ইসলামিক গল্প হুজুরের বউ | গল্পঃ হুজুরের হুজরানী ৬য় পর্ব

 ইসলামিক গল্প হুজুরের বউ | গল্পঃ হুজুরের হুজরানী  ৬য় পর্ব

ইসলামিক গল্প হুজুরের বউ | গল্পঃ হুজুরের হুজরানী  ৬য় পর্ব

#হুজুরের_হুজরানী

#_৬য়_পর্ব
,
বাসায় এসে শুয়ে আছি এমন সময় ফোন টা বেজে উঠলো দেখলাম ইমনের নাম্বার 
শোয়া থেকে উঠে ফোন টা রিসিভ করে ওর কথা শুনে আমি আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না বিছানায় বসে পরলাম 
ইমন কান্না করছে আর বলছে
,
ইমন,, কাঁদতে কাঁদতে শুভা বিষ খেয়েছে বিষটা খুব মারাত্মক ধরনের তাই ডাক্তার বললেন মনে হয় বাঁচবে না 
,
আমি,, কি ভা ভাবে হলো( তুতলাতে তুতলাতে)
,
আসলে ও এমন করবে আমি কল্পনা করতে পারিনি আর নিজেকে আজ বড় অপরাধী মনে হচ্ছে কিন্তু আবার ভাবলাম আমার কিসের দোষ আমি তো কিছু করিনি
,
ইমন,, কি ভাবছিস
,
আমি,, কিভাবে কি হলো
,
ইমন,, ওর মা-বাবার অনেক ভেঙ্গে পড়েছেরে একমাত্র মেয়ে, আসলে ঐদিনের পর থেকে ও ঘর থেকে বের হয়নি কিছু খাইনি আজ অদ্ভুত ধরনের কিছু শব্দ আসছিলো ঘরের ভিতর থেকে পরে দরজা ভেঙ্গে দেখি ও মাটিতে গড়াগড়ি করছে
আর ও বিষ খাওয়ার আগে একটা চিঠি লিখেছে
,
,
আমি,, তুই চিঠির একটা পিক তুলে এখনি পাঠিয়েদে
,
ইমন,, আচ্ছা পাঠিয়ে দিচ্ছি 
,
আমি,, এখনি পাঠা আর কি হয় আমাকে জানাষ আমি এখন রাখিরে
,
ইমন,, আচ্ছা 
,
,
কিছু ক্ষন পর একটা মেসেজ আসলো দেখি ইমন চিঠির ছবি তোলে ই-মেল পাঠিয়ে দিয়েছে যাতে ছবিটা ক্লিয়ার আসে

চিঠিতে লেখা ছিলো
,
প্রিয় আব্বু আম্মু আমাকে ক্ষমা করে দিও।
জানি আমাকে ছাড়া তোমাদের কষ্ট হবে কিন্তু আমি আর পারছি না 
জানিনা এতো অল্প সময়ে কি করে এতো ভালোবেসে ফেলেছি 
ওকে ছাড়া আমি বাঁচবো না ভেবেছিলাম আমার ভালোবাসা দিয়ে ওর মন জয় করতে পারবো কিন্তু জানতাম না ও আমাকে এতোটা ঘৃণা করে 
আর যখন বললো আমি নাকি জাহান্নাম আমি নাকি জাহান্নামের আগুন

তখন আমি মরে গেছি আমার যত বার জীবন ফিরে পাবো ততবার ওই কথাটা মনে পরলে এই জীবন দিয়ে দিবো আচ্ছা আব্বু আম্মু আমি কি এতোই খারাপ 
তোমাদের কাছে একটি অনুরোধ ওকে আমার মৃত্যুর খবর টা জানিও না আর এতে ওর কোন দোষ নেই ওকে কিছু বলো না ও সুখে থাকলে আমি সুখি অনেক ভালোবাসি ওকে যা কোন দিন বুঝতে পারবো না আব্বু আম্মু আমাকে ক্ষমা করে দিও,
ইতি
তোমাদের আদরের শুভা
,
,
চিঠি পরছি আর কেমন জেনো নিজের অজান্তেই দুচোখ দিয়ে পানি পরছে নিজেকে আজ বড় অপরাধী মনে হচ্ছে
,
,
কি করবো বুঝতে পারছি না ওয়াস রুমে গিয়ে অজু করে দুই রাকাত নামাজ আদায় করলাম
আল্লাহর কাছে দুহাত তুলে চোখের পানি দিয়ে মুনাজাত করলাম

হে আল্লাহ একোন ইমানি পরিক্ষায় ফেললে আমাকে আমার কি দোষ ছিলো আমি তো তোমার আদেশ মেনে চলেছি কিন্তু কি দোষে এতো বড় শান্তি দিচ্ছ ও যদি মরে যায় আমি নিজেকে জীবনেও ক্ষমা করতে পারবোনা আমি যে অপরাধী হয়ে গেলাম আমি তো তোমার আদেশ মেনে চলেছি ওর সাথে কোনপ্রকার সম্পর্কে জরায়নি আমার জন্য হলেও ওকে বাঁচিয়ে দাও না হয় আমি সারা জীবন নিজেকে অপরাধী মনে করবো তোমার কাছে এতদিন আমি কিছু চাইনি আমার এই চাওয়া টা পূরন করো এই বলছি আর কাঁদছি অঝোরে কাঁদছি কেনো জেনো কান্না থামাতে পারছিনা এমন সময় দরজায় নক করার শব্দ শুনলাম তাড়াতাড়ি মুনাজাত শেষ করে চোখের পানি মুছে দরজা খুললাম দরজা খুলতে দেখি আম্মু দরজার বাহিরে 
,
আম্মু,, কিরে তুই এইভাবে কাঁদছিস কেনো 
,
আমি,, কোই না তো কাঁদবো কেনো
,
আম্মু,, নিজের মায়ের কাছে কথা লুকাচ্ছিস 
,
আমি,, আরে মা লুকাবো কেনো
,
আম্মু,, আমি তোর রুমের বাইরে থেকে স্পষ্ট কান্নার শব্দ শুনলাম আর তোর খালা আমাকে ফোন করে সব বলেছে
,
,
আমি,, আম্মু নিজেকে আজ বড় অপরাধী মনে হচ্ছে কি করবো বুঝতে পারছি না
,
,
আম্মু,, আমি জানি আমার ছেলে কখনো ভুল করতে পারে না সব ঠিক হয়ে যাবে চিন্তা করিস না হাতমুখ ধুয়ে আয় তোকে কিছু খেতে দেয় এখন চিন্তা বাদ দে আল্লাহ উপর ভরসা কাখ সব ঠিক হয়ে যাবে
,
,
আমি,, তাই যেনো হয় আম্মু তুমি যাও আমি আসছি 
খাওয়া দাওয়া করে একটু বাহিরে গেলাম বন্ধুরা মিলে অনেক ঘুরাঘুরি করলাম অনেক দিন পর এলাকায় আসছি ইশার নামাজ পড়ে বাসায় গেলাম খাওয়া দাওয়া করে রাতে আব্বু আম্মু সাথে অনেক আলাপ করলাম আব্বু বললো আমরা জানি আমার ছেলে কোন ভুল সিদ্ধান্ত নিবে না তাই যা করবি আমরা তোর পাশে আছি 
,
,
ফোন রুমে ছিলো চার্জে হটাৎ করে ফোন বাজছে আমি রুমে যাওয়ার আগেই ফোন টা কেটে গেলো 
দেখি ইমনের নাম্বার কল ব্যাক করলাম কিন্তু ও যেটা বললো নিজের কানে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না শুধু দুচোখ দিয়ে বরফ গলা নদীর মত পানি বেঁয়ে পরছে 
চলবে......
,
,
আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি বেশি বড় করতে পারলাম না
,
Next part চেষ্টা করবো দোয়া করবেন
,
,
(ভুল ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন)
,
,
,
জাযাকাল্লাহ খইরান,,, 

💕❤️হুজুরের💞হুজরানী❤️💕

#_৭য়_পর্ব

রুমে এসে দেখলাম ইমনের নাম্বার কল ব্যাক করলাম  
আমি,, বল কি অবস্থা শুভার
,
,
ইমন,, ডাক্তার বলেছেন ভয় নেই তবে এখনো জ্ঞান ফিরেনি কারন বিষ টা খুব মারাত্মক তাই ভিতরে ঘা হয়ে গেছে তবে চিন্তার কোন কারন নাই
চিন্তার কারণ একটাই চিঠির কথা মত ও যদি জ্ঞান ফিরার পরে কিছু করে বসে 
,
,
আমি,, চিন্তা করিস না আমি দেখছি কি করা যান
,
,
ইমন,,আচ্ছা
,
,
ও ফোন রেখে দেবার পর আমি চিন্তা করতে লাগলাম
,
,
 কি করা যায় আমার মাথায় কিছু আসছে না বুঝলাম এই সময় আমার বুদ্ধি দিয়ে কিছু হবে না
,
,
 তাই ফোন দিলাম বড় হুজুর কে মানে আমাদের মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক,
,
হুজুর  বললেন দেখো বাবা এখনো তোমার লেখা পড়া শেষ করলে নিম্ন ৩/৪ বছর লাগবে এখন আবার সামনে তোমার গুরুত্বপূর্ন একটা পরিক্ষা এখন কোন সিদ্ধান্ত নিলে তোমার জীবন শেষ হয়ে যাবে,
,
,
 আর মেয়েটা অনেক পাগলামী করছে তুমি ও জ্ঞান ফিরলে হসপিটালে যাও ওকে একটু বুঝিয়ে আসো  আবেগে পরে যে কোন কিছু করতে পারে
,
,
 আর এখন ঐ মেয়ে তোমার কথা ছাড়া কথা শুনবেনা ওকে ৩/৪ অপেক্ষা করতে বলো নাহলে পাগলামী বন্ধ করতে বলো তোমার জীবন টা তো নষ্ট করে দিবে,
,
,
সেইদিন রাতেই শুভার জ্ঞান ফিরলো
,
,
 আমি পরের দিন হসপিটালে গেলাম
,
,
 জেয়ে দেখি শুভার বাবা বাহিরে কোথায় যেনো যাচ্ছে
,
,
 আমাকে দেখে আমার কাছে এসে আমার হাত ধরে বলে আমার মেয়েকে বাঁচাও বাবা তোমাকে ছাড়া ও বাঁচবে না আমি তোমার বাবা মত আমি তোমার হাতে ধরছি চাইলে পায়ে ধরেছি আমার মেয়েকে বাঁচাও আমার একটা মাত্র মেয়ে ওকে ছাড়া
 আমারা বাঁচবো না আমারা ও মরে
,
 
,
যাবো কথা গুলো বলছে আর কাঁদছে আমার ও দোচোখ দিয়ে পানি পরছে 
,
,
কি বলবো বুঝতে পারছি না আমি শুধু এইটুকু বললাম শুভা কোন রুমে আছে
,
,
 আমি ওর সাথে কথা বলতে চাই
,
,
 আমাকে রুমে নিয়ে যাওয়া হলো অনেকেই আছে শুভা ঘুম আসে
,
,
 শুভার মা আমাকে দেখে কান্না করে দিলো
,
,
দেখলাম শুভার ঘুম ভেঙ্গে গেছে কান্নার শব্দে আমার দিকে অসহায়ের মত তাকিয়ে আছে আর দুই চোখ দিয়ে পানি পরছে ও আসলে কল্পনা করতে পারেনি আমি আসবো
,
,
আমি সবাইকে বললাম আপনার সবাই বাইরে যান আমার শুভার সাথে কথা আছে 
,
,
সবাই বাইরে গেলো শুভা শোয়া থেকে উঠে বসলো আমার খুব রাগ হচ্ছিল আমি ভুলে গেলাম ও অসুস্থ
,
,
 দুগালে দুইটা ঠঠঠঠাসসসসস ঠঠঠঠাসসসসস
,
,
রাগে অস্থির হয়ে চিৎকার করে বলতে লাগলাম
,
,
 পাগল হয়ে গেছো তুমি পাগল হয়ে গেছো কিসের জন্য সুইসাইড করতে গিয়েছিলে 
,
,
কি বুঝতে চাও খুব ভালোবাসো? মরে গেলে কি হতো তোমার ভালোবাসা দিয়ে
,
,
 আমি কি বুঝি না তুমি আমাকে ভালোবাসো কিন্তু একবার নিজের দিকে তাকিয়ে দেখেছো তোমার মত একটা স্মার্ট মেয়ের হাত ধরে আমি যদি রাস্তায় ঘুরে বেড়ায় তোমাকে কেও কিছু বলবে না কিন্তু আমার গায়ে থুক দিবে বুঝতে পারছো 
,
,
আর তোমাকে জাহান্নাম কে বলছে তুমি জানো না বিয়ের আগে প্রেম করা হারাম পরনারী স্পর্শ করলে জাহান্নামের আগুনে পুড়া লাগবে
,
,
 বুঝো  আমাকে তোমার র্টাস করা হারাম
,
,
 জানো না বেপর্দা নারীর সাথে রাস্তায় বের হলে আমার কি অবস্থা হবে
,
,
 এটাতো চিন্তা করো নাই তুমি আছো তোমার জেদ নিয়ে একবার আমার যোগ‍্য করে নিজেকে সাজিয়েছো 
,
,
আমি কথা গুলো বলছি আর শুভা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে আর দুই চোখ দিয়ে পানি পরছে
,
,
দেখো তোমাকে ৩ মাস সময় দিলাম নিজেকে পরিবর্তন করার এই তিন মাস পর তোমার সাথে আমার আবার দেখা হবে
,
,
 এর মধ্যে যদি নিজেকে পরিবর্তন করতে পারো তবে আমাকে চিরদিনের জন্য পাবে না পারলে হারাবে
,
,
 হ‍্যা তিন মাস পর আমার পরিক্ষা এর মধ্যে যদি উল্টো পাল্টা কিছু করে আমাকে টেনশন দিয়েছো তবে আমি নিজেকে শেষ করে দিবো
,
,
 এই কথা বলে রুম থেকে বেরিয়ে শুভার বাবাকে বললাম আপনাদের কোন চিন্তা করা লাগবে না শুভা আগের মত ঠিক হয়ে যাবে
,
,
 আর পাগলামী করবে না বলে সোজাসুজি নিজের বাড়িতে চলে আসলাম,
,
,
 যদিও শুভার বাবা খালা খালু অনেক অনুরোধ করেছিলো থাকার জন্য কিন্তু আমি থাকিনি,
,
,
 যায় হোক এখন নিজেকে অনেক হালকা লাগছে মনের ভিতর থেকে টেনশন টা কেটে গেছে
,
,
দেখতে দেখতে তিন মাস চলে গেলো আমি পরিক্ষা দিলাম পরিক্ষা খুব ভালো হয়েছে ২ মাসের ছুটি পেলাম
,
,
 এর মাঝে আর কারো সাথে কথা হয় নি তাই বাড়ি এসে আমার দেওয়া কথা মত চলে গেলাম খালাদের বাড়ি গিয়ে যা দেখলাম আমার চোখ কপালে উঠে গেছে আমি শিহরিত 
সত্যিই শিহরিত 
চলবে......
,
,
(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)

,
,
গল্প কেমন লাগলো কমেন্ট করে জানিয়ে দিন আপনার মূল্যবান মন্তব্য 😍😍

1 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post