গল্পঃ ওসির অহংকারী মেয়ে পর্ব ১৬-১৭

 #ওসির_অহংকারী_মেয়ে
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ 
#পর্ব_১৬-১৭

--আকাশ,এই ওসি হেনা কই তাড়াতাড়ি বল?না হয় তোর লাশ বের হবে আজ এই থানা থেকে..

ওসি,ঝাপটি মেরে আকাশের পায়ে পড়ে যায়,আকাশ ভাই আমাকে মাফ করে দেন...

আকাশ,এই ওসি তুই মাফ চাচ্ছিস কেন?
তোর মাফ চাওয়ার কিছুই নাই,আমার শুধু হেনাকে চাই,না হয় তোর আজ কি হাল করবো তুই নিজেও ভেবে পাবি না...

ওসি,আকাশ ভাই প্লিজ আপনি শান্ত হোন,আমি হেনার কাছে নিয়ে যাচ্ছি আপনাকে,থানার সবাই এখনো হা হয়ে তাকিয়ে আছে দুজনের দিকে,ওসি করছে টা কি সামান্য একটা ছেলের পায়ে ধরে বসে আছে,কে এই ছেলে কারোর মাথায় যেনো কোনো কিছু ঢুকছে না,

--ওসি আকাশকে নিয়ে ওর বাড়িতে যায়,
আকাশ,হেনা কই?
ওসি,ভাই ঐ রুমটাতে আছে,


আকাশ,কোনো কথা ছাড়াই রুমের দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকে যায়,তারপর সে দরজা লক করে দেয়,আকাশের তো মাথা ভর্তি রাগ,সে আজ সমস্ত প্রশ্নের উত্তর চাইবে....

হেনা,খাটের উপরে পা মেলে বসে আছে,সে আকাশকে দেখে তো থতমত খেয়ে যায়,এই এই তু তু তুমি?

আকাশ,হা আমি,কেন অন্য কারোর আশার কথা ছিলো নাকি?

হেনা,আকাশ কি সব বলছো উল্টো-পাল্টা?
আর তুমি এখানে কেন এসেছো,প্লিজ চলে যাও এখান থেকে,তোমার সাথে আমার সমস্ত সম্পর্ক বহু আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে,তোমার চেহারাও আমি দেখতে চাই না প্লিজ চলে যাও এখান থেকে...

আকাশের তো মেজাজ গরম হয়ে যায়,সে গিয়ে হেনাকে ধাক্কা দিয়ে খাটের উপরে ফেলে দেয় আর গলা চিপে ধরে,এই মেয়ে তোর কথায় কি আমি এখান থেকে চলে যাবো নাকি?
অনেক কষ্ট দিয়েছিস তুই আমাকে,তোর সাথে হিসাব চুকানো বাকি এখনো আমার,আজ সমস্ত শোধ তুলবো আমি তোর থেকে,ছয়টামাস পুরো পাগল ছিলাম আমি,তোর চিন্তায় আমার রাতের ঘুম পর্যন্ত হারাম হয়ে গিয়েছে,তুই আমার সাথে এমন ধারা ছলনা করলি কি ভাবে,তার জওয়াব আজ তোকে দিতে হবে কুত্তার বাচ্চা,

--আকাশ হেনাকে ছেড়ে দিয়ে কোমর থেকে বেল্ট খুলতে আরম্ভ হয়ে,তোর শরীর থেকে আজ আমি হাড্ডি মাংস আলাদা করে ফেলবো..

হেনাতো ঐ অবস্থায় এই খাটের উপরে জড়োসড়ো হয়ে পড়ে আছে,চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি ঝরছে,কি করনীয় এখন তার কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না..

আকাশ,বেল্ট টা খুলে হাতে নিয়ে হেনাকে ইচ্ছে মত মারতে আরম্ভ করে,হেনা ব্যথার তাড়নায় মুখ চেপে কান্না করছে,আর আকাশের কাছে মিনতি করছে প্লিজ আকাশ আমায় ছেড়ে দাও,আমার খুব কষ্ট  হচ্ছে,কিন্তু নাহ আকাশের ছাড়ার কোনো নাম গন্ধ নাই,সে আজ মানুষ থেকে পশুতে রূপান্তরিত হয়েছে,সে হেনাকে বেল্ট দিয়ে মেরেই চলেছে..

বেল্টের বাড়ির চোটে হেনার শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে ফেটে রক্ত বের হচ্ছে,ঠোঁট তো কেটে রক্ত লাল হয়ে গিয়েছে একদম,হেনার বাবা -মা বাহির থেকে মিনতি করছি প্লিজ আকাশ ভাই আমার মেয়েটাকে ছেড়ে দিন,সে মরে যাবে,

আকাশ,একটা পর্যায়ে সে নিজে কান্না করে দেয় হেনার অবস্থা দেখে,
বিশেষ করে ঠোঁট কেটে রক্ত পড়ছে,আকাশ এটা দেখে চেঁচিয়ে কান্না করে দেয়,হাত থেকে বেলটা ফেলে দিয়ে হেনাকে ঝাপটে জড়িয়ে ধরে,কলিজা তুই এটা কেন করলি,তুই কি জানিস না তুই ছাড়া যে আমার বিশ্বাস নেওয়া পর্যন্ত দায় হয়ে গিয়েছে,তোকে ছাড়া একটা নিশ্বাস নেওয়ার কথা পর্যন্ত চিন্তা করতে পারি না আমি,তোর যদি সত্যি কিছু হয়ে যেতো তাহলে আমি কি ভাবে বেঁচে থাকতাম বল?
কি কারনে তুই আমাকে এতটা কষ্ট দিলি?

হেনাও কান্না করছে আকাশকে জড়িয়ে ধরে,কলিজা এমনটা করেছি বলে আজ তুমি জীবিত আছো,না হয় তোমাকে ও মেরে ফেলতো,তোমার ভালোর জন্যই আমি এমন একটা নাটক করে তোমার থেকে দূরে সরে গিয়েছি,কারন তোমার ক্ষতি হোক এটা আমি চাই না,দরকার হয় দূর থেকে ভালোবাসবো,তাও তোমার ক্ষতি হতে দেই কি করে বলো,

আকাশ,হেনা তুমি কি বলছো আমার তো কিছুই ঢুকছে না মাথায়,কিসের ক্ষতির কথা বলছো,আর আমাকে কে মেরে ফেলতো...?

হেনা,চুপ করে আছে....

আকাশ,প্লিজ হেনা বলো,এভাবে চুপ করে থেকো না,
কে আমায় মারতে চায়,যার জন্য তুমি আমার থেকে এতদূরে সে গিয়েছো?

হেনা,আকাশকে ছেড়ে দিয়ে শুনো তাহলে,তোমাকে শুরু থেকে সমস্তটা বলি,আরু তোমায় মেরে ফেলতে চায়!

আকাশের তো হুঁশ এই উড়ে যায় হেনার কথা শুনে,কি বলছো হেনা এটা কি করে সম্ভব,আর আরুই বা আমাকে কেন মারতে চাইবে...

হেনা,কারন তুমি জাফর ইকবালের নাম শুনেছো,জিনি বাংলাদেশের টপ বিজনেসম্যান ছিলো একটা সময়,যাকে তোমার বাবা টক্কর দিয়ে ১ম পজিশন দখল করেছে?

আকাশ,হা চিনি কিন্তু উনার সাথে আরুর সম্পর্ক কি?
আর জাফর ইকবাল তো মারা গিয়েছেন....

হেনা,আরু কে জানো?
আরু হচ্ছে জাফর ইকবাল সাহেবের মেয়ে,সে তোমার উপরে প্রতিশোধ নিতে চায়...

আকাশের তো চোখ বড় বড় হয়ে যায় হেনার কথা শুনে,
কিন্তু কেন?আমি ওর কি ক্ষতি করেছি?

হেনা,তুমি ক্ষতি করোনি,কিন্তু তোমার বাবা করেছে,জাফর ইকবাল সাহেব দীর্ঘ বহু বছর দেশের মধ্যে টপ বিজনেসম্যান এর তালিকায় ছিলো,যাকে তোমার বাবা হারিয়ে দিয়ে ১ম পজিশন দখল করে,এটা জাফর ইকবাল সাহেবের সহ্য হয়নি,তিনার থেকেও শীর্ষে কেউ পৌঁছে গেছে এটা তিনি মানতেই পারেন নি,যার কারনে তিনি ডিপ্রেশনে চলে যায়,পরে একটা সময় দেখা যায় তিনি অতিরিক্ত ডিপ্রেশনে যাওয়ার ফলে হার্ট এটাক করে মারা যায়,উনার বাসার সবাই জানতো উনার পজিশন অন্যকেউ দখল করার ফলে তিনি ডিপ্রেশনে চলে যায়,আর তার থেকে হার্ট এটাক করে,তাই তিনার বড় মেয়ে আরু শপথ করে যাদের কারনে উনার এই অবস্থা হয়েছে,তাদের কাউকে শান্তি দিবে না সে...

জাফর ইকবাল সাহেবের মৃত্যুর জন্য সবাই তোমার ফ্যামেলিকেই দায়ী করছিলো,তাই আরু কাজে নেমে পড়ে তোমাদের জীবন থেকে সুখ নামক বস্তুটাকে মুছে দিতে,আরু বহু আগে থেকেই সুযোগ খুঁজলিছো যে তোমাদের জীবন থেকে সুখ কি ভাবে কেড়ে নিবে,কিন্তু কোনো ভাবেই তার চিন্তাধারাকে বাস্তবায়ন করতে পারছিলো না,এমন সময় মুরগী নিজে গিয়ে ধরা দেয়,আর সেই মুরগী হচ্ছো তুমি,আরু যেই কলেজে পড়ে তুমি নিজেই সেই কলেজে গিয়ে ভর্তি হলে,তারপর কি আর ব্যছ আরু কাজে নেমে পড়লো তোমার পিছনে,সে চেয়েছিলো তোমাকে পটিয়ে তোমার ঘরের মধ্যে প্রবেশ করবে,আর তোমার পরিবার থেকে সুখ কেঁড়ে নিবে,সে তোমাকে কাবু করার আগেই তোমার সাথে আমার সম্পর্ক হয়ে যায়,এটা সে কোনো মতেই মানতে পারছিলো না,পরে সে লোক দিয়ে আমাকে জিম্মি করে,আর বলে আমি যদি তোমার জীবন থেকে দূরে সরে না যাই সে তোমাকে মেরে ফেলবে,এটা শুনে আমি ঘাবড়ে গিয়েছিলাম,আর যখন জানলাম সে জাফর ইকবাল সাহেবের মেয়ে,তারপর তো আমার ভয়ের মাত্রা আরো বেড়ে গেলো,তখন আমি তাকে বলেছি যে আমি তোমার জীবন থেকে সরে যাবো,কিন্তু সে তোমার আর তোমার পরিবারের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না,সে তো তোমার জীবন থেকে ভালোবাসা নামক সুখটা কেঁড়ে নিয়েছেই,তাহলে তার আর কি চাই,তবে তোমার আচার-ব্যবহার দেখে তোমার উপর থেকে তার ক্ষোভ টা কমে যায়,তাই সেও আমার সর্তে রাজি হয়ে যায়,

সে আমায় কথা দিয়েছিলো,যে তোমার কোনো ক্ষতি সে করবে না,
তাই তোমার থেকে দূরে সরে গিয়েছিলাম,কিন্তু আমি জানি তুমি আমায় কখনো দূরে যেতে দিবে না,তাই মৃত্যুর নাটক করি বাবা-মার সাহায্য নিয়ে,যাতে করে তুমি আমায় একদম ভুলে যাও,কারন কলিজা তোমার কোনো ক্ষতি হোক সেটা আমি মরে গেলেও চাই না,তবে আরুও ভাবতে পারে নাই আমি এমন কিছু করে বসবো,
আরু ধরে নিয়েছে আমি মরে গিয়েছি,তাই সে তোমার থেকে দূরে সরে যায়,কারন প্রতিশোধ সে নিয়ে ফেলেছে তোমার জীবন থেকে আমাকে একদম চিরতরে সরিয়ে দিয়ে,

আকাশের তো কান্নায় চোখ গুলো ঘোলাটে হয়ে আসছে হেনার কথা শুনে,হেনা তুমি আমার ভালোর জন্য এতকিছু করলে,আর সেই আমিই তোমাকে না জেনে  বেরেহেম ভাবে বেল্ট দিয়ে মারলাম,
কলিজা আমায় মাফ করে দাও..?

হেনা,এই আকাশ কি বলছো এই সব,প্লিজ এভাবে বলো না আমার খুব কষ্ট হয়,
আকাশ,সাথে সাথে হেনাকে ঝাপটে ধরে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে নেয়,আর বলে কলিজা এই দুনিয়ায় আমার থেকে তোকে কেউ আলাদা করতে পারবে না,তুই শুধু আমার আর কারোর না,তোর সমস্ত কিছুর উপরে শুধু আমার অধিকার আছে,আর কারোর কোনো অধিকার নাই,দুজনেই কান্না করছে,তবে হা এটা কোনো দুঃখের কান্না না,এটা শুখের কান্না...

--তবে ভিতরে ভিতরে আকাশের ক্ষোভ জন্ম নিয়ে নিয়েছে,সে আরুর   বারোটা বাজিয়ে ছাড়বে,আরু তুই খালি ওয়েট কর,তুই আমার জীবনের সুন্দর দিনগুলো নষ্ট করেছিস,আমার জীবন থেকে সুখ কেঁড়ে নিতে চেয়েছিস,এবার আমি তোর রুহু টাই শরীর থেকে বের করে ফেলবো....

চলবে...?

ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমার নজরে দেখবেন....! 
গল্পটা প্রায় শেষের পথে.....

যারা যারা এখনো আমার গ্রুপে জয়েন করেন নাই,সবাই জয়েন করে নিন....
https://www.facebook.com/groups/2837664109643809/?ref=share

#ওসির_অহংকারী_মেয়ে

#লেখক_আকাশ_মাহমুদ 
#পর্ব_১৭_এবং_শেষ

--আকাশের ভিতরে ক্ষোভ জন্ম নিয়ে নিয়েছে,সে আরুর বারোটা বাজিয়ে ছাড়বে,আরু তুই খালি ওয়েট কর,তুই আমার জীবনের সুন্দর দিন গুলো নষ্ট করেছিস,আমার জীবন থেকে সুখ কেঁড়ে নিতে চেয়েছিস,এবার আমি তোর রুহুটাই শরীর থেকে বের করে ফেলবো...

আকাশ,হেনাকে ছেড়ে দিয়ে ওকে কোলে তুলে নেয়,চলো আমার সাথে,আজকের পর তোমাকে এক মিনিটের জন্যেও চোখ থেকে আড়াল করবো না..

--আকাশ,হেনাকে কোলে করে নিয়েই রুম থেকে বের হয়,হেনাও আকাশকে জড়িয়ে ধরে ওর কোলের মধ্যে ছোট বাচ্চার জড়োসড়ো হয়ে আছে,আকাশ রুম থেকে বের হতেই হেনার বাবা আকাশের পায়ে পড়ে যায়..

--ভাই আপনি আমার মেয়েটাকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছেন?
ভাই আপনার পায়ে পড়ি,আমার মেয়েটার কিছু করবেন না,ওর কিছু হলে আমরা মরে যাবো...

আকাশ,এই ওসি একদম চুপ,আমার বউকে আমি নিয়ে যাচ্ছি,হেনাকে আমি আর এক সেকেন্ডের জন্যেও নিজের থেকে আড়াল করবো না,ওকে আমি বিয়ে করে সারাজীবন আমার বাসার বউ করে রেখে দিব,অনেক সাধনার পর ওকে আমি ফিরে পেয়েছি..

--হেনার আব্বু,আকাশের পা ছেড়ে দেয়,কারন তিনি কিছু একটা লক্ষ্য করেছে,আকাশ কথা বলার সময় তার চোখের মধ্যে পানি টলমল করছিলো,তিনি বুঝে গেছেন যে আকাশের মত ভালো আর কেউ বাসতে পারবে না হেনাকে,সে নিজের জীবন দিয়ে হলেও হেনাকে রক্ষা করবে,

আকাশ,হেনাকে কোলে করে নিয়েই ঘর থেকে বের হয়ে পড়ে,
পরে সিএনজি একটা ঠিক করে সোজা হোটেলে চলে যায়,আর যাদের সাথে মিটাপ করেছিলো,তাদেরকে সে থানার সামনে থেকেই বিদায় করে দেয়,কারন হেনার বাসায় সবাইকে নিয়ে আসা সম্ভব না,হোটেলে পৌঁছেও হেনাকে সে কোল থেকে নামায় না,হোটেলের সবাই তো মুচকি মুচকি হাসছে আকাশের অবস্থা দেখে,কিন্তু আকাশের এতে কিচ্ছু আসে যায় না,সে তার বউকে কোলে উঠিয়েছে....

--হেনাকে কোলে করে নিয়ে নিজের রুমে যায়,নুসরাত তো আকাশকে দেখে অবাক,কারন তার কোলের মধ্যে মেয়েটা কে,

https://www.facebook.com/groups/2837664109643809/?ref=share

নুসরাত,স্যার মেয়েটা কে?
আকাশ,তোমাদের ভাবি...

নুসরাত,ভেবাচেকা খেয়ে যায় আকাশের কথা শুনে,স্যার ভাবি মানে?
আকাশ,ভাবি মানে ভাবি,আজ কালের মধ্যে আমার বিয়ে করবো😊

নুসরাতের তো মাথায় ঢুকতেছে না,আকাশ হুট করে কাকে ধরে নিয়ে এসে ভাবি বলছে🤔

আকাশ,নুসরাত সব গুছিয়ে নাও আজকেই আমরা ফিরে যাচ্ছি,
তারপর আকাশ তিনটা টিকেট কনফার্ম করে,সেদিন এই আকাশ হেনাকে নিয়ে ওর শহরে ফিরে যায়,আকাশের বাসার সবাই তো অবাক হেনাকে দেখে,যদিও অবশ্য তারা আগে কখনো হেনাকে দেখে নি,কিন্তু আকাশ তাদেরকে ছবি দেখিয়েছিলো....

--আকাশের আম্মু,আকাশ হেনা না মরে গিয়েছে?
তাহলে সে ফিরে আসলো কি করে?

আকাশ,আম্মু তার পিছনে অনেক লম্বা ইতিহাস,এমন সময় আকাশের আব্বু আসে,
--কিসের ইতিহাস? 

আকাশ,তারপর সমস্ত কিছু খুলে বলে,আকাশের আব্বু তো শুনে পায়ের রক্ত মাথায় উঠে যায়,কিহহহ জাফর ইকবালের মেয়ে এমন কাজ করেছে,ওয়েট দ্বারা আমি খবর লাগাচ্ছি,ওদের বারোটা বাজিয়ে ছেড়ে দিব,

আকাশ,না বাবা প্লিজ তুমি এমন কিছুই করো না,যা করার আমি করছি,সে আমাকে কষ্ট দিয়েছে,আমার প্রতিশোধ আমিই নিব,আর তোমরা বিয়ের ব্যবস্থা করো!

আকাশের আব্বু,ওকেহ তোর যেমনটা ভালো লাগে সেটাই কর,
আকাশ,লোক লাগিয়ে দেয় জাফর ইকবাল সাহেবের বাড়ির খোজ নিতে,
একটু পর খবরি ফোন দিয়ে জাফর ইকবাল সাহেবের বাড়ির সমস্ত ডিটেইলস দেয়,আরু যেই বাসাটা দেখিয়েছিলো আগে,সেটা যদি হতো তাহলে সে মিনিটের মধ্যেই আরুক বের করে ফেলতো,কিন্তু আরু তো সেই শহর ছেড়ে অন্য কোথাও চলে গিয়েছে....

আকাশ,হেনা তুমি থাকো আমি একটু আসছি,সে ল্যাম্বারঘিনিটা নিয়ে টান দিয়ে সোজা জাফর ইকবাল সাহেবের বাড়িতে চলে যায়,সেখানে গিয়ে দেখতে পায়,একটা বয়স্ক মহিলা বাড়িতে,এই যে আন্টি আরু কোথায়?

--বাবা তুমি কে আরুর বন্ধু হয়তো,ওহ তুমি কি ওকে দেখতে এসেছো?
কিন্তু সে তো এখানে নাই...

আকাশ,মানে? তাহলে সে কোথায়?

--কেন বাবা তুমি জানো না,সে যে আজ একমাস যাবৎ ব্লাড ক্যান্সার হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঙ্গা নড়ছে?

আকাশের তো পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যায়,আন্টি কি বলছেন আপনি?
-- হা বাবা,আজ একমাস ধরে আমার মেয়েটা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা নড়ছে,জানিনা কার বদদোয়া লেগে এমন হয়েছে,কোন পাপের ফল সে ভোগ করছে,বাবা জানো আমার মেয়েটা ছাড়া আমার আর কেউ নাই,ছোট মেয়েটা থেকেও না থাকার মত,সে নিজকে সামলাতে কষ্ট হয়ে যায়,আমাকে সামলাবে কি করে,উনি বলতে বলতেই কান্না করে দেয়...

আকাশের চোখ দিয়ে ঝরঝর করে পানি ঝরছে,আরুর উপর থেকে সমস্ত রাগ মিনিটের মধ্যেই উধাও হয়ে যায়,আর সে বুঝতে পারে বয়স্ক মহিলাটাই আরুর আম্মু,আন্টি আপনি প্লিজ কান্না করবেন না,আরুর কিচ্ছু হবে না,যত ভালো চিকিৎসা লাগে আমি ওকে করাবো,ওর কিচ্ছুই হবে না,আপনার মেয়েকে আমি আপনার কোলে ফিরিয়ে দিব,

আকাশ,আরুর আম্মুর থেকে ঠিকানা নিয়ে হসপিটালে চলে যায়,সেখানে গিয়ে দেখে আরু একটা বেডের উপরে শুয়ে আছে,ওর মুখে মাক্স লাগানো,তার কেবিনের বাহিরে লিখা ভিতরে প্রবেশ নিষেধ,
তাও আকাশ ডাক্তার থেকে অনেক কষ্টে অনুমতি নিয়ে কেবিনের ভিতের যায়,আরুকে দেখে আকাশের বুক ফেটে কান্না আসছে,আকাশ আরুকে ডাক দেয়,এই আরু উঠ?
দেখ আমি এসে গেছি,দেখ তোর বন্ধু আকাশ এসে গেছে,কিন্তু আরুর  কোনো সারা শব্দ নাই,এই আরু তুই কি আমার সাথে কথা বলবি না,সেই যে আমাকে ছেড়ে চলে এসেছিস,তারপর তোর আর কোনো খোঁজ এই পায়নি রে আমি...

আরু,আস্তে আস্তে চোখ মেলার চেষ্টা করছে,সে চোখ খুলে দেখে আকাশ তার সামনে বসে আছে,আরুর চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি ঝরছে,আরু আকাশকে ঈশারায় বলে মুখ থেকে মাক্সটা খুলে দিতে,আকাশ তাই করে,মুখ থেকে মাক্সটা খুলে দেয়...

--আকাশ তুই এসেছিস?
আমি জানতাম তুই আসবি,কারন তোকে না দেখলে যে আমি মৃত্যুর স্বাদ কখনোই ভোগ করতে পারবো না,তোকে যে অনেক কষ্ট দিয়েছি আমি,বিধাতা যে তোর কাছে মাফ না চাইয়ে আমাকে মৃত্যুর স্বাদ ভোগ করাবে না,আকাশ প্লিজ আমায় মাফ করে দিস রে?
তোর জীবন থেকে সুন্দর সময় গুলো আমি কেঁড়ে নিয়েছি,তোর ভালোবাসার মানুষটা যে আমার জন্য নিজেকে শেষ করে দিয়েছে,পাপ করতে করতে পাপের বোঝা ভাড়ি করে ফেলেছি আমি,বাবার মৃত্যুর জন্য তোদেরকে দায়ী করে তোর জীবন থেকে শান্তি নামক বস্তুটা কেঁড়ে নিয়েছি,
কিন্তু বিশ্বাস কর এখন উপলব্ধি করতে পারছি,যে কারোর মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী থাকে না,উপর ওয়ালার যখন হুকুম থাকে তখনি তার মৃত্যু হয়,আমি জানি না তোর কাছে কি ভাবে মাফ চাইলে তুই আমাকে ক্ষমা করবি,কিন্তু বিশ্বাস কর তুই যদি আমায় মাফ না করিস,তাহলে উপরে গিয়েও শান্তি পাবো না🙂

আকাশ,এই পাগলি মেয়ে এই সব কি বলছিস উল্টা-পাল্টা?
তোর উপরে আমার কোনো রাগ এই নাই,আমি সমস্ত কিছু ভুলে গিয়েছি,আর হেনা মরেনি,সে ফিরে এসেছে,সে তোর কথায় আমার থেকে দূরে সরে গিয়েছে এমন একটা নাটক করে,আর এখন সমস্ত কথা বাদ,তোকে আগে সুস্থ হতে হবে...

আরু,আকাশ আমার হাতে যে আর সময় নাই রে,সুস্থ হয়েও কি করবো?

আকাশ,এই মেয়ে একদম চুপ,তোর কিচ্ছু হবে না,তোর কিচ্ছু হতে পারে না,আমি তোকে বাহিরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করবো,

আরু,আকাশ প্লিজ এমনটা করিস না,কোনো লাভ হবে না এতে,উল্টো বরো তোর খরচ হবে...

আকাশ,আরু একদম চুপ থাকতে বলেছি তোকে,আর একটা কথাও বলবি না তুই,আকাশ সাথে সাথে ওর বাবাকে ফোন করে,বাবা আজকেই ইন্ডিয়ার তিনটা টিকিট কাটো তো বিমানের?

--কেন তুই ইন্ডিয়ার টিকিট দিয়ে কি করবি?

আকাশ,বাবা হাতে এত সময় নেই,বেশি কিছু বলতে পারবো না,সময় হলে সব বলবো,হেনাকে রেডি থাকতে বলো,আমি এসে ওকে নিয়েই রওনা দিব...

--আচ্ছা আমি টিকেট কেটে রাখছি,আর হেনাকেও বলছি,
আকাশের আব্বু তৎক্ষনাৎ তিনটা টিকেট কেটে রাখে ইন্ডিয়ার,
আকাশ,আরুকে হসপিটাল থেকে রিলিজ করে ছাড়িয়ে নিয়ে ওর সাথে করে বাসায় নিয়ে যায়,পরে বাসা থেকে হেনাকে সাথে নিয়ে ইন্ডিয়ার উদ্দেশ্য ফ্লাইটে করে রওনা দেয়,আরুকে মাদ্রাজ নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাবে

 আকাশ,সেখানে যাওয়ার পর সেখানকার ডাক্তাররা বলে যে অনেক দেরি হয়ে গেছে,তবে শেষ একটা চিকিৎসা করা যেতে পারে,যদি ৪ সাপ্তাহ ডায়ালাইসিস করানো যায় তাহলে রুগি সুস্থ হয়ে যাবে,আর যদি এর আগে কিছু হয়ে যায় সেটা উপর ওয়ালা জানেন...

আকাশ,নাহ তাহলে সেটাই করান,আরুকে ডায়ালাইসিস করানো হয়,এভাবে পর,পর চারবার ডায়ালাইসিস করানো হয়,কিন্তু আরুরু কিচ্ছুই হয় নি আল্লাহর রহমতে,বরং সে মোটামুটি সুস্থ হয়ে উঠেছে,আকাশ আরুকে নিয়ে দেশে ফিরে,আরু এখন মোটামুটি সুস্থ,

আরু হেনা থেকে মাফ চেয়ে নেয়,প্লিজ হেনা আমায় মাফ করে দিস,আমি যাদের ক্ষতি করেছি,তারাই আমার জীবন বাঁচিয়েছে..😓

হেনা,এই আরু পাগলামো কেন করছিস,তুই জানিস না বন্ধুদের মধ্যে সরি টরি এসব কিছুই চলে না...
শোন আমি সব ভুলে গিয়েছি,এখন থেকে তুই আমার বান্ধবী না খালি,তুই আমার বোন ও,সো মাফ টাফ ভুলেও চাইবি না গরম হয়ে😡

আরু, আচ্ছা😁

--দেশে আসার কিছুদিন পর আকাশের আব্বু-আম্মু আকাশের আর হেনার বিয়ের ডেট ফিক্সড করে,
তারপর ওদের বিয়ে হয়ে যায়,আকাশের আর হেনার বিয়ের সমস্ত কিছু আরুই প্লানিং করে,কি ভাবে কি করবে,

তিনজন একটা পরিবারের মত হয়ে গিয়েছে,
আজ আকাশ আর হেনার বিয়ে হয়েছে এক বছর হতে চললো,
হেনা মা হতে চলেছে,সবাই তো মহাখুশি,বিশেষ করে আকাশের বাবা -মা,যে তাদের বংশের প্রদীপ আসতে চলেছে,হেনার বাবা-মাও এসেছে হেনাকে দেখতে,আকাশের কেন জানি হেনার বাবার প্রতি অন্য রকম একটা ঘৃণা কাজ করে,কারন লোকটার আগের চরিত্রের কথা এখনো সে ভুলতে পারেনি,তাও সমস্ত কিছু ভুলে আপন করে নিয়েছে,সেটা করতো না অবশ্য,সেটা করেছি খালি একমাত্র হেনার মুখের দিকে চেয়ে,

আরু তো মহাখুশি যে হেনার বেবি হতে চলেছে,
এই হেনা তোর তো ছেলে হবে তুই জানিস?

হেনা,আরু তুই কি করে জানলি রে?🤔
আরু,কারন আমার তো বিএফ নাই বর ও নাই😒
তাই তোর ছেলে হবে,আর আমি তোর ছেলের সাথে চুটিয়ে প্রেম করবো😁

হেনা,আল্লাহরে আল্লাহ😲
শয়তানকেও হাড় মানাবি তুই😂

এমন সময় আকাশ অফিস শেষ করে বাড়ি ফিরে,
এই যে দুইজনের মধ্যে কি ফুসুরফাসুর চলছে শুনি?🤔

হেনা,শুনবা কি ফুসুরফাসুর চলছে,এমন সময় আরু হেনার মুখ চেপে ধরে,এই হেনা প্লিজ বোন না আমার বলিস না🥺

হেনা,মুখ থেকে আরুর হাত ছাড়িয়ে নিয়ে,এই যে আমার নাকি ছেলে হবে,আর তার সাথে আরু নাকি চুটিয়ে প্রেম করেব,ওর নাকি কেউ নাই😀

আকাশ,ওহহহ এই কথা😲
দ্বারা বদমাইশ মেয়ে তোর বিয়ের ব্যবস্থা করছি,
এভাবেই  হাসিখুশি ভাবে চলতে থাকে দিনকাল,
কিছুদিন পর আরুর বিয়ের দিন তারিখ পাকা হয়,
পাঠক ভাইরা আপনারা সবাই আইসেন কেমন?

এভার ভাগেন 😐

সমাপ্তি....!
পুরো গল্পের মাঝে যত রকম ভুল ত্রুটি হয়েছে,সবাই সেগুলোকে ক্ষমার নজরে দেখবেন.....! 

আবার দেখা হচ্ছে কোনো এক নতুন গল্পের সাথে,
এ পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন..
সুস্থ থাকবেন...

খোদা হাফেজ....!


Post a Comment (0)
Previous Post Next Post