পর্ব : ৩
লেখক:#মুহাম্মদ_আজিজুল
যাই হোক ক্লাস করে বের হবো তখন কে যেন আমার সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেল। তাকিয়ে দেখি একটা মেয়ে।আমি হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললাম উঠুন।
আমার হাত ধরে মেয়েটি উঠলো।আমি তাকে সরি বললাম।
মেয়েটি বলল " আপনার কোনো দোষ নেই আসলে আমি একটু তাড়াতাড়ি বের হতে আপনার সাথে ধাক্কা খেলাম।
আমি:সেম ঘটনা।আমিও তাড়াতাড়ি বের হতে আপনার সাথে লেগে গেল।
মেয়ে:আচ্ছা আপনার নাম কি?
আমি:আমার নাম মোঃ আজিজুল সবাই শটকার্টে আজিজ বলে।আপনার নাম কি?
মেয়ে:আমার নাম অনু।
আমি:বাহ বেশ সুন্দর নাম তো ।
অনু:ধন্যবাদ।
আমি:আচ্ছা পরে যদি দেখা হয় কথা হবে বাই বাই।
আমি কলেজ থেকে বের হয়ে লাবন্যকে খুঁজতে লাগলাম কিন্তু পেলাম না।
আমি বাসায় চলে আসলাম তার পরে তারিকুলকে কল করে বললাম বন্ধু তুই বাসায় ফিরবি কখন?
তারিকুল:আড্ডা দিচ্ছি শেষ হলেই চলে আসবো।
আমি:আচ্ছা। আর দেখিস তো লাবন্য কোথাও আছে কি না।
আমি আঙ্কেল আন্টির সাথে দেখা করে রুমে এসে ঘুমিয়ে পড়ি।একটু পরে উঠে দেখি তারিকুল আমার পাশে বশে আছে।
আমি:কিরে কখন আসলি?
তারিকুল:এই তো সবে মাত্র।
আচ্ছা আমি নামাজ পড়তে যাবো আর তুইও চল।
তারিকুল:নাকে সারাদিন গোসল করিনি আজ।
: ওকে তুই তাহলে গোসল কর আমি চললাম।
নামাজ পরে এসে দেখি তারিকুল শুয়ে আছে।
ওকে বললাম আয় খাবো খুব ক্ষুধা লেগেছে ।
তারিকুল:ওকে চল।
টেবিলে আমরা বশে আছি । আমি তারিকুল আর আঙ্কেল। আন্টি খাবার বেরে দিচ্ছে।
আসলে আঙ্কেল আন্টি খুব ভালো আমাদের খুব খোঁজ খবর নেয়। নিজের মায়ের চেয়েও প্রায় বেশি ভালোবাসে।
আমি আঙ্কেল কে জিগ্যাস করলাম আচ্ছা আঙ্কেল আপনার ছেলে মেয়েরা কোথায় থাকে?
আঙ্কেল:আমার তো ছেলে নাই কিন্তু আমার দুইটি মেয়ে আছে।
আমি:তারা কোথায় থাকে?
আঙ্কেল: একজনের বিবাহ দিয়ে দিছি আর একজন মহিলা হোস্টেলে থেকে লেখাপড়া করে।
আমি:ওহ ভালো।
আঙ্কেল:এই দেখো আমরা কথা বলার তালে আছি। আর ওদিকে তারিকুল সব খেয়ে ফেলেছে।
আমি:ও শালাতো পেঠুক একটা।
আঙ্কেল:হেসে বলল তাই নাকি?
তারিকুল:দেখ আজিজ আমার কোনো বড় বোন নেই তাই আমাকে শালা বলবিনা।
আমি:তুই খাতো, খাবার সময় কথা বলতে নেই।
আন্টি:তোমরা খাচ্ছো না কেন?
আমি:আন্টি আপনিও বসেন আমরা এক সাথে খাবো।
আন্টি:ওকে বাবা বসছি।
আমরা খেয়েদেয়ে রুমে চলে আসলাম। দুজন এক রুমেই পড়তে বশলাম
তার পরে দুজন দুজনের রুমে শুয়ে পড়লাম।
সকালে উঠে দেখি তারিকুল ওর রুমে নেই ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ৯:২৩ বাজে।
আমার তো বিশ্বস হচ্ছে না আমি এতোক্ষণ ঘুমিয়েছি।
তাড়াহুড়া করে কোনোরকম মুখ ধুয়ে না খেয়েই রওনা দিলাম কলেজের দিকে।
কলেজে এসে দেখি কায়ছার স্যারের ক্লাস শেষ!
আমি স্যারের সাথে দেখা করে ক্লাসে ঢুকে দেখি সামনের সিটে একজন বসেছে। আর সমস্থ সিট বুক কোনো উপায় না পেয়ে সামনে আসলাম। সামনের সিটে দেখি লাবন্য বশে আছে! কি করা ওই খাচ্চুন্নির সাথেই বসতে হলো।
লাবন্য:তুই আজ দেরি করে না আসলে তোর বারোটা বাজাতাম।
আমি:এসেছি তো এখন কিছু বলেন?
লাবন্য:আমি কি পাগল হইছি? তোকে কিছু বলি আর তুই স্যারকে বলে দিস তোর মতলব খুব ভালো করেই জানি।
আমি:ভালো এবার চুপ করে থাকেন স্যার ক্লাসে আসছে।
লাবন্য:হুম।
ক্লাস করে কালকের নেয় আজো আগে বের হলাম যেন ও সবাইকে একসাথে করার আগেই আমি ভেগে যেতে পারি।
কলেজ থেকে বের হওয়ার সময় অনুর সাথে দেখা হয়ে গেলো।
অনু:আজিজ কেমন আছো?
আমি:আপাতত ভালো আছি আপনি কেমন আছেন?
অনু:ভালো আছি আর তুমি আমাকে তুমি করে বলবে ওকে।
আমি:কেন?
অনু:আমরাতো বন্ধু তাই না।
আমি:অহ হ্যাঁ।
অনু:তাহলে চলো আমার সাথে।
আমি:কোথায়?
অনু:আরে চলো না।
আমাকে একটা চটপটির দোকানে নিয়া আসলো আর বলল চটপটি খাবো।
:হুম খাও কে বারণ করেছে।
অনু : কেন তুমি খাবে না?
:না আমি খাবো না।তুমি খেতে চাইলে খেতে পারো।
অনু রেগে আমাকে বলছে তুমি আমার সাথে এসেছো আমি যা খাবো তোমারো তাই খেতে হবে হুম।
আমি:বললেই হলো আমি চটপটি পছন্দ করিনা।
অনু:কিন্তু চটপটি আমার খুব ফেবারেট।আচ্ছা চলো খাবোই না (মন খারাপ করে)
আমি:তুমি রাগলে তো বেশ কিউট লাগে চলো খাবো।
অনু:সত্যিই খাবে তুমি।
আমি:তো কি বলছি?
আমরা দুজন চটপটি খেয়ে হেঁটে হেঁটে যাচ্ছি এমন সময় সামনে দেখি লাবন্যর দল!
লাবন্য অনুর কাছে এসে বলতে লাগলো তুমি এই ক্ষেত মার্কা একটা ছেলের সাথে বেরাচ্ছো! ও যে টাউটের টাউট ওর থেকে দূরে থেকো।
অনু:এই যে ও কি রকম তা আমি খুব ভালো করেই জানি। তোমাকে বলেদিতে হবে না।
আমি:আচ্ছা অনু তুমি কি ওকে কিছু টাকা পঁয়সা দাও নাকি?
যে ভাবে আমার বিরুদ্ধে বলছে মনে হচ্ছে এগুলো বলার জন্য তুমি ওকে টাকা দিয়ে রেখেছ(হেসে হেসে)
লাবণ্য:দেখ আজিজ তুই কিন্ত খুব বেশি বাড়াবাড়ি করছিস।
আমি:দেখো লাবন্য আপনি আমাকে তুই করে বলবেন না।পারেন তো তুমি করে বলবেন ওকে?
অনু:এসব মেয়ের থেকে দূরে থাকবা মনে থাকে যেন ।
আমাদের মাঝে অনুও খুব ভালো বন্ধু হয়ে গেল।আর অন্য দিকে লাবন্য আমারদের শত্রু হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
আজ আমি কলেজে যাইনি কারণ শরীরটা বেশি ভালো না।
শুয়ে আছি এমন সময় আমার ফোনে কল আসলো আমি কলটা রিসিভ করে সালম দিলাম।
ও পাশ থেকে আওয়াজ আসলো আজ তুমি কলেজে আসোনি কেন?(নরম কন্ঠে)
আমি: এমনি তার আগে বলেন আপনি কে?
এবার ওপাশ থেকে আওয়াজ আসলো তুই তোর আজরাইলের কন্ঠ চিনলিনা? বলছিলাম না তোর কপাল শনি আছে।
আমি:আমি কি বলেছিলাম শনিকে মঙ্গল করে নিতে জানি।
ওপাশ থেকে কলটা কেটে দিল!
কলেজ থেকে তারিকুল এসে বলে কলেজ ছয় দিনের জন্য ছুটি। কি করা যায় বলতো?
আমি:তার আগে বল লাবন্যকে আমার ফোন নম্বর কে দিছে?
তারিকুল: না দিয়ে উপায় আছে সবার সামনে আমি কি অপমানিত হবো?
: হুম ভালো করেছিস আগেতো দেখা হলে বকতো আর এখন তো ফোনেও।
তারিকুল:আরে বাদ দে তো ও সব। আগে বল এই ছয় দিন কি করবো।
আমি:মানিক কে কল করে কলেজের মাঠে আসতে বল।তার পরে সবাই মিলে দেখি কি করা যায়।
সবাই বলল আমরা কোথাও ঘুরতে যাবো।
আমি : কিন্তু কোথায় যাবি সেটা কি ভেবেছিস?
মানিক:না। কিন্তু আমাদের এখানে কোনো নদী নেই তাই নদী দেখতে মন চায়।
আমি:নারে আমাদের বাসা নদীর পাশেই ওসব ভালো লাগেনা।
মানিক, সজিব হাফিজুল আর আশিক বলল " তাহলে আমরা তোদের ওখানেই যাবো।
আমি : যাওয়া লাগবেনা এখান থেকেই তোদের দেখাই ওয়েট।
আমার ফোনে তোলা সকল পিক দেখালাম তার পরে ওরা আরো উঠেপড়ে লাগলো যে ওখানেই যাবো।
দেখতে এতো সুন্দর। না জানি ওখানে গেলে কত সুন্দর লাগবে।
আমি:আচ্ছা তাহলে কাল সকালে আমরা রওনা দেবো ।
সকালে সবাই এক সাথে রওনা দিলাম। আমার বাসা বাঘাবাড়ী এখানে পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় বিকাল চারটা বাজে গেল।
আমি আমার ফোন বের করে দেখি আমার ফোনে মেমরিকার্ড নেই!
হায়রে কই গেল ম্যমরি?
যাইহোক আমরা সবাই মিলে আমাদে বাসায় আসলাম। কোনো রকম কিছু মুখে দিয়ে বের হতে লাগলাম ওমনি আব্বু বলল " তোমরা কোথায় যাবে?
মানিক:আঙ্কেল আমরা নদী দেখার জন্য এসেছি।
আব্বু:তাহলে আমাদের নৌকা নিয়ে বেড়াও ভালো হবে।
আমি: আচ্ছা।
আমরা নৌকা নিয়া নদী বন্দর দেখছি এমন সময় দেখি অনুর কল।
আমি:কিরে কি বলবি বল?
অনু:আমরা না বাঘাবাড়ী বেরাতে আসেছি।জানিস এই জায়গাটা অনেক সুন্দর।
আমি : নানা বাড়ির গল্প মায়ের কাছে বলছিস । আর তোরা যে বাঘাবাড়ী এসেছিস এটা কার প্লান?
অনু : লাবন্য কোথা থেকে যেনো একটা ম্যমরি পেয়েছে। ওটাতেই তোলা ছিলো জায়গাটা।
আমি: আচ্ছা তোরা কোথায় এখন?
অনু আমাকে বলল " আমার ফোনের লোকেশন চালু করলাম দেখ তুই আমরা কোথায়।
আমরা ওদের ম্যপ অনুজায়ি চলে আসলাম। নৌকাতে সবাই উঠলো লাবন্য বাদে!
ওর কাছে গিয়ে বললাম আপনি উঠবেন না?
লাবন্য :না তোমার নৌকায় আমি উঠবোনা। তুমি আবার কি করে ফেলো বলা যায় না।
আমি:আচ্ছা আগে যা হয়েছে সব ভুলে গেছি ।আর আপনিও আসাকে ক্ষমা করে দিয়েন।
এবার তো চলেন, আমি কিন্ত মাফ চাইছি।
লাবন্য:হুম চলো।
নৌকায় উঠতে গিয়ে পা পিছলে নদীতে পড়ে গেল লাবন্য!
আমি ভাবছি ও সাতার জানে, তাই ওকে ধরলাম না। ওমা পরে দেখি লাবন্য সাতার জানে না!
আমি পানিতে লাফ দিয়ে লাবন্যকে উপরে নিয়ে আসলাম।
মনে হয় অনেক পানি খেয়েছে তাই শ্বাস দেওয়া লাগবে। আমি লাবন্যর মুখের সাথে মুখ লাগিয়ে শ্বাস দিতে লাগলাম। হুট করেই লাবন্যর জ্ঞান ফেরে।আর জ্ঞান ফেরার পরে যা হলো.............চলবে?
গল্প : #বড়লোকের_মেয়ের_সাথে_প্রেম
পর্ব : ৩
লেখক:#মুহাম্মদ_আজিজুল