পর্ব : ৬
লেখক:#মুহাম্মদ_আজিজুল
আমাদের কাছে আঙ্কেল এসে বলল " বাবা একটু বাজারে যাও তো।
আমি:জি।
আমি আঙ্কেলের হাত থেকে ব্যাগ আর টাকা নিয়ে চলে আসলাম বাজারে।
বাজার নিয়ে বাসায় আসলাম।আন্টি রেধে বেরে ডাকলেন আমরা খেয়ে দেয়ে কলেজের দিকে রওনা দিলাম।
কলেজে যাওয়া পরে দেখি লাবন্য ওর বান্ধবিদের। এমন কি মানিক সজিব হাফিজুল ও আশিক একি সাথে বসে আছে।
লাবন্য আমাকে দেখে এগিয়ে এসে বলল " আজিজ দেখ আমি তোমাকে ভালো বেসে ফেলেছি তোমার থেকে দূরে থাকতে পারি না শুধু তোমার কথাই মনে পড়ে। তুমি আমার দিন আর রাত এক করে দিয়ে আরামে ঘুমাও(সবার সামনে)
অনু:দেখ লাবন্য আমরা তো বন্ধু তাইনা? আর বন্ধুদের মাঝে এসব কি পাগলামো শুরু করেছিস?(রেগে)
লাবন্য:আমি কিছুই জানি না।
আমি এক সময় লাবন্যকে ভালো বেসে ফেলছিলাম। কিন্তু আব্বুর কথা শুনে ও সব মাথা থেকে ফেলে দিহয়েছি। তাই ওকে বলার মতো আর কিছুই নাই।আমি সোজা চলে আসলাম ক্লাসে।
কায়ছার স্যারের সাথে কথা বলে চলে আসলাম বাসায়। কিন্তু কিছুই ভালো লাগছে না কেলেন্ডারের দিকে তাকাতেই দেখি কাল সোমবার মানে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ঈদের দিন।
অনেক দিন ধরে রোজা রাখি না।মনে পড়ে মনটা আরো খারাপ হয়েগেল।যাইহোক কাল রোজা রাখতে হবে।
দিনটা কোনো রকম কাটালাম। বিকাল বেলা অনু দৌড়ে এসে বলল " আজিজ তুই তাড়াতাড়ি তারিকুলকে নিয়ে বাসার বাইরে যা।
আমি:কেন যাবো?
অনু:আরে লাবন্য নাকি আমাদের বাসায় আসছে।
আমি ভাবলাম যদি ও আমাকে এ বাসায় দেখে তাহলে আমাকে পাগল করে ছাড়বে।
তাই আমি আর তারিকুল বাসা থেকে বের হতে লাগলাম। বাসার গেইটের কাছে আসতেই লাবন্য এসে হাজির!
ওকে দেখে আমরা অন্য দিকে তাকিয়ে আছি। যেন লাবন্য না দেখে।
কিন্তু কোনো লাভ হলো না।
লাবন্য আমার কলার ধরে টান দিয়ে তার কাছে টেনে নিলো!
এদিকে অনু দৌড়ে এসে বলল " কি করিস ছাড় ওকে(আমাকে ছাড়িয়ে)
দেখি অনুর আব্বু আর লাবন্যর আব্বু এক সাথে আমাদের কাছে আসছে! এসে বলল " আচ্ছা তাহলে তোমার নাম আজিজ?
আমি:জি আঙ্কেল।
লাবন্যর আব্বু বলল " দেখো তোমরা এখনো ছোট। কিন্তু এ সময়ে তোমাদের মনে নানা ভাবনা চিন্তা, ভালো লাগা, ভালো বাসা এসবই বেশি। কিন্তু তোমরা কি কখনো ভাবো তোমাদের বাবা মা কি চায়?
আমি:জি আঙ্কেল সবার বাবা মা চায় তাদের সন্তানরা মানুষের মতো মানুষ হয়ে যেনো সমাজে মাথা উচু করে বসবাস করতে পারে।তারা যেনো কখনো কষ্টে না থাকে।
লাবন্যর আব্বু:তুমি একদম ঠিক কথা বলেছো। কিন্তু তাকিয়ে দেখো আমার মেয়েকে। সে শুধু তোমার জন্য কান্না করছে। ও নাকি তোমাকে ভালোবাসে।
আমি:আসলে আঙ্কেল এটা আমার কাছে বলে কোনো লাভ নেই। আমার মাতা পিতার কাছে বলতে পারেন। আমি কখনোই ওনাদের অবাধ্য হতে পারবো না।
অনুর আব্বু:আরে তোমরা গেটের সামনেই কথা বলবে? নাকি বাসার ভিতরে বসে কথা বলবা।
ভিতরে যাওয়ার পরে আন্টি বলে উঠলো বাবা আজিজ এখানে আসো তো।
আন্টির কাছে যাওয়ার পরে আন্টি বলল "জানি না ওখানে কি হয়েছিলো।তুমি কিছু মনে করোনা। সব ঠিক হয়ে যাবে।
রাতে খাবার খেয়ে শুতে গেলাম। দেখি আমার রুমে লাবন্য!
আমি:এই তুমি এখানে কেন?
লাবন্য:আমি এখানেই থাকবো আজ।
আমি:পাগল নাকি?
লাবন্য: হ্যাঁ তোমার প্রেমের পাগল।
আমি:প্লিজ তুমি যাও। একটা মেয়ে একটা ছেলে এক রুমে থাকতে নেই।
কোথা থেকে যেন অনু এসে লাবন্যকে নিয়ে গেল।
যাক বাবা বাঁচা গেল।এবার একটু আরামে ঘুমানো যাক। ঘুমনোর আগে মোবাইলে ৩:৩০ এর এলার্ম দিয়ে রাখলাম।
মোবাইলের এলার্মের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল।
হাত মুখ ধুয়ে খাবার ঘরের দিকে যাচ্ছি। এমন সময় কে যেন পেছন থেকে বলে উঠল চোর চোর চোর....।
বললাম কে ওখানে চোর বলল?
এমন সময় দেখি বাসার সবাই হাজির!
বাসায় বিদ্যুত ছিলো বলে বেঁচে গেছি।
লাবন্য:sorryবুঝতে পারিনি।
আন্টি:বাবা এখন তুমি কি করবা।
আমি:ভাত খাবো।যাও তোমরা ।
আন্টি:কিন্তু এতো রাতে কেন ভাত খাবে।
আমি:রোজা রাখার জন্য। তার পরে সব খুলে বললাম।
আন্টি:অহ ভালো তো। আচ্ছা তুমি খাও তাহলে।
ফজরের নামাজ পড়ে বাসায় আসতেই দেখি সবাই এক সাথে বসে আছে।আমি সবাইকে সালাম দিয়ে বসে পড়লাম।
আঙ্কেল:কেমন আছো।
আমি: আলহামদুলিল্লাহ ভালো।
আঙ্কেল:তোমার বাবা মায়ের সাথে কথা বললাম। তোমার বিয়ের ব্যপারে। কিন্তু তারা বলল ছেলের অনুমতি ছাড়া বলতে পারবো না।তোমার বাবা মায়ের সাথে কি তোমার কথা হয়েছে?
বললাম না কথা হয়নি।এটুকু বলেই রুমে এসে আব্বুকে কল করলাম। আব্বু কল ধরে বলল " আমি তোমাকে কল করতেই যাবো আর ওমনিতেই তুমি কল করলে।
আমি:কেমন আছো তোমরা?
আব্বু:ভালো আছি। কিন্তু তুমি যে বাসায় থাকো সেই বাসার মালিক আমাকে কল করেছিলো জানো কি?
আমি:না কি বলেছে সে?
আব্বু: ওই তোমার বিয়ের ব্যপারে।
আমি:আর তুমি কি বলেছো আমার ইচ্ছে।
আব্বু:আরে ও সব বাদ দাও তো। আগে বলো মেয়ে দেখতে কেমন?
আমি:বাবা তুমি মেয়েকে দেখেছো। ও আমাদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়াছিল ।
আব্বু:ওহ তা কোনটা?
আমি:যে দুইটা সব সময় ঝগড়া করতো তার মধ্যে একটা আমাকে তুই করে বলতো আর একটা তুমি করে বলতো।ওদে মধ্যে যে তুমি করে বলতো সেইটা।
আব্বু:ওটাকে দেখে তো মনে হলো বড়লোক বাপের মেয়ে।আর দেখতেও তো মাশআল্লাহ অনেক সুন্দরী। তুমি কি বলো?
আমি:বাবা ও নামাজ পড়ে না,পর্দা করে না। শরীরে সুগন্ধি নিয়ে ঘোরে।
আব্বু:হয়তো মেয়েটার এধরণের জ্ঞান নেই। পরে বুঝতে পারলে শুধরে নিবে।
আমি:ওর মধ্যে ও রকম কোনো কিছুই দেখি না।যে ও কোনোদিন পাল্টাবে।
আব্বু:আমি ওতো কিছু বুঝিনা মেয়েকে তোমার মায়ে পছন্দ আমারো পছন্দ এবার তোমার পালা।
আমি:বাবা আমার লেখাপড়া।
আব্বু:বিয়ের পরেও চাইলে লেখাপড়া করা যায় বুঝেছ?
আর বিয়ের পরে তোমার শ্বশুরের কম্পানিতে কাজ করবে। বাবা আমরা আর কয় দিন আর বাঁচবো দয়া করে আমাদের দাদা দাদি ডাক শুনার ব্যবস্থা করে দাও।
"হায়রে কপাল আমি এখানে ওকে বিয়ে করতেই রাজি না ওনারা নাতি নাতনির স্বপ্ন দেখছে!
আব্বু:আমরা কাল আসছি ওখানে।
আমি:কি!
আব্বু:হুম। কাটছি এবার।
আমি ফোনটা রেখে ঘুরে তাকিয়েই দেখি লাবন্য জানালার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে আছে!
আমি:তুমি এখানে কেন, আর কখন এসেছো ?
লাবন্য:অনেক্ষণ আগেই এসেছি। এসেছিলম তোমাকে দেখতে। তোমাকে না দেখে যে আমার ভালো লাগেনা।
আমি:দেখো আমার মধ্যে কি এমন আছে যে আমাকে না দেখে থাকতে পারো না?
লাবন্য:বলতে পারবো না।
আমি রেগে বললাম " যাও তো। তোমাকে আমার দু -চোক্ষে দেখতে ইচ্ছে করছে না।
লাবন্য আমার দিকে ঘুরতেই আমি অবাক হয়ে গেলাম! ও এতোক্ষণ জানালার গ্রিল ধরে কান্না করেছে চোখ দুটো হোলদে লাল রঙ্গের হয়ে আছে।
আমি:দেখ পাগলামো করোনা। তোমাদের টাকা পঁয়সা আছে বলেকি সব কিছু খেলা মনে করতে হবে?
আর তুমি তো আমাদের বাড়ি দেখেছো। ওই রকম বাড়িতে দুইদিন থাকলে ঠিকি চলে আসবা ?
লাবন্য:যদি সাত দিন না খেয়েও থাকতে হয় তাও থাকবো তোমার কাছে কোথাও যাবো না(জড়িয়ে ধরে)
আমি:এই কি করছো ছাড়ো (ছাড়াতে ছাড়াতে)
আমাকে ছেড়ে দিয়ে কান্না করতে করতে চলে গেলো।
আমি অনুর কাছে গিয়ে দেখি অনু কান্না কারছে!
আমি:কিরে কি হয়েছে তোর?
অনু:কই কিছুই না।
আমি:তাহলে অমন ভাবে কান্না করছিস কেন।
অনু:বাদ দে সব। কি বলতে এসেছিস সেটা বল।
আমি:দেখনা লাবন্য কেমন পাগলামো শুরু করেছে। ওর জন্য তো আমি পাগলের মতো হয়ে যাচ্ছি। ওকে একটু বুঝাবি না।
অনু:আমি ওকে কি বুঝাবো ও আমার কথা শুনবে না,। যা তুই আমার ভালো লাগছেনা।
: ওকে থাক তুই।
আমি চলে এসে দরজা লাগিয়ে শুয়ে রইলাম। বিকালে ইফতার করে আবার শুয়ে পাড়লম।
কিছুক্ষণ পরে লবন্য কল করে খেতে ডাকলো।
আমি বলেদিলা খাবো না। আর বিরক্ত করবানা ওকে।বলেই ফোন বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ি।কিন্তু তাতেও কোনো শান্তি হলো না।
আন্টি এসে ডাকতে শুরু করলো। আমি ঘুমোনোর ভান করে রইলা।
ঘুম ভাঙ্গার পরে ফোনটা চালু করলাম।
তার পরে দেখি দরজায় আব্বু আম্মু ডাকছে ।
এরা আবার এতো সকালে আসলো কেমন করে।
আমি দরজা খুলে দেখি আব্বু, আম্মু, ছোট ছোট দুইটা বোন সহ লাবন্য।
আমি ওদের সাথে কথা বলে লাবন্যর দিকে তাকালাম দেখলাম ও মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
মা বলল " তোমরা কথা বলো আমরা লাবন্যর আব্বুর সাথে কথা বলি(যেতে যেতে)
: আমি না তোমাকে...............।
লাবন্য:আমাকে কি?
আমি:তোমাকে প্রথম দিন দেখেই ভালোবেসে ফেলেছি কিন্তু তখন তো জানতাম না তুমি ভালো না।
লাবন্য:কেন আমি কি কোনো খারাপ কাজ করেছি?
আমি:না। কিন্তু তুমি এর পর থেকে গায়ে সুগন্ধি লাগাবে না। বুঝেছো?
লাবন্য:আচ্ছা(মনের মধ্যে খুশির ঝড় নিয়ে)
আমি:যাও এবার।
লাবন্য:আচ্ছা তুমি কি আজো রোজা রাখছো?
আমি':না।
না শব্দ শুনার সাথে সাথে আমাকে রুমের ভিতরে নিয়ে দরজা আটকে দিলো। মনে হচ্ছে ওর গায়ে অনেক শক্তি এসেছে।তার পরে ও আমাকে.................... চলবে?
পাঠক গন প্রেম টেম করিনা তাই প্রেমের সময় নিলাম না ডিরেক্ট বিয়ে কি বলো তোমরা?
(((আর শোনো এধরনের মেয়ে গুলা মন থেকে অনেক সরল হয় মনে রাখবা কিন্তু)))
গল্প:#বড়লোকের_মেয়ের_সাথে_প্রেম
পর্ব : ৬
লেখক:#মুহাম্মদ_আজিজুল