ভাবির_বোনের_অপবাদ পর্ব_৫_বা_শেষ_পর্ব

#ভাবির_বোনের_অপবাদ
#পর্ব_৫_বা_শেষ_পর্ব
(কপি করা একদম নিষেধ) 

সিনথিয়াদের বাড়ি মেহমানে ভর্তি কিন্তু তার মন যেন পড়ে আছে নেহালের কাছে।বাবার কথা রাখতে সে রাজি হয়ে গেছে। একটুপর আমি যেই সিনথিয়াদের বাসায় আসলাম, সিনথিয়া আমাকে দেখে সবার সামনে দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরলো। আর এবার বলা শুরু করলো," নেহাল, আমি জানতাম তুমি আসবে।বাবা আজ আমাকে অন্য ছেলের সাথে এনগেজমেন্ট করাতে যাচ্ছেন। প্লিজ, তুমি কিছু একটা কর।আমি যে তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে ভালোবাসতে পারব না।প্লিজ কিছু একটা কর।"( কথা গুলো কান্না করে বলছিল)

আমি চারপাশে চেয়ে দেখি,সবাই বিনা পয়সায় সিনেমা দেখছে। আমি এবার ওকে ছাড়িয়ে হাত ধরে সবার সামনে নিয়ে গেলাম।তারপর পকেট থেকে একটা আন্টি বের করে, ওকে পড়িয়ে দিলাম। সিনথিয়া তো পুরাই অবাক। 

হঠাৎ সিনথিয়ার বাবা সবাইকে তার মেয়ের হবু জামাই বলে আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিল।সিনথিয়া এবার রাগ করে, এখান থেকে চলে গেল। আমি চাচাকে এদিকটা সামলাতে বলে,ওকে খুজতে চলে গেলাম। 

সিনথিয়া কে বাড়ির সকল রুম ঘুরে ঘুরে খুঁজছি।কিন্তু ওর ছায়া পর্যন্ত খুজে পাইনি।তারপর ছাদে চলে গেলাম। সেখানে গিয়ে দেখি আমার কলিজাটা ছাদের এক কোনে দাঁড়িয়ে কান্না করছে।

আমি তার কাছে গিয়ে পিছন থেকে আস্তে করে জড়িয়ে ধরলাম। ও কিছু টা কম্পিত হয়ে।আমাকে সরিয়ে ঠাস! ঠাস! আরও দুই টা বসিয়ে দিল।এতঃপর আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিল। এবার বলা শুরু করলো," তুই আমাকে এতো কষ্ট দিস কেন? আমি যেদিন চলে যাব সেদিন নিজেকে শক্ত করে রাখতে পারবি তো?

আর কিছু না বলতে দিয়ে ওর ঠোঁট দুটো কে বন্ধ করে দিলাম। আমি বললাম," আর একটা কথা বলবি না?তোর জন্য আমার অনেক কষ্ট পেতে হয়েছে? তোকে একটু কষ্ট দেওয়ার জন্য আমাকে কতো কিছু করতে হয়েছে তা তুই জানিস?তোকে তো আমি সেই প্রথম থেকেই ভালোবেসে ছিলাম।কিন্তু নিজের অনিশ্চিত জীবনে তোকে জড়াতে চাইনি।তুই যতটা কষ্ট পেয়েছিস আমি তার থেকে বেশি নিরবে কষ্ট পেয়েছি।

সিনথিয়াঃ আচ্ছা,এক বছর পর বিয়ে হবে মানে? 
আমিঃ আরে বাবা,আমি তো ওআইসি তে জয়েন করবো।ট্রেনিং শেষে এক বছরের মধ্যে তোমাকে আমার সাথে নিয়ে যাবো।
সিনথিয়াঃ তাহলে আগে বললে না কেন?
আমিঃ ওই দিন তো মিষ্টি নিয়ে এইজন্যই এসেছি কিন্তু তুমি তো থাপ্পড় মেরে পাঠিয়ে দিলে।তারপর চাচাকে সাহস করে তোমাকে বিয়ে করতে চাই সেই কথা বলে দেই।এরপর চাচাও রাজি হয়ে যায়।এরপর তোমার জন্য এই নাটক টা করতে হলো।
সিনথিয়াঃ সরি, আর কখনো এমনটা করবো না।তোমাকে অনেক ভালোবাসব।
আমিঃ আচ্ছা, এবার নিচে চল।

এরপর আমরা নিচে চলে আসলাম। সবার সাথে সাক্ষাৎ করে মেছে ফিরে গেলাম।যদিও সিনথিয়া থাকতে অনেক অনুরোধ করেছিল।আমি থাকিনি।

এরপর আমি ট্রেনিং এ জয়েন করতে পৌঁছে গেলাম। সিনথিয়া অনেক কান্না করছিল।আসলে পাগলি টা আমাকে অনেক ভালোবাসে।

এক বছর পর,
আমার পোস্ট হলো সিরাজগঞ্জে যেখানে আমার মাতৃভূমি। আমি প্রথমে কিছু টা ভাবনায় পড়ে গেলাম। যাইহোক, হয়তো পুরনো শহর আর মানুষ গুলোর সাথে আবারও দিদার হতে যাচ্ছে। এক সপ্তাহের মধ্যে আমার পোস্টিং করা হবে। 

আমি সিনথিয়া কে না বলে তাদের বাড়ি চলে আসলাম। সিনথিয়া আমাকে দেখে ঝরের গতিতে আমার বুকে এসে পড়ল।মনে হচ্ছে হাজার বছর ধরে আমাকে দেখে না।তারপর আমি ওকে ছাড়িয়ে বললাম," চলে এসেছি তো পাগলি, আর কখনো তোমায় ছেড়ে যাব না।এখন তুমি শুধু আমার সাথে থাকবে।"

দুইদিনের মধ্যে চাচাকে আমাদের বিয়ের ব্যবস্হা করতে বললাম। অতঃপর আমাদের বিয়েটা হয়ে গেল।তারপর তিনদিন পর সিনথিয়া কে নিয়ে আমার কর্ম স্থানে চলে গেলাম। আমার জন্য আলাদা একটা কোয়ার্টার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। 

আমাদের বিবাহিত জীবন ভালোই কাটছে।আমি যখন অফিসে থাকি তখন সিনথিয়া সারাক্ষণ বাসায় থাকে।মাঝে মাঝে ওকে বাহিরে বেড়াতে নিয়ে যাই।আমার অতীত প্রায় ভুলেই গেছি সিনথিয়া আমার জীবনে আসার পর থেকে। 

একদিন অফিস থেকে বাসায় ফিরছিলাম। তখন দেখলাম একটা ছোট মেয়ে রাস্তায় এসে কান্না করে যাচ্ছে। আমি গাড়ি থামিয়ে ওর কাছে গিয়ে বলি," মামুনি তুমি কান্না করছো কেন?"
শিশুটিঃ তুমি কে?
আমিঃ আমি তোমার চাচ্চু হই, মামুনি।
শিশুটিঃ ও তুমি আমার চাচ্চু।চাচ্চু, আমি আব্বু আম্মু কে খুঁজে পাচ্ছি না।
আমিঃ তুমি তোমাদের বাড়ির রাস্তা চিনো?
শিশুটিঃ জ্বি, চাচ্চু।
আমিঃ আচ্ছা, চল।তুমি রাস্তা দেখিয়ে দিবে।আর আমি গাড়ি চালিয়ে তোমার বাড়ি গিয়ে তোমাকে দিয়ে আসবো।
শিশুটিঃ আচ্ছা। চল।

এরপর মেয়েটি আমাকে পথ দেখাচ্ছে আর আমি ওর মতো করে বাড়ি যাচ্ছি। হঠাৎ একটা বাড়িতে গিয়ে পৌছালাম। আমি তো অবাক এটা যে আমার জন্মস্থান। কিন্তু বাড়িতে তালা মারা।তাই কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে লাগলাম। এখন চিন্তাও হচ্ছে তারা কেউ চিনে ফেলবে না তো।এখন তো এই মেয়েটি কে ফেলেও যেতে পারব না।

একটুপর একজন পুরুষ ও মহিলা আসলো।মনে হলো এরা ভাই ও ভাবি।আর শিশুটি তাদের দেখে বাবা মা বলে দৌড়ে কোলে চলে গেল। ওর বাবা-মা ওকে দেখে কান্না শুরু করলো।তারপর শিশু মেয়েটি বললো," আম্মু, এই চাচ্চু টা আমাকে বাড়িতে নিয়ে এসেছে।"

 মেয়েটির বাবা মানে সে আমার ভাই বলতে শুরু করলো,"স্যার,আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আমি জানি না,আপনাকে কি বলে ধন্যবাদ দিব।আসলে বাবা একটু অসুস্থ তো তাই তাকে নিয়ে এখানের হাসপাতাল নিয়ে গিয়েছিলাম।কিন্তু ও যেন কোথার থেকে বের হয়ে আসে। তা আমাদের জানা নেই।"

আমি বাবার অসুস্থতার কথা শুনে বাহিরে চলে আসলাম। তারা কিছুটা অবাক ও হলো বটে।আমি সোজা হসপিটালের দিকে গাড়ি নিয়ে রওনা দিলাম। হাসপিটালে পৌছে বাবা-মা কে খুজতে লাগলাম। কিন্তু পাচ্ছি না হঠাৎ চোখ গেল,দরজার পাশে একটা বেডে। আমি তাড়াতাড়ি সেখানে গিয়ে দাড়ালাম আর মা আমার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। 
মাঃ স্যার কিছু বলবেন?(আসলে আমার গায়ে ইউনিফর্ম ছিল,তাই সবাই স্যার বলছে)
আমিঃ তার কি হয়েছে? 
মাঃ মাঝে মাঝে তার হার্টে ব্যাথা ওঠে?
আমিঃ কেন? 
মাঃ তা অনেক কাহিনী স্যার,যা বলতে অনেক সময় লাগবে। 
আমিঃ আপনি বলুন না,প্লিজ ।

মা এবার দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলতে লাগলো, " আমার দুই ছেলে।একজন রুদ্র,আরেক জন নেহাল যাকে ছোট বেলায় একটা মিথ্যা অপবাদে বাড়ি থেকে বের করে দেই।আর এই মিথ্যা অপবাদের মূল ছিল আমার বড় ছেলে রুদ্রের বউ আর তার বোন নিঝুম ।আমার ছোট ছেলে নেহাল নিঝুমকে অনেক ভালোবাসত।কিন্তু নিঝুম তাকে ভালোবাসত না।একদিন নিঝুম আর নেহাল ঘুড়তে বের হলে।হঠাৎ একটা ছেলে নিঝুমের হাত ধরে কিন্তু নেহাল তা দেখে ছেলেটা কে মারে।আসলে নিঝুম আর ওই ছেলেটা একে অপরকে ভালোবাসত।তাই নিঝুম বাসায় কান্না করে ফিরে আসে।
তারপর মা আমাকে বের করে দেওয়া সব কিছু আবার তিনি বললেন।
আমিঃ তারপর কি হলো?
মাঃ আসলে ওই ছেলেটা নিঝুম কে প্রকৃতভাবে ভালোবাসত না।তা নিঝুম কোন ভাবে জেনে যায়।আর এই কথাও ছেলেটা বুঝতে পারে।একদিন সন্ধায় নিঝুম বাড়ি ফিরলে ওকে রাস্তা থেকে তুলে ওই ছেলেটা ধর্ষন করে। ছেলে টাকে জেলে নিয়ে যায়। 

তারপর নিঝুম আত্মাহত্যা পর্যন্ত করতে যায়।কিন্তু তা আর করতে পারেনি তার বাবা-মার জন্য।আর নিঝুম ও তার ভাবি নেহালের সাথে যা যা করছে তা বলে দেয়।একথা শুনে আমরা ও অনেক রেগে যাই।কিন্তু ওর শাস্তি তো ও পেয়েছে তাই আমরা ওকে মাফ করে দেই।তারপর আঘাত থেকে মেয়েটা সুস্হ হতে অনেক সময় নেয়।কিছুদিন পর একটা ছেলে ওকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে যায়।তারপর ওকে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। আর সত্যি টা জানার পর আমার স্বামী,  নেহালের কথা ভেবে ভেবে দিন দিন দুর্বল হয়ে যায়।আর এখন মাঝে মাঝে তিনি এরকম অসুস্থ হয়ে পড়েন।ওর জন্য তিনি আজও অপেক্ষার দুয়ারে চেয়ে থাকেন।

আমি আর চোখের পানি আটকিয়ে রাখতে পারছি না।সেখানে দাড়িয়েই কান্না শুরু করে দিলাম। 
মাঃ স্যার, আপনি কাদছেন কেন?

আমি মায়ের কোলের ওপর মাথা রেখে কান্না শুরু করে দিলাম। আর বলতে লাগলাম,"আম্মু আমি তোমার নেহাল।আমাকে ক্ষমা করে দাও।আমিও যে অনেক কষ্টে বড় হয়েছি।

মাঃ কিহ,তুই আমার নেহাল?(কান্না করে) 
আমিঃ হ্যা,মা।আমি তোমার নেহাল। এবার মা আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করল। 
হঠাৎ বাবা ঘুম থেকে ওঠে।আমার কথা শুনে বলতে লাগলেন," বাবা, নেহাল তুমি কোথায় ছিলি? আমার ওপর তোর এতো রাগ_অভিমান।আমায় ক্ষমা করে দে বাবা।(কান্না করে বলছিলেন) 

আমিঃ না,বাবা তোমার ওপর আজ আমার কোন অভিযোগ নেই। আমার জন্যই তোমার এই আজ এই অবস্থা। 
বাবাঃ না রে।এটা আমার পাপের ফল।তোর কথা না শুনে আমি তোকে বাড়ি থেকে বের করে দেই।তারই ফল এটা

আমিঃ আচ্ছা, বাদ দাও।
মাঃ বাড়ি যাবি না,বাবা? 
আমিঃআরে তোমাদের সাথে দেখা হবে চিন্তা করো না।তবে আমার জন্য সরকার যেই জায়গা দিয়েছে ওখানেই আমি ভালো আছি।আর ওই বাড়ি আমার দরকার নেই। 

মাঃ দরকার নেই মানে? ওটা তো তোরও বাড়ি?
আমিঃ বাদ দাও তো,মা এই কথা। এখন কি বাড়ি দিয়ে আসবো তোমাদের না এখানেই থাকবে।

মাঃ না,বাবা। আজ তোর বাবা এখানে থাকুক। তুই বাসায় চলে যা।
এরপর আম্মু আমাকে চলে যেতে বললো। যদিও আমি বাবার পাশে থাকতে চেয়েছিলাম। আম্মু না করায় এরপর বাসার দিকে রওনা দিলাম। ফোনে তাকিয়ে দেখি সিনথিয়ার অনেক গুলো ফোন।মোনাইল সাইলেন্ট ছিল ওর কথা ভুলেই গিয়েছিলাম।পরে বাসায় গিয়ে যেই কলিং বেল বাজাতে লাগলাম সেই দরজা খুলে গেল।মনে হয়, আমার জন্য কলিং বেল ধরে দাড়িয়ে ছিল।আমি ভিতরে প্রবেশ করতে  সিনথিয়া আমাকে জড়িয়ে কান্না করতে শুরু করলো।

আমিও ওকে ছাড়িয়ে কপালে একটা চুমু খেয়ে আজকের সব খুলে বললাম। ও অনেক খুশি আব্বা আম্মুর সাথে দেখা করতে চায়। আমি ওকে সব বুঝিয়ে বললাম। 

পরেরদিন অফিস শেষে, আমি আব্বু আম্মুর সাথে দেখা করতে বাড়িতে গেলাম। দরজা ভাবি খুলে দিল।আমাকে দেখে মাথা নিচু করে ফেললো। আমি সোজা আব্বু আম্মুর কাছে চলে গেলাম। তারা আমাকে দেখে খুবই খুশি হলো।একটু পর উষা মানে আমার ভাইয়ের মেয়ে আসলো। এসে বলতে লাগলো," চাচ্চু, তুমি কেমন আছো?
আমিঃ ভালো মামুনি,তুমি? 
উষাঃ আমিও ভালো চাচ্চু। 

( এবার ওকে কোলে তুলে আনলাম) 
এরপর আরও কিছুক্ষণ আব্বু আম্মুর সাথে কথা বললাম। হঠাৎ উষা বললো," চাচ্চু, পরশুদিন আমার জন্মদিন তুমি কিন্তু আমার জন্য অনেক কিছু আনবে।"

আমিঃ আচ্ছা, মামুনি।
তারপর চলে আসবো,তখন আম্মু বললো," খাবার খেয়ে যা,বাবা। 
আমিঃ আমি তো এখনো সংসারে কিছু দিতে পারিনি,মা।
এ কথা বলে বাসা থেকে চলে গেলাম। 
এরপর ভাবি আম্মুকে কালকের ঘটনা বললো। 

এখন আম্মুর সাথে সিনথিয়া কে মোবাইলে পরিচয় করিয়ে দিয়েছি।সিনথিয়া ও আম্মু দুজনেই দেখা করতে চেয়েছে। আমি উষার জন্মদিনের দিন নিয়ে যাব তা বলে দিয়েছি।বলতে বলতে উষার জন্মদিন চলে আসলো।তাই ওর জন্য সিনথিয়া কে নিয়ে অনেক কিছু কিনে নিলাম। 

রাত নয়টার দিকে রওনা দিলাম। অনেক আত্মীয় স্বজনরা থাকবে সেখানে। সিনথিয়া কে একটা বোরকা আর হিজাব পড়তে বলেছি।আর আমি পাঞ্জাবী পড়েছি।আজ সবাইকে দেখাবো আমার স্ত্রী কেমন ধরনের মেয়ে। যারা আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল তাদের থেকে কোন দিক দিয়ে কম আছে নাকি। আর আমি এমনি তো সিনথিয়া কে বোরকা পড়িয়ে নেই। নিজের জিনিস অন্য কে দেখানোর মতো গাদা আমি নই।আসলে পৃথিবীর মানুষ গুলো দিনে দিনে বোকা হয়ে যাচ্ছে। নিজের জিনিস কেন যে অন্যের বিনোদনের পাত্রে পরিনত করে তা আমি বুঝি না।

যাইহোক দরজায় নক করতেই, একটা মেয়ে দরজা খুলে দিলো সেটা আর কেউ নয়।এ ছিল নিঝুম আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি তার দিকে কোন ভ্রুক্ষেপ না করে সব কিছু নিয়ে বাসায় ডুকলাম।

আম্মু ভাবি নিঝুম সহ আরও মেয়েরা সিনথিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। কারণ এরকম আয়োজনে কেউ আবার বোরকা পড়ে। তাতেও সিনথিয়া কে অনেক সুন্দর দেখাচ্ছ।
আমি ইশারা করলে ও বুঝতে পারে।সিনথিয়া আব্বু আম্মু কে সালাম করে যেই ভাবির সাথে আম্মু পরিচয় করিয়ে দিবে।তখন আমি সিনথিয়া ডেকে আম্মুর ঘরে নিয়ে গেলাম।আর ওর কাছে কিছু কথা বলে দিলাম।ওদিকে ভাবি_ভাই অবাক হয়ে গেল। 

একটুপর আমার আনা কেক,তাদের কেকের পাশে রাখলাম এবার উষাকে কেক কাটতে বললাম," উষা,কেক কাটলে আমি আর সিনথিয়া ওর মুখে কেক দিয়ে ওর জন্য আনা সব উপহার দিয়ে দিলাম।

উষা আমাকে আর সিনথিয়া কে চুমু দিয়ে বললো, " আমার ভালো চাচ্চু ভালো আন্টি।"

তারপর আব্বু আম্মুর রুমে সিনথিয়া কে নিয়ে চলে আসলাম।
আম্মুঃ ওদের ওপর এখনো রাগ করে আছিস?
আমিঃ দেখ, এ বাড়িতে তুমি আর বাবা ছাড়া আমার আর কেউ নেই।
মাঃ কেন? ওরা তোর ভাই  ভাবি না।
আমিঃ আম্মু, তোমরা যদি আর ওদের নিয়ে কথা বল আমি তাহলে কখনো তোমাদের কাছে আসবো না।

এবার কেউ আর কথা বললো না।একটুপর রুম থেকে বাহিরে আসলে উষা এসে বললো," চাচ্চু আন্টি চল,আমরা এখন খাব?"

সিনথিয়াঃ আচ্ছা, আম্মু চল।আমরাও খাব।
আমি সিনথিয়ার হাত ধরে চোখে রাগি দৃষ্টিতে তাকালাম।এবার সবার সামনে পকেট থেকে ১০০০০ টাকা বের করে বাবার হাতে দিয়ে বললাম," বাবা, এটা তোমাদের মাসিক খাবার খরচ।ডাক্তার দেখাতে যে টাকার প্রয়োজন তা আমি দিব।আর এই টাকায় না হলে আমাকে বলবে।আর পারলে সিনথিয়ার সাথে থাকবে।তোমাদেরকে ও নিজের বাবা মার মতো করে সেবা যত্ন করবে।তা চিন্তা করো না।
চলে আসব তখন উশা বললো, " খেয়ে যাও, চাচ্চু।
আমিঃ না,মামুনি।এই বাড়ির খাবার খাওয়ার অধিকার আমার নেই। 

সবাই আমার ব্যবহার দেখে অবাক হচ্ছে। এবার আমি সিনথিয়াকে নিয়ে বের হয়ে আসলাম।ভাই,ভাবিরও নিঝুমের চোখে স্পষ্ট পানি দেখতে পেলাম। কিন্তু আফসোস ওই দিন ভাবিকে এ কথাটাই বলেছিলাম। শত চেষ্টা করলেও আমাকে আপন করতে পারবে না।সেদিনের কথা গুলোর আঘাতে এখনো বুকটা ক্ষত হয়ে আছে।

হঠাৎ সিনথিয়া আমাকে জিজ্ঞেস করলো, "এমনটা করলে কেন? "

আমিঃ দেখো কেউ ভুল করলে আমি ক্ষমা করে দেই।কিন্তু মিথ্যার ছলনা আর অবিশ্বাস আমার কাছে ক্ষমা এতোটা সহজ নয়।

এরপর বাসায় চলে আসলাম। এখন উষা আব্বু আম্মুও আমার বাসায় আসে।আমি সিনথিয়া কে নিয়ে অনেক ভালো আছি।এভাবেই চলছে আমার জীবন। 

ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। 
আপনাদের সবার কাছ থেকে এক লাইনে একটা সুন্দর কমেন্ট ও রিয়েক্ট আশা করি। 
ধন্যবাদ সব্বাইকে। যারা পুরো গল্পটা পড়েছেন। ফ্রেন্ড রিকু. দিলে "গল্প পড়তে আগ্রহী "এটা ইনবক্স করবেন নয়তো এক্সেপ্ট করি না।বি.দ্র: নতুন নতুন গল্প পেতে..অবশ্যই নিচের লিংকে ক্লিক করুন।  
❤♥
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post