গল্পঃ অফিসের রাগী ম্যাম যখন বউ পর্ব_১০/শেষ

 #অফিসের_রাগী_ম্যাম_যখন_বউ
পর্ব_১০/শেষ
#লেখক_MR_S

ওদিকে আরোহী আমাকে ডাকতে রুমে এসেছিলো। আমার কথা সব শুনতে পেলো কিন্তু ফোনে অহনার কথা কিছুই শুনে নাই। ও ভাবছে আমি অহনাকে বিয়ে করবো। তাই আরোহী কান্না করে দিলো এবং এসে আমাকে মারতে লাগলো।
 আমার মোবাইলটা আছাড় মেরে ভেঙ্গে ফেললো কিন্তু কিছুই বলছে না

,,,,,কি হয়েছে এমন করছো কেনো(আমি)

,,,,,,তুমি আমার সাথে এমন করতে পারো না

,,,,,আরে কি করছি

,,,,,,কেনো করছ আমার সাথে এমন কি দোষ করেছি। আর কোনোদিন তোমার সাথে রাগা রাগী করবো না। প্লিজ এমন কইরো না

আজোব তো কিছুই বলছে না আমি কি করলাম। তাই একটা ঝারি দিলাম এক ঝারিতে ভয়ে পেয়ে খাতে গিয়ে চুপ করে বসে কান্না করতে থাকে। আমি বুঝতেছি না কান্না করার কারন কি। 
আমি আর কিছু না ভেবে সোফায় শুয়ে পড়লাম। সকাল সকাল অনেক কাজ আছে ওদের বিয়ে।
 তারপর মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলো মনে হলো কিছু একটা আমাকে জরিয়ে ধরে আছে। চোখ মেলে দেখি আরোহী আমাকে জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করছে। 
আমার নরাচরা পেয়ে উঠে খাতে চলে গেলো। আমি ভাবছি মেয়েটার হঠাৎ করে কি এমন হলো। 
যে এইরকম করছে। আমার প্রতিদিনের তুলনায় আজকে তারাতাড়ি ঘুম ভেঙ্গে গেলো। আরোহীকে দেখি ঘুমিয়ে আছে। তারপর আমি ফ্রেস হয়ে নিচে গেলাম। বাবা মা আমাকে দেখে অবাক। 
এমন ভাবে তাকিয়ে আছে মনে হয় যেনো ভুত দেখেছে

,,,,,, তোর শরীর ঠিক আছে তো(বাবা খবরের কাগজ ভাজ করে রেখে)

,,,,, হুম কেনো(আমি)

,,,,,,তুইতো এতো তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠিস না

,,,,,,আরে একটা জরুরী কাজ আছে তাই। আচ্ছা মা নাস্তা দেও তারাতাড়ি বেরোবো

তারপর নাস্তা করে বেরিয়ে পরলাম কাজী অফিসের উদ্দেশ্যে। কয়েক জন বন্ধুদের আগেই বলে রেখেছিলাম মোটামুটি সকল আয়োজন করতে করতে নয়টা বেজে গেলো একটু পরেই বিয়ে। দেখতে দেখতে বিয়ে শেষ হয়ে গেলো এখন সাক্ষী হিসেবে আমারা। 
তাই আমি সাইন করব বলে কলম হাতে করে যেই সই করতে যাবো ঠাসসসস একটা আওয়াজ হলো সাথে গালে ব্যেথাও করতে লাগলো।
 তারপর আমি তাকিয়ে দেখি থাপ্পর মেরেছে আমাকে। আর যে মেরেছে সে হলো আমার বাবা। এখানে দেখি আমার মা বাবা আরোহী আর আরোহীর বাবা সবাই আছে

,,,,,, তোর লজ্জা করেনা তুই এইটা কি করলি। তোকে আমার ছেলে বলতে ঘৃণা হচ্ছে(বাবা)

আমি কোনো কথা বলছি না। এমনিতে থাপ্পর খেয়ে দুনিয়ার বাইরে আছি তাই মাথায় কিছুই ঢুকছে না

,,,,,, একবারো আমাদের কথা ভাবলি না। এই মেয়েটার কথা ভাবলি না (আরোহীকে দেখিয়ে) কি হবে এই মেয়েটার (মা)

আরোহীর দিকে তাকিয়ে দেখি কান্না করছে। 

,,,,,,, তোমার কাছে থেকে এইটা আছা করি নাই বাবা। এভাবে আমার মেয়েটার জীবন নষ্ট করে দিলে(আরোহীর বাবা)

,,,,,,আমি কি করেছি (আমি অনেক জোরে বললাম)

,,,,,,তুই আরেকটা বিয়ে করছিস তাও বলছিস আমি কি করেছি হারামজাদা (বাবা)

ও এবার সব বুঝলাম

,,,,,, আচ্ছা কে বলেছে আমি বিয়ে করেছি (আমি)

,,,,,, আরোহী বলেছে(বাবা)

,,,,, মানে

তারপর আমাকে সব বললো।

এখন আরোহীর ঘটনা বলি
সকাল বেলা আরোহী ঘুম থেকে উঠে আমাকে সোফায় দেখতে না পেয়ে। চিন্তিত হয়ে পড়ে। তারপর রাতের কথা মনে পরে যায় তখনি ওর মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। 
তাই বাবার মার কাছে গিয়ে কান্না করতে থাকে। তারা জিজ্ঞেস করলে বলে আমি নাকি আবার বিয়ে করবো। 
তারা প্রথমে বিশ্বাস করতে চায়না। তারপর আরোহী রাতের সব কিছু খুলে বলে। তখন আরোহীর বাবাকে ফোন দিয়ে বলে। তারপর সবাই মিলে এখানে আছে। 

,,,,,কাহিনীটা এবার বুঝলাম (আমি)

,,,,,তোর বোঝা তোর কাছে রাখ আজ থেকে জানবো আমাদের কোনো ছেলে নেই(মা)

,,,,,,আরে আমি বিয়ে করি নাই (আমি)

,,,,,, মানে

,,,,,,,বিয়েটা হয়েছে এদের (অহনা আর রোহানকে দেখিয়ে) শুধু রাগ আছে বুদ্ধির "ব" ও নেই। কি করে ভাবলে আমার এতো সুন্দর একটা বউ থাকতে আমি আবার বিয়ে করবো (আরোহীকে উদ্যেস্য করে) 

আরোহী দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আর কান্না করতে লাগলো কান্না করে আমার জামার বুকের জায়গায় পুরো ভিজিয়ে ফেললো। 

,,,,,,আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। তোমাকে হারাতে চাই না তাই এমন করলাম। আমাকে ভালোবাসবে তো(আরোহী কান্না করতে করতে বললো)

,,,,,,,বাসতে পারি যদি এখন কন্না থামিয়ে একটু হাসো। আর সাথে সোফার জায়গায় খাত‌ হয়। কারন পিথে ব্যাথা কেরে

 ,,,,,, হুম(আরোহী একটা মুচকি হাসি দিয়ে লজ্জা পেয়ে আমাকে আবার জড়িয়ে ধরলো)

তারপর সব কিছু সবাইকে খুলে বললাম।

,,,,,, আমাদের আগে বলবি তো। তোরা চিন্তা করিস না তোদের মা বাবাকে বোঝানোর দায়িত্ব আমাদের (বাবা রোহান আর অহনাকে বললো)

রোহান আর অহনা এসে সবাইকে সালাম দিলো। তারপর ওদের নিয়ে রোহানের বাড়িতে গেলাম মা বাবা অনেক বোঝানোর পর তারা বিয়েটা মেনে নিলো।
 সব কাজ শেষ করতে করতে রাত হয়ে গেলো এখন আমি আরো আরোহী ঘরে বসে আছি কেউ কোনো কথা বলছি না। তাই আমি নীরবতা ভেঙ্গে বললাম

,,,,,, আমাদের তো বাসর রাত হয়ে নাই। চলো না আমারা আজকে বাসর করি(শয়তানি হাসি দিয়ে)

,,,,,, খবরদার কোন শয়তানি করবে না। আমার খুব ঘুম পাচ্ছে (আরোহী)

,,,,,,তা বললে তো হবেনা সুন্দরি(আমি কাছে এগিয়ে গেলাম)

,,,,,,না না একদম কাছে আসবে না আমি কিন্তু তোমার বস হই

আমি আর কোনো কথা বলতে দিলাম না।
আমি আরোহীর ঠোঁটের সাথে নিজের ঠোট মিলিয়ে দিলাম। প্রায় পাঁচ মিনিট পর সেরে দিলাম। দুজনেই হাপ্পাচ্ছি তখন বললাম

,,,,,, আচ্ছা আজকে বললে না তো

,,,,,কি(আরোহী অবাক হয়ে)

,,,,,,,ওই বাংলা সিনেমার ডায়লক আমার শরীর পাবি মন পাবি না(আমি মজা করে বললাম)

,,,,,, শয়তান একটা

তারপর আরোহী আবার আমার ঠোঁটের সাথে নিজের ঠোট মিলিয়ে দিলো। তারপর কি হলো আমি কমু না সরম লাগে

পাঁচ বছর পর

অফিসে থেকে বাড়িতে আসার পর কেউ একজন আমর হাঁটু জরিয়ে ধরে বলছে

,,,,,, বাবা বাবা আমাল চকলেট কোথায়(হিয়া)

,,,,,,আরে আমিতো একদম ভুলে গেছি চকলেট আনতে। এবার কি হবে(আমি)

,,,,,,যাও তোমাল থাতে আলি। আল কতা বলবো না(রাগ করে মুখটা অন্যদিকে ফিরিয়ে)

,,,,, তাহলে এইটা কাকে দেবো(আমি পকেট থেকে চকলেট বের করে)

,,,,,, আমাল মিট্টি বাবা(আমাকে জরিয়ে ধরলো)

,,,,,, আমার মিষ্টি মামণি। আচ্ছা তোমার আম্মু কোথায়

,,,,, দাদির সাথে নান্না করে

এতোক্ষণ জার সাথে কথা বললাম সে হলো আমার আর আরোহী কলিজার টুকরা একমাত্র মেয়ে হিয়া। বয়স বছর তিনেক হবে
 খুব মিষ্টি দেখতে।
 আর এখন আমি অফিস দেখাশোনা করি আরোহী বাড়িতে থাকে মা-বাবার দেখা শোনা করে। 
এক প্রকার জোর করেই আমাকে অফিসের দায়িত্ব দিয়ে নিজে বাড়িতে থাকে। তারপর আমি আমার মেয়েকে নিয়ে রুমে চলে গেলাম হিয়া খাতের উপর বসে খেলা করছে। আর আমি ফ্রেস হতে গেলাম। ফ্রেস হয়ে আমিও মেয়ের সাথে খেলা করছি তখনি রুমে আরোহী এলো

,,,,,,এই খেতে চলো তারাতাড়ি (আরোহী)

আরোহী এই বলে চলে যাচ্ছিলো তখনি আমি ওর হাত টেনে আমার কাছে টেনে আনি

,,,,,, কোথায় যাচ্ছ মহারানী (আমি)

,,,,,,হাত ছাড়োতো এখন আমার অনেক কাজ আজ। বুঝলে আমার মহারাজ (আমার নাক টেনে দিয়ে বললো)

,,,,,, আচ্ছা মামনি তুমি তোমার দাদির কাছে গিয়ে খেলোতো(আমি হিয়াকে বললাম)

হিয়া চলে গেলো

,,,,,,ওই তুমি ওকে এখান থেকে ওকে পাঠালে কেনো কোনো দুষ্টুমি চলবে না কিন্তু আমার সাথে (আরোহী)

,,,,,, তোমার সাথে কোথায় আমিতো আমার বউয়ের সাথে করবো (তাই বলে একটা কপালে কিস দিলাম)

,,,,,, এখন এসেছে ভালোবাসা দেখাতে এমনিতে তো আমার খবর রাখো না (আরোহী অভিমানের সুরে)

,,,,,,, আচ্ছা আমার রাগী বউটা বুঝি রাগ করেছে

,,,,,, মোটেও না রাগ করবো কেনো কেউ কি আমার রাগ ভাঙতে জানে এখন(অভিমানে মুখ অন্য দিকে নিয়ে

,,,,,, আচ্ছা এবার থেকে তোমাকে সময় দেবো(আমার দিকে ফিরিয়ে)

,,,,,দেখা যাবে খেতে চলো

,,,,,, আমার তো মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করছে (আরোহীর ঠোঁটের দিকে ইশারা করে)

,,,,,, ফাজিল একটা

বলে আমার ঠোটে একটা কিস দিয়ে চলে যায়। সত্যি আরোহীকে পেয়ে আমার জীবন ধন্য। ওর মতো মেয়ে হয় না। আপনারা সবাই দোয়া করবেন জেনো সারা জীবন এভাবেই সুখে থাকি আমারা

________সমাপ্ত_______
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post