লেখক✍রাসেল"কালো ভূত
______৭ পর্ব______
🎤
🎤
রাসেল তো সামনের দিকে অবাক নয়নে তাকিয়ে থাকে,কেননা পরীকে এতোটাই সুন্দর লাগছে যে রাসেল পরীর দিক থেকে চোখ ফেরাতেই পারছেনা,যেটা দেখে পরী অনেক টাই লজ্জা পেয়ে যায় আর শিখা তো রাসেল কে পরীর দিকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে হিংসায় লুচির মতো ফুলতে থাকে আর বলে।
শিখা:-দুলাভাই শুধু বউটাকে দেখলেই কি হবে,আশেপাসে যে এতো সুন্দর শালীরা থাকে তাদের দিকেও তো একটু নজর দিতে হবে তাইনা।
রাসেল:-নজর তো দিতেই চাই কিন্তু ভয় হয় যদি বিনা মেঘে বজ্রপাত হয়।
শিখা:-আপনে এইভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কথা বলেন কেন,আর বিনা মেঘে আবার বজ্রপাত হয় কেমনে হুম।
রাসেল:-আমি তো জানিনা তোমার আপু কে জিগ্গেস করো কেমন,না হলে আবার আমার উপরে ঘূর্ণিঝড় আসতে পারে।
এইদিকে পরী তো রাসেলের কথা শুনে রাগে লুচির মতো ফুলতাছে,মনে হচ্ছে এইবুঝি ফেটে যাবে।
পরী:-শিখা তোরে আমি বলছিনা এইভাবে কথা বলবিনা,তাহলে তুই এইভাবে কথা বললি কেনো হুম,আর রাসেল তোরে তো খাইছি আমি,মেয়ে দেখলেই কথা বলতে লোভ হয় তাইনা।
রাসেল:-আমি কই বললাম,তোমার বোনই তো আগে আগে আমার সাথে কথা বললো,আমি শুধু সেই কথার উত্তর দিলাম,এইখানে আমার দোষ কোথায় হুম।
পরী:-তুই কথা বলবি কেনো,আমি বলছিনা তুই কোনো কথা বলবিনা হুম।
এইদিকে শিখা বুঝতে পারছে পরীর রাগ আরো চরম পর্যায়ে,তাই শিখা বলে।
শিখা:-পরী আপু তোমরা কি এইভাবে ঝগড়া করেই দিন পার করবে নাকি সপিং করোমতে যাবে হুম।
রাসেল:-এই পরী চলোতো দেরি হয়ে যাচ্ছে,এইভাবে কথা বলে এখানেই সময় শেষ করলে সপিং আর করতে হবে না।
পরী:-আমি কথা বললেই দোষ তাইনা,যা তুই আমি সপিং করতেই যাবোনা।
দেখছেন ভাই এই হলো মেয়েদের রাগ,ঠিকই সপিং করতে যাবে কিন্তু রাগ না করে থাকতে পারবেনা।
রাসেল:-এই পরী রাগ করছো কেনো,তুমি যদি সপিং করতে না যাও তাহলে বাবা আমার পিঠে ছালা বেধে পিটাবে সেটাকি তুমি জানোনা হুম।
পরী:-তোকে বাবার হাতে মাইর না খাওয়ালে তো আর তুই ঠিক হবিনা,তাই বাধ্য হয়েই আমাকে এইটা করতে হবে।
রাসেল:-ঐ চলোতো আগে তোমার যতো রাগ আছে আমার উপরে সেইটা পরে দেখাবে বুঝলে।
পরী:-এতো করে যখন বলতেছো তখন কি করে মানা করি বলো,আচ্ছা চলো।
শিখা:-উম্মম ভাব দেখলে বাচিনা,মনেমনে।
রাসেল পরী ও শিখাকে নিয়ে সপিং মলে চলে আসে,গাড়ির ঘটনা আর বললাম না কারণ ঝগড়া ছাড়া কিছুই তো আর হয়নি না।
রাসেল:-ঐ গুন্ডি দেখ কতো সুন্দর সুন্দর শাড়ি তাড়াতাড়ি পছন্দ কর বুঝলি।
রাসেলের কথা শুনে পরী আবারও রাগে গাল ফুলিয়ে থাকে,না পারছে কিছু বলতে না পারছে সহ্য করতে।
পরী:-দেখ রাসেল ভালো হচ্ছে না কিন্তু,এর করাই গন্ডাই হিসাব আমি বিয়ের পর বুঝিয়ে নিবো হুম।
এই বলে পরী ওর পছন্দের সব জিনিস রাসেল কে পছন্দ করতে বলে আর পরী রাসেলের জন্য পছন্দ করে,এইদিকে শিখা তো ওদের এসব দেখে হিংসাই জ্বলে যাচ্ছে,শিখার জন্য ও কিছু কিনে সপিং শেষ করে।
রাসেল:-পরী চলো এখন একটা রেস্টুরেন্ট থেকে কিছু খেয়ে তারপর বাসাই যায় কেমন।
শিখা:-আপু দুলাভাই কিন্তু কথাটা খারাপ বলেনি,খুবই সুন্দর একটা আইডিয়া বের করেছে।
পরী:-তুই চুপ থাকতো শুধু শুধু আমার বরের টাকা খসানোর ধান্দা তাইনা।
শিখা:-কি কিপটা মেয়েরে বাবা বিয়ের আগেই স্বামীর টাকা খসানো নিয়ে এতো চিন্তা না জানি বিয়ের পর কি হবে,মনে মনে আচ্ছা আপু তুমি এতো কিপটা কেনো হুম।
পরী:-স্বামীর টাকা বাচাতে এমন কিপটামি করলে কোনো দোষ নেই বুঝলি,আর চল খেতে চাইসি মানা করে আর কি হবে।
তারপর রাসেল ওদের নিয়ে পাশের একটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাবার খেয়ে বাসাই চলে আসে,পরীদের বাসাই রেখে রাসেল ওর বাসাই চলে যায়।
রেহানা:-পরীর পছন্দের সব কিছু কিনে দিয়েছিস তো নাকি।
রাসেল:-না মা আমি পরীর পছন্দের কিছুই পরীকে কিনে দেইনাই।
রেহানা:-কি বললি তুই হুম,তোকে না বললাম পরীর পছন্দের সব কিছু তুই কিনে দিবি,কিন্তু তুই সেটা না করে এখন সেটা জোর গলায় বলছিস।
রাসেল:-মা তুমি না পুরা কথা না শুনেই এমনি চিল্লাচিল্লি শুরু করে দাও,আগে পুরা কথাটা মনদিয়ে যদি শুনতে তাহলে এইরকম ভুল আর করতে হতোনা।
রেহানা:-খুলে বলতো আসলে প্রকৃত পক্ষে ঘটনা টা আসলে কি ঘটেছে।
রাসেল:-আরে মা আসলে হয়েছে কি পরী আমার জন্য সব পছন্দ করে কিনেছে আর আমি পছন্দ করে পরীর জন্য কিনেছি।
রেহানা:-এই কথাটা আগেই বললেই কিন্তু আর আমি এইভাবে কথা বলতাম না,শুধু শুধু তোকে বকা দিলাম।
রাসেল:-হয়ছে হয়ছে এখন আমি যায় তাহলে,তুমি তোমার ফাজিল বউমা নিয়েই পরে থাকো আমি তো এখন পর হয়ে গেছি তাইনা।
রেহানা:দেখ ফাজলামি কথা একদম বলবিনা এই আমি বলে দিলাম,আর যা রুমে গিয়ে রেস্ট কর আমি বরং তোর জন্য খাবার তৈরি করি।
রাসেল সেখান থেকে তার রুমে চলে যায়,এইদিকে শিখা মনে মনে প্লান করতে থাকে রাসেল কে কিভাবে তার প্রেমের জালে ফাসাবে কিন্তু কোনো কিছুই ভেবে পায়না,ভাবতে ভাবতে বিয়ের দিন চলে আসে,আজকে রাসেল আর পরীর বিয়ে,দুই বাড়িতেই খুব আনন্দ উল্লাসের ভিড়ের যেনো কোনো কমতি নেই,সারা বাড়ি খুব সুন্দর লাইটিং করে সাজিয়েছে,এ যেনো রাজ বাড়ির থেকে কোনো অংশেই কমনা,এইদিকে রেহানা চৌধুরীর দৌড়াদৌড়ির যেনো শেষ নেই,একবার এই কাজের কাছে যাচ্ছে তো একবার ঐ কাজের কাছে,এর মাঝে রাসেল কেও যে কতোবার তৈরি হতে বলেছে তার তো কোনো হিসাবি নেই।
রেহানা:-রাসেল তোকে কতোবার বললাম রেডি হতে সময় কি তোর জন্য বসে থাকবে নাকি,আর এইযে রাসেদ তুমি ওকে বুঝাতে পারো না।
রাসেদ:-আন্টি আপনে কোনো চিন্তা করিয়েন না,আমি এখনি ওকে রেডি করতেছি।
রেহানা চৌধুরী সেখান থেকে চলে যায়,দেখতে দেখতে সবাই বিয়ে বাড়িতে চলে আসে,গেটের সকল কার্য শেষ করে খাবার পর্ব ও খতম করে,এইবার বিয়ের আসল কাজের পালা,কাজি সাহেব সকল নিয়ম মেনে বিয়ের কাজ অর্ধ সম্পূর্ণ করে চলে যান আর মাওলানা সাহেব এসে সেই অর্ধ সম্পূর্ণ বিয়েটাকে সম্পূর্ণ করেন,এইবার বিদাইয়ের পালা চারিদিকে যেনো কান্নার রোল পরে গেছে,পরীর চোখে পানি কেদেঁ কেদেঁ মুখটাই লাল করে ফেলেছে,এইদিকে শিখার তো মনের মাঝে ধাও ধাও করে আগুন জ্বলতাছে রাসেল আর পরীর বিয়ে দেখে,কিছুতেই মানতে পারতাছেনা তার পছন্দের মানুষের সাথে পরীকে।
রাসেল পরীকে ধরে আছে,সবার থেকে বিদায় নিয়ে রাসেল পরীকে গাড়িতে বসাই,কিছু সময় পরে সবাই বাড়িতে চলে আসে,এখন যে কাজ শেষ হয়েছে তা কিন্তু নই,ঐ যে ছেলের বাড়িতে ও যে দরজা আটকিয়ে টাকা নেওয়া হয় সেটার কথায় বলতাছি,সবাই জেদ ধরেছে ২০০০০ টাকা না দিলে বউ ঘরের ভিতরে ডুকতে পারবেনা,পরীর সাথে যারা এসেছে তারা তো একটা কিপটে তাই বেচারা রাসেলের উপর দিয়েই ২০০০০ টাকার ঝড় টা গেলো,কি করবে সেতো পরীর কষ্ট একদম সহ্য করতে পারেনা,পরী বাসর ঘরে বসে আছে সবাই কথা বলছে আর বেচারা রাসেল তো এতিমের মতো ছাদে দাঁড়িয়ে নিস্তব্ধ আকাশ দেখতেছে,রাসেদের জরুরি একটা কাজ থাকাই রাসেদ চলে গেছে,রাত প্রায় অনেক হয়েছে ঘড়ির কাটা একটা ছুই ছুই ভাব সেইদিকে রাসেলের কোনো খেয়াল নেই,রাসেল ধিরে ধিরে রুমের সামনে এসে আস্তে আস্তে দরজা খুলেই তো অবাক কেননা পরী কিরণমালার কটকটির মতো ভয়ংকর রুপ নিয়ে বসে আছে,রাসেল তো অনেক টাই ভয় পায়,রাসেল ধিরে ধিরে পরীর কাছে গিয়ে।
রাসেল:-কিবেপার আমার শান্ত মেঝাজের বউটা এমন ভয়ংকর রুপ নিয়ে বসে আছে কেনো হুম।
পরী রাসেলের কথা শুনে রাসেলের কলার ধরে জোরে জোরে বলে।
পরী:-এই তোর এখন আসার সময় হলো,সারারাত বাইরে থাকলেই তো পারতি,এখন আসার কি দরকার ছিলো।
রাসেল:-দেখো বউ এতো রাত হয়েছে আমার সেইটার খেয়ালি নেই,এমন ভাবে রাগ করোনা,রাগলে কিন্তু তোমাকে ভূতনির মতো লাগে।
ভাইরে ভাই এমনিতেই পরী রাগের কারণে গরম তেল হয়ে আছে তার মাঝে আবার রাসেল পানি দিলো এখন ভাবেন তাহলে গরম তেলের কি অবস্থা হবে,পরী রাগে রাসেল কে মারতে থাকে।
পরী:-আমি ভূতনি তাইনা দারা তোকে আজ ভূতনির রুপ দেখাবো।
রাসেল:-এইভাবে রাগ দেখিয়ে কথা বললে আমার তো হার্ট ফেল করার মতো অবস্থা হবে গো এমন রাগি চরিণি রুপটা লুকিয়ে রাখো সোনা,রাত পেরিয়ে গেলে আবার সাধন করা সম্ভব হবেনা।
পরী:-তোর সাধনের গুস্টি কিলাই আমি যা তুই বের হ,আজকে ঘরে তোমার জায়গা নেই সোনা।
রাসেল:-না জানপাখি এতো বড়ো শাস্তি দিতে পারো না একটু শাস্তি কম করলে হয় না বলো।
পরী:-আচ্ছা ঠিক আছে এতো করে যখন বলতাছো তখন কি আমি তোমার কথা না শুনে পারি,নাও পঞ্চাশ বার কানে ধরে সরি বলো তোমার পাঠক পাঠিকাদের সামনে।
রাসেল:-এ্যা এটা করলে তো সবাই বলবে তুমি একটা গুন্ডি।
পরী:-হুম তাতে কি বলো সবাই তো জানেই তোমার মিষ্টি বউটা একটা গুন্ডি বাঘিণি।
কি আর করা বেচারা রাসেল কান ধরে পরীর কথা মতো পঞ্চাশ বার সরি বলে,পরী রাসেল কে নিয়ে দুই রাকাত নামাজ পড়ে মনি মুক্তা কে জয় করার জন্য যুদ্ধে নেমে পরে,কিভাবে যুদ্ধ হলো সেটা না আপনেরা বিয়ের পরে জেনে নিয়েন কেমন,দুজনেই যুদ্ধ করতে করতে নেতিয়ে যায়,রাসেল পরীকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরে,সকালে রাসেলের আগেই ঘুম ভাঙে পরীর,পরী ঘুম থেকে উঠে গোসল করে রুমে এসে ভেজা চুলের পানি রাসেলের চোখে দিতেই,,,,
🌺❣❣❣❣❣❣❣❣❣❣❣❣❣❣❣❣❣❣❣❣❣❣❣❣❣🌺
- আজকের বারে এখানেই রেখে দিলাম-
-ফের দেখা হবে কথা হবে আগামী পর্বে-
-সেই পযর্ন্ত ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন-
✍।।।।।।।।।।।।।।।।।।।✍
........চলবে........
🌺,আমার গল্প যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই বেশি বেশি করে লাইক কমেন্ট আর শেয়ার করবেন,কপি করে নিজের নামে চালাবেন না,আর দয়াকরে গল্প লেখার মাঝে যদি কোনো ভুল ক্রটি হয়,তাহলে অবশ্যই ক্ষমার চোখে দেখবেন,কেননা ভুল না করলে জীবনে কিছু শেখা যায় না🌺
🌺পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করুন🌺
🇧🇩বি.দ্র.প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ৭টার মধ্যেই গল্পের নতুন পর্ব পেয়ে যাবেন 🇧🇩