গল্পঃ মাফিয়ার শহরে পর্ব ৬

 

#মাফিয়ার_শহরে
#Jahedur_Rhaman_Saikat 
#৬ষ্ঠ_পর্ব

রক্তাক্ত অবস্থায় নিসাতকে দেখে আকাশ ও রাফি দু'জনেই অবাক হয়ে যায়।  কি ভাবলো আজ হয়তো কিছু রহস্যের উদঘাটন হবে,, কিন্তু তা আর হইলো কই?  কে মারলো নিসাত'কে?  তাহলে কি জেনে গেছে আকাশ উদ্দেশ্য?  না তা কি করে হবে।  আজকে নিসাত এর সাথে দেখা করার কথা তো শুধু আকাশ, রাফি আর নিসাত ই জানতো তাহলে কে সেই চতুর্থ ব্যাক্তি? যে তাদের গোপন কথা জেনে গেল?  
কি করে এখন জানবো নিসাত এর না বলা কথাগুলো?  কেন সে এতদিন নিজেকে মৃত বলে দাবি করেছিল?  কি করে জানবো?  মাথা কাজ করছে না,,  সব এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।  রহস্যের মধ্যে আরো রহস্য জুড়ে যাচ্ছে .. কি করে করবো সব রহস্যের উদঘাটন?  
অতঃপর রাফি সেখান থেকে জোর করে নিয়ে আসলো।  যদিও সেখানে রাফির কষ্ট পাবার কথা কারণ চোখের সামনে ভালবাসার মানুষটির মৃত দেহটা দেখে নিজেকে ঠিক রাখা বড় দায় হয়ে উঠে।  কিন্তু আমাদের সব পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে।  বেচেঁ থাকতে হবে।  এগিয়ে যেতে হবে নিজেদের লক্ষ্যে।  সেখানে থাকলে আমাদের চিনে ফেলতো।  হয়তো রাফি সেটা বুজতে পেরে সেখান থেকে আমায় নিয়ে আসে।  আসার আগ মূহুর্তে সিসিটিভি ক্যামেরাটার ফুটেজ নিয়ে আসলাম যাতে কিছু প্রমাণ সংগ্রহ করতে পারি।  

অতঃপর বাসায় চলে আসলাম।  নানাভাইকে কিছু বললাম না, সে যেহেতু জানে নিসাত বেচেঁ নেই তাই আর বললাম না, এমনিতেই রহস্যের জালে ফেঁসে আছি৷ নতুন করে তাকে আর রহস্যে জরাতে চাই না।  রাফি অনেকটা নিশ্চুপ হয়ে গেছে।  আকাশ নিজেই তো সাক্ষী কতটা ভালবাসতো দুজন দুজন'কে, সবই তো ঠিকঠাক ছিল কিন্তু একটা জড় এসে সবকিছু তচনচ করে চলে যায়। 

রুমে গিয়ে ল্যাপটপ'টা নিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ চেক করতে লাগলাম।  যদি কোন প্রমাণ পাই। কিন্তু দু'ভাগ্যে কিছুই পেলাম না। এত এত রহস্যের মাজে নতুন আরেক রহস্য এসে জুড়ে গেল।  আকাশ পারবে তো সবকিছুর সমাধান করতে?  
পূরনো কিছু কথা বারবার আকাশের মস্তিষ্কে কড়া নাড়তেছে। 

........................................................................

মুনালিসাঃ আচ্ছা আকাশ, আমি যদি আপনার সাথে সারাটি'জীবন কাটাতে চাই থাকতে দিবেন তো আমায়?? 

আকাশঃ জীবনটা এত সহজ না মুনালিসা,,  হ্যা এটা ঠিক আমি তোমায় ভালবাসী।  কিন্তু এই অন্ধকার জীবনে তোমার মত একটা নিষ্পাপ জীবন আমি জরাতে চাই না।  তুমি তোমার পরিবারের কাছে ফিরে যাও প্লিজ।  (অনেক কষ্টে কথাটা আকাশের মুখ দিয়ে বের হল।  আকাশ কষ্ট কি সেটা জানে না।  ভালবাসা কি সেটাও জানে না।  আর ভয়?  সেটার সাথে তো সে পরিচিত'ই হয় নি।  কেউ তাকে ভুতের গল্প শুনায় নি।  সে তো নিজের নিয়মে বড় হয়েছে।  তাহলে ভয় সেটা নিতান্তই হাস্যকর আকাশের জন্য,  সে তো এটাও জানে না কে তার বাবা মা?  ভালবাসা তো মুনালিসা তাকে শিখিয়েছে?  তাহলে কেউ কি পারে জেনে বুজে তার ভালবাসার মানুষটাকে মৃত্যুর কুলে ডেলে দিতে?) 

মুনালিসাঃ জানো আকাশ?  আমি না তোমার মতই একজন জীবনসঙ্গি চেয়েছিলাম।  যে নিজের জন্য না অন্যের জন্য বাচবেঁ।  যেদিন তোমায় প্রথম সেই গ্যাং'টার সাথে মারামারি করতে দেখেছিলাম সেদিন থেকেই তোমায় নিয়ে মনের মধ্যে হাজার ও সপ্ন দেখতে শুরু করেছিলাম।  আর আমি না তোমায় একটা মিথ্যা কথা বলেছি.... 
(আকাশ নিশ্চুপ হয়ে মুনালিসার কথাগুলো শুনতেছে।  সে এতটুকু বুজতে পেরেছে মুনালিসা সত্যি তাকে অনেক'টা ভালবাসে নাহলে কি একটা গ্যাংস্টার'কে বিশ্বাস করতে পারতো? ) 

আকাশঃ কি মিথ্যা বলেছো শুনি??

মুনালিসাঃ আমার এই পৃথিবীতে কেউ নেই।  একটা অনাথ আশ্রমে বড় হয়েছি।  সেদিন ভয়ে বলতে পারি নি যদি তুমি এই অনাথকে নিজের কাছে না রাখো। আমায় শুধু তোমার কাছে থাকতে দিবে?  কথা দিচ্ছি শেষ নিশ্বাস অবদি তোমার হয়েই থাকবো।  তোমার বুকে একটু জায়গা দিবে আকাশ?  বড্ড ভালবেসে ফেলেছি তোমায়..! পারবো না তোমায় ছাড়া থাকতে।  একটু জায়গা দিবে প্লিজ..?? ( কথা বলতে বলতে ডুকরে ডুকরে  কান্না করে দেয় মুনালিসা।  তার কান্নার শব্দ যেন আকাশের বুকটা ছিঁড়ে খাচ্ছে। ) 
কিছু বুজে উঠার আগেই মুনালিসাকে নিজের বাহুডোরে আটকে নেয়।  

....................................................................

রাফির ডাকে অতীত থেকে ফিরে আসে আকাশ।  এতক্ষণে তার চোখে পানি চলে এসেছে।   না না ভেঙে পড়লে চলবে না৷ যে করেই হোক আকাশ তকে তোর মুনালিসার খুনিদের খুঁজে বের করতেই হবে।  কেন বারবার ভুলে যাস মুনালিসা তকে বলে গেছিলো কখনো ভেঙে পড়বে না।  আমি সবসময় তোমার পাশেই থাকবো।  কিন্তু আজ সেইতো ফাকিঁ দিয়ে চলে গেল সে?  এতটা নিষ্টুর কি করে হয় মানুষ ?  

রাফিঃ আকাশ ভেঙে পড়িস না,, আমাদের কিন্তু মিশন সাকসেসফুল করতেই হবে ।  আর তুই কি ভুলে গেছিস আমাদের জগতে কখনো ভেঙে পড়তে নিই?  প্রিয়জন বলতে কেউ নেই? 

আকাশঃ হুম।  আজ রাতে আর একটা কাজ করতে হবে।  

রাফিঃ কি কাজ? 

আকাশঃ আজ রাতে আহান এর ভাই মানে মিস্টার শেখর ডাকায় আসছে...আমাদের আজ থেকেই কাজে লেগে পড়তে হবে।  

রাফিঃ কিন্তু নিসাতকে কে মারলো?  তার কোন প্রমান পেলি? 

আকাশঃ সেটাই তো বুজতে পারতেছি না।  কে আমাদের প্লেনটা জেনে গেল?  আর এসবের মাস্টার মাইন্ড কে সেটাও বুজতে পারছি না।  আমার মনে হয়না পিন্সিপাল এইসব একা করতেছে।  তার পিছনে নিশ্চয়ই কেউ না কেউ আছে।  যে কিনা আড়াল থেকে আমাদের উপর নজর রাখতেছে... 

রাফিঃ সেটাইতো খুজে বের করতে হবে।

আকাশঃ হুম।  কে হতে পারে কে হতে পারে?  

রাফিঃ আমাদের কোন পুরনো শএু? নাকি নিসাতকে যারা মেরেছে তারা? 

আকাশঃ সেটাই বুজতে পারতেছি না।  কি করে খুঁজে বের করবো তাদের?  সবকিছু রহস্যময় হয়ে যাচ্ছে। 

রাফিঃ আচ্ছা এখন এসব বাদ দে।  সেটা নাহয় পরে খুঁজে বের করা যাবে।  আজকে তো মনে হয় পিন্সিপাল আসবে তোর আর নীলাদ্রির বিয়ের পাকা কথা বলতে ? 

আকাশঃ তুই জানলি কি করে.?? 

রাফিঃ ন...ন...না...মা....মানে নানাভাই ফোনে কথা বলছিল তখন শুনেছি। 

আকাশঃ তুই এভাবে তুতলাচ্ছিস কেন?  কি হইসে বল আমায়?

রাফিঃ দূর কিছু হয় নি।  

আকাশঃ সত্যি বলছিস তো নাকি কিছু লুকাচ্ছিস আমার থেকে? 

রাফিঃ তুই আমার ছোট্ট বেলার বন্ধু তোর থেকে কি লুকাবো বল?? 

আকাশঃ আচ্ছা ঠিক আছে। তোর কথা বিশ্বাস করলাম। 

রাফিঃ হুম চল একটু বাহিরে থেকে ঘুরে আসি।  সন্ধায় আবার মেহমান আসবে। 

আকাশঃ আচ্ছা তুই বাইক বের কর আমি আসতেছি। 

রাফিঃ আচ্ছা ঠিক আছে।
রাফিকে নিয়ে................



চলবে....................




আজকের পর্বটা মনে হয় সুন্দর করে সাজাতে পারি নি? আজকের পর্বটা  তুলনামূলক ছোট হয়ে যাবার জন্য আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখীত।🙂

🦋কেমন হইসে জানাবেন 🦋 ভুল ক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন 🦋
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post