা এসে বললো

সারা: সরি সরি স্যার কিছু মনে করবেন না । 

স্যার: কেনো কিছু মনে করবো না। সেতো ইচ্ছা করেই আমার শরীরে কফি ঢেলে দিলো। 

সারা: সরি স্যার। এই তুই দেখে চলতে পারস না। থাবড়াইয়া দাঁত সবগুলো ফেলে দিবো। ঠিক মতো কাজ করবি নাতো চলে যাবি।

আমি: সরি ম্যাডাম।

সারা: আবার আমাকে সরি বলস। স্যারকে বল।

আমি: সরি স্যার । 

__দেখি তার বডিগার্ড গুলো আইসা তাকে নতুন পোশাক পড়িয়ে দিলো। আমি আমার অফিসে চলে আসি। দোষটা আমার ছিলো সেটা আমি মানলাম। কিন্তু সারা আমাকে কি অপমানটাই  না করলো। উনি নিশ্চয় বড় কোনো ব্যাক্তি হবে। সে জন্য সারা তাকে স্যার স্যার বলতাছে। কিছুক্ষণ পর সারা আসলো। আমার এখানে বললো।

সারা: সরিরে তরে অনেক অপমান করছি। কিছু মনে করিস না। উনি আমাদের বিজনেস পার্টনার। ওনাকে  ম্যাডামো খুব সম্মান করে। সে জন্য  সাথে এমন করছি। কিছু মনে করিস না। 

আমি: ওকে সমস্যা নেই। দোষটা আমার ছিলো।‌

সারা: জানি তরে চড় মারছে। কিছু মনে করিস না।
আসলে উনি এমনই। 

আমি: সমস্যা নেই। এসবের সাথে আমার অভ্যাস হয়ে গেছে। ঐদিন মনি আপু মারলো আজকে এক অচেনা ব্যাক্তি এসে মারলো। পরদিন আপনি মারবেন এরপরে অফিসের সবাই আমার শরীরে হাত উঠাবে।

সারা: আমি থাকতে এই অফিসের কেও তর শরীরে ফুলের টোকাও দিতে পারবে না। 

আমি: এটা যদি মনি আপু বলতো। তাহলে বিশ্বাস করতাম ‌।‌ 

সারা: তুই আমাকে বিশ্বাস করিস না। 

আমি: না করি না। 

সারা: শুন ঐ লোকটার সাথে বেশি ঝামেলা করিস না। উনি ম্যাডামের বয়ফ্রেন্ড । উনার যদি কিছু করস ম্যাডাম তকে মেরে ফেলবে। আর তুইতো জানিস ম্যাডাম যেই দিকে আমি সেদিকে ‌। 

আমি: মনে হয় না । এই অফিসে বেশিদিন টিকতে পারবো। 

সারা: পারবি পারবি । আস্তে আস্তে অভ্যাস হয়ে যাবে। 

আমি: সেটা আপনি ঠিক বলেছেন। একটা প্রশ্ন করি

সারা: কর।

আমি: ম্যাডামকে আপনি কি রকম চোখে দেখেন?
 
সারা: আমার কাছে ম্যাডামকে খুব ভালো লাগে। উনি আমার সকল সমস্যা বোঝে। আমিতো নিয়ত করেই ফেলছি ম্যাডামের বিয়ের পর আমি বিবাহ করবো। আর মনে হয় শীঘ্রই বিয়ে করে ফেলবে উনাকে। 

আমি: ওহ ভালো। আপনি কাকে বিয়ে করবেন। আপনাকেতো কেও পছন্দ করবে না। 

__বললাম মুখে হাসি টেনে

সারা: আমাকে বিয়ে করবেনা এরকম মানুষের অভাব। 

আমি: হুম ‌অভাব। যদি আমাকে বলেন তাহলে আমিই রাজি হবো না। 

সারা: তুই রাজি না হলে । তরে কিডন্যাপ করে বিয়ে করবো। 

আমি: কতো শখ। 

সারা: শখেইতো আল্লাহ আল্লাহ কর যাতে কেও আমাকে পছন্দ করে। পছন্দ করলে তুই বেঁচে যাবি। 
নাহলে তর খবর আছে। 

আমি: সেটা দেখা যাবে।

সারা: আমি যাই ‌। 

আমি: ওকে। 

__আমি আর কিছুক্ষন অফিসে থেকে । রুমে চলে আসলাম। পরদিন রাহাত আসলো। সে গিয়ে তার কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিলো। ইন্টারভিউ দিয়ে এসে বললো খুব ভালো হয়েছে রাহাত বললো।
 
রাহাত: দোস্ত আমি মনে হয় চাকরিটা পেয়ে গেছি। এখন বাড়ি চলে যাই। কোম্পানি থেকে মনে হয় দুই একদিনের ভিতর কল আসবে। তখন একেবারে ঢাকা চলে আসবো। তর এখানে থাকার ব্যাবস্থা আছে না।

আমি: আছে । আজকে থাইকা যা।

রাহাত: থাকলেই দেরি হয়ে যাবে আমি গেলাম।
 
আমি: ওকে। ফোন দিস।

রাহাত: আচ্ছা। 

__রাহাত চলে গেলো । রাহাত আসলে ভালই হবে। দুইজন একসাথে মজা করতে‌ পারবো। তিন দিন পর রাহাত আসলো । এসে কোম্পানিতে জয়েন করলো। 
এভাবে এক মাস চলে যায়। 

চলবে.....

পাঠক-পাঠিকারা আমরা তোমাদের জন্য গল্প লেখি।
গল্পের এক পার্ট লেখতে আমাদের ২-৩ ঘন্টা চলে যায় । আর তোমাদের একটা রিয়েক্ট দিতে এক সেকেন্ড লাগবে। তাই কেউ রিয়েক্ট না দিয়ে যাবেন না। আর ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।
ভুল ক্রটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post