গল্প/::: ছদ্মবেশী মাফিয়া যখন কলেজ শিক্ষক। * * * লেখক/::: রাসেল চৌধুরী * * পর্ব/:::::: ( ৫ ) :::::: ( পাঁচ ) এবং শেষ

 


গল্প/::: ছদ্মবেশী মাফিয়া যখন কলেজ শিক্ষক।

*

*

* লেখক/::: রাসেল চৌধুরী 

*

* পর্ব/:::::: ( ৫ ) :::::: ( পাঁচ ) এবং শেষ

*

*

*

*

*

* পরের দিন কলেজ গেট দিয়ে ঢুকে, সামনে যেটা দেখলাম। সেটার জন্য আমি একদম প্রস্তুত ছিলাম না। আরে আপনারা খারাপ কিছু ভাববেন না। 


আমি দেখি ফারহান একটা গোলাপ ফুল নিয়ে প্রেমার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে প্রফোজ করতে আছে। 


আমি দুরে দাঁড়িয়ে প্রেমার রিয়েকশন দেখছি। দেখি প্রেমা কি করে। আমি মনে করছি প্রেমা ফুল নিবে না। কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিলো। প্রেমা ফারহান এর কাছ থেকে ফুল গুলো নিলো। 


তার পর প্রেমা যেটা করলো সেটা দেখে আমি পুরো অবাক হয়ে গেলাম। প্রেমা গোলাপ ফুল হাতে নিয়ে একটা চুমু খেলো। তার পর ফারহান এর হাত ক্লাসের ভিতরে চলে গেল। 


তার মানে প্রেমা এখন আমাকে ভালোবাসে না। আমি মনে করছি, প্রেমা আমার ওপর অভিমান করে , আমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য এমন করছে। 


কিন্তু না , প্রেমা এখন আমাকে আর ভালোবাসে না। ঠিক আছে, প্রেমা যখন আমার সাথে সুখী না, তাহলে তাকে আর জোর করবো না। আমার কাজটা শেষ হলে এই এলাকা থেকে চলে যাবো। 


আমি আর দাঁড়িয়ে না থেকে অফিস রুমে চলে গেলাম। কিছুক্ষণ পর ক্লাসে চলে আসলাম। মনটা অনেক খারাপ হয়ে গেল, । আমাকে দেখে সবাই দাঁড়িয়ে সালাম দিলো। 


তার পর সবাইকে পরিক্ষার জন্য কিছু নোট দিলাম। এবং সবাইকে বুঝিয়ে দিলাম। পরিক্ষা আরো দুই দিন পরে। প্রেমা আমার দিকে একটা বার তাকালো না। কোনো রকম ক্লাস টা শেষ করে অফিস রুমে চলে আসলাম। 


দেখতে দেখতে পরিক্ষার আজকে শেষ দিন।প্রেমা আমার সাথে আর কথা বলে নাই। সবসময় ওই ফারহান এর সাথে কথা বলতো। সবার পরিক্ষা শেষ হওয়ার পর বাহিরে এসে দেখি চার পাঁচটা গাড়ি কলেজের ভিতরে ঢুকলো। তারা আর কেউ নয় রনি মাস্তানএবং ফাহাদ মাস্তান। 


এবার আপনাদের বলি, আমি যার খোঁজে এখানে এসেছি, সে হচ্ছে ফাহাদ মাস্তান। ওকে মারার জন্য এই এলাকায় আসা। কি করেছে ফাহাদ মাস্তান তা কিছুক্ষণ পরে জানতে পারবেন। 


আমি রনি এবং ফাহাদ এর সাথে আরো দুইটা ছেলেকে দেখে একটা মুচকি হাসি দিলাম। তারা আর কেউ নয় রাফি এবং নাজিম। রনি আর ফাহাদ কে দেখে কলেজের সকল ছাত্র ছাত্রী এক জায়গায় দাঁড়িয়ে দেখতে লাগল। সবার ভিতরে ভয় ঢুকে গেছে। 


আমি তাদের সামনে যাওয়ার পর রনি বললো।


রনি/: তুই কি মনে করেছিস। আমি তোকে ধরতে পারবো না। শুনেছি তুই নাকি আমার চাচাতো ভাই ফাহাদ কে মারতে এসেছিস। 


তখন ফাহাদ মাস্তান বললো। 


ফাহাদ/: তুই আমাকে মারতে আসলি কেনো। আমি তোর কি ক্ষতি করেছি। 


আমি/: আজ থেকে ছয় মাস আগে, তুই একটা পরিবার কে সবার সামনে গুলি করে মারছিস। সেটা কি তোর মনে আছে। 


ফাহাদ/: হুম মনে আছে। ওই রফিকের কাছে চাঁদা চাইতে গেলে, আমার গালে থাপ্পড় মারে। তাই ওকে এবং ওর পরিবার কে রাস্তার মাঝখানে গুলি করে হত্যা করি। 


আমি/: তোকে আইন কিছু করে নাই। 


ফাহাদ/: এই ফাহাদ এর নাম শুনলে, এমপি মন্ত্রী ভয়ে কাঁপে। আর তুই বলছিস আইন কিছু করে নাই। 


আমি/: ওহ তাই নাকি। কিন্তু আজকে তোকে আমার হাত থেকে কে বাঁচাবে। তুই জানিস রফিক কে। ওনি হচ্ছে আমার বাবার বন্ধু। আমার সাথে অনেক দুষ্টুমি করতো। আমি ওনার সাথে বন্ধুর মতো চলাফেরা করছি। আর তুই টাকার জন্য ওনার পরিবার সহ মেরে ফেললি। যখন শুনেছি প্রসাসন তোকে কিছু করে নাই। তখন আমি এই কলেজে ছদ্মবেশে ঢুকি। একমাত্র তোকে মারার জন্য। তুই এখনো আমার আসল পরিচয় জানিস না, আমি কে। 


ফাহাদ/: ওহ তাই নাকি, তাহলে বল, তুই কে। 


আমি/: সেটা কিছুক্ষণ পর জানতে পারবি। আগে তোদের একটু কেলমা দেখাই। রাফি এবং নাজিম তোরা এদিকে আয়। 


আমার কথা শুনে রাফি এবং নাজিম আমার পাশে এসে তাড়ালো। রনি আর ফাহাদ শুধু চেয়ে আছে। তখন আমি আবার তাদের বললাম।


আমি/: তোরা জানিস ওরা কারা। ওরা হচ্ছে আমার লোক। আমি ওদের বলেছি,তোদের সাথে অভিনয় করে ঢুকতে। এবং তোদের সব খবর আমাকে দেওয়ার জন্য। 


রনি/: কিহ, ওরা তোর লোক। তার মানে এতো দিন আমাদের অবৈধ ব্যাবসা সব তুই ধংস করছিস। আজকে তোদের কেউ বাঁচাতে পারবে না, আমাদের হাত থেকে। ওই তোরা দাঁড়িয়ে দেখছিস কি। ওদের মেরে ফেল। 


এই বলে যেইনা রনির লোক আমাদের মারতে আসবে। তখন দুই টা হেলিকপ্টার ওপর থেকে মাঠের মাঝখানে এসে নামলো। এবং কলেজের গেট দিয়ে ১০/১২ টা গাড়ি ঢুকলো। 


রনির লোক সব দাঁড়িয়ে গেলো। হেলিকপ্টার থেকে দুই টা ছেলে বেরিয়ে আসলো। তারা আর কেউ নয় সিফাত আর নয়ন। এরা হচ্ছে আমার বন্ধু এবং আমার ডান হাত বাম হাত। 


সিফাত আর নয়ন আমাকে একটা কোট পরিয়ে দিলো। যে কোটে আমার লড়াই করার সব জিনিস আছে। তখন আমি ওদের বললাম। 


আমি/: আমাকে দেখে চিনতে পারিস নাই, তাই না। আমি হচ্ছি সেই মাফিয়া। যে ছদ্মবেশে দেশের জন্য কাজ করে গেছি। যার নাম শুনলে এমপি মন্ত্রী ভয়ে প্রস্রাব করে দেয়। 


ফাহাদ/: তার মানে তুই সে মাফিয়া। যাকে বাংলাদেশের সব মাস্তান ভয় পায়। 


আমি/: হুম ঠিকই ধরেছিস। আমি সেই মাফিয়া। তোদের মতো মাস্তান কে আমি মেরে মেরে রাস্তায় ফেলে রাখতাম। আমি মনে করছি বাংলাদেশে এখন আর কোনো গুন্ডা মাস্তান নেই। তাই বাবার অফিসে এক বছর ধরে কাজ করতে লাগলাম। হঠাৎ আনকেল এর হত্যার কথা শুনে , আবার আগের জগতে ফিরে আসলাম। 


রনি আর ফাহাদ দৌড়ে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলো। প্রথমে ফাহাদ বললো। 


ফাহাদ/: ভাই আমার ভুল হয়ে গেছে। আমাকে আপনি ক্ষমা করে দিন। আমি আর এমন কাজ কখনো করবো না। আমি এখন ভালো হয়ে যাবো।


এবার রনি বললো।


রনি/: ভাই , আমি আপনাকে চিনতে পারি নাই। আমাকেও আপনি ক্ষমা করে দেন। আমরা সবাই এখন থেকে ভালো কাজ করবো। কখনো খারাপ কাজ করবো না। 


আমি/: তোদের মতো মাস্তান কে আমি রাসেল কখনো ক্ষমা করবো না। তোরা আমার নাম শুনার পরেও অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন খুন খারাপি করছিস। তোদের কারনে মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারে না। তাদের মেয়েকে একা ছাড়তে পারে না ‌ । কলেজে মেয়েদের ওড়না এবং শরীরের নানান জায়গা হাত দিয়েছিস। রাস্তায় মেয়েদের ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলছিস। তোদের কোনো ক্ষমা নেই। 


এই কথা বলে রনি এবং ফাহাদ এর বুকে গুলি করা শুরু করলাম। কলেজের প্রিন্সিপাল সহ সকল ছাত্র ছাত্রী শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। 


আমি/: এই ওদের লাশ দুই টা নদীতে ভাসিয়ে দেয়। আর বাকিদের বলছি। আমি তোমাদের কিছু করলাম না, আমি জানি তোমরা ওদের কথা মতো কাজ করে গেছো। তাই বলছি ভালো হয়ে যাও। তা না হলে ওদের মতো তোমাদের মেরে নদীতে ভাসিয়ে দিবো। 


রনি আর ফাহাদ এর লোক আমার পা ধরে ক্ষমা চেয়ে বললো। তারা এসব কাজ আর কখনো করবে না। তার পর ওরা কলেজ থেকে বেরিয়ে গেল। 


এতোক্ষণ প্রিন্সিপাল স্যার আমার কাহিনি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে। আমি প্রিন্সিপাল স্যার এর সামনে যাওয়ার পর স্যার আমার পা ধরতে আসলে , আমি বলি।


আমি/: স্যার , এটা আপনি কি করছেন। 


প্রিন্সিপাল স্যার/: রাসেল তোমাকে আমি একদিন কি বলছি মনে আছে। বলছিনা যে দিন মাফিয়া কে সামনাসামনি দেখবো। সেদিন তার পা ধরে সালাম করবো। 


আমি/: স্যার আপনি আমার গুরুজন। আপনাদের কাছে শিক্ষা পেয়ে , আজ এতো দুরে আসতে পারলাম। আমি এই কাজটা অনার্স প্রথম বর্ষ থেকে শুরু করি। এটা আমরা কয়টা বন্ধু মিলে ভিতরে ভিতরে শুরু করি। 


প্রিন্সিপাল স্যার/: তোমার এই মাফিয়া হওয়ার পিছনের কারন যদি একটু বলতে। 


আমি/: ঠিক আছে স্যার। তাহলে সবাই শুনুন। আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড সিফাত আর নয়ন। আমরা তিনজনে একটা প্লান করি, দেশে গুন্ডা মাস্তান ভরে গেছে। তাদের উচিত শিক্ষা দিতে হবে। তাই আমরা তিনজনে আরো কিছু ছেলে মিলে রাতের আঁধারে এসব গুন্ডা মাস্তান কে মেরে ফেলি। এভাবে আস্তে আস্তে আমাদের অনেক ছেলে হয়ে যায়। সবগুলো বিশ্বাসী ছেলে ছিলো। তার পর আমাদের গ্রুপের একটা নাম দেওয়া হয়, মাফিয়া কিং । আর সবার বস আমাকে বানানো হয়। কারন তাদের সবার থেকে মেধা শক্তি ছিলো অনেক ভালো। আমরা এসব কাজ করতে পুরো বাংলাদেশে আমার নাম চড়িয়ে পড়ে। পুরো বাংলাদেশের ৬৪ টি জেলায় আমার লোক আছে। এসব কাজ করতে করতে যখন দেখলাম, বাংলাদেশ থেকে সব সন্ত্রাসী মাস্তান ধংস করে ফেলছি। তখন বাবার সাথে অফিসের কাজে লেগে পড়ি। এতো বছর কাজ করার পরেও আমাদের কেউ ধরতে পারে নাই। কিন্তু আমরা সবাই দিন হলে সবার সামনে দিয়ে চলাচল করতাম। 


আপনি জানেন বাংলাদেশের এক নাম্বার বিজনেস ম্যান কে। তিনি হচ্ছেন রহমান সিকদার। আর আমি হচ্ছি তার একমাত্র ছেলে রাসেল সিকদার। কয়েক মাস আগে আনকেল এর হত্যার কথা শুনে, আপনার কলেজে শিক্ষক হিসেবে জয়েন্ট করি‌ । শিক্ষকতা হিসেবে ঢুকার কারন , তাহলে কেউ আমাকে ধরতে পারবে না। আজকে সবার সামনে আসার কারণ হচ্ছে। বাংলাদেশের সব মানুষ আমাকে একটা বার দেখার জন্য । সবাই যেনো আমাকে চিনতে পারে। 


এতোক্ষনে সব সাংবাদিক, পুলিশ, রেব,বিজিবি, সেনাবাহিনী, সবাই চলে এসেছে। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো। মন্ত্রী এবং এমপি কলেজে চলে এসেছে। আমাকে একটা বার দেখার জন্য। 


মন্ত্রী আমার সামনে এসে বললো। 


মন্ত্রী/: তোমাকে একটা বার দেখার অনেক ইচ্ছে ছিলো। আল্লাহ আজকে তোমাকে দেখার সুযোগ করে দিছে। তোমার মতো ছেলে বাংলাদেশের সবার ঘরে যদি একজন করে থাকে। তাহলে কোনো সন্ত্রাসী , গুন্ডা মাস্তান কিছুই করতে পারবে না। 


হঠাৎ একটা সাংবাদিক বলে উঠলো। 


সাংবাদিক/: স্যার দেশের হয়ে এমন কাজ কেনো করছেন। 


আমি/: আমার বুঝ হওয়ার পর থেকে দেখে আসছি। বাংলাদেশে কিছু সন্ত্রাসী গুন্ডা মাস্তান দেশটাকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। রাস্তা ঘাটে মেয়েরা চলতে পারে না। বড় বড় ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা চাইলে, তারা না দিতে পারলে, ওদের লাশ পরের দিন রাস্তায় পড়ে থাকে। কিছু কিছু চেয়ারম্যান মেম্বার আছে। গরীবদের হক ঠিক ভাবে বুঝিয়ে দেয় না। গরীবদের রক্ত চুষে খায়। মেয়েদের তুলে নিয়ে তাদের ভোগ করে, মেরে ফেলে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। তাই ছোট থেকে একটা প্রতিজ্ঞা করছি। বড় হলে এদের আমি ধঃষ করবো। তার পর আস্তে আস্তে বড় হওয়ার পর শুরু করে দিই। 


তখন মন্ত্রী বললো/; তুমি কোনো চিন্তা করবে না। তোমার সাথে সরকার আছে। বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ তোমার সাথে আছে। আমরা সবাই তোমার সাথে আছি। তুমি তোমার কাজ চালিয়ে যাও। তোমার কোনো কিছুর দরকার হলে, সরকার এর কাছে বলবে। সরকার তোমাকে হেল্প করবে। 


আমি/: ধন্যবাদ স্যার। আমি শুধু সরকার এর কাছে একটা জিনিস চাইবো‌ । সেটা আমার জন্য না। দেশের গরীব দুঃখী মানুষের জন্য। গরীবদের জন্য একটা করে ঘর করে দেওয়া হোক। কয়েক টা হাসপাতাল করে দেওয়া হোক। তারা যেনো বিনামূল্যে চিকিৎসা করতে পারে। কয়েক টা স্কুল কলেজ করে দেওয়া হোক। তারা যেনো তারা যেনো ছেলে মেয়েদের বিনা পয়সায় পড়াতে পারে। তাহলে দেশে কোন ছেলে মেয়ে অশিক্ষিত থাকবে না। এটাই আমার সরকার এর কাছে যাওয়া। 


মন্ত্রী/: তুমি চিন্তা করো না। আমরা সরকারের কাছে আবেদন করবো। তোমার কথা গুলো যেনো রাখে। ইনশাআল্লাহ সরকার অবশ্যই সবকিছু করে দিবে। আমি এখন তাহলে আসি। আমার বাসায় কিন্তু একদিন অবশ্যই আসবে। 


আমি ঠিক আছে বললাম। তার পর এমপি মন্ত্রী এবং সব সাংবাদিক চলে গেলো। আমি প্রিন্সিপাল স্যার কে বললাম।


আমি/: স্যার আমি চলে যাচ্ছি। আমি এই কাজটা করার জন্য, কলেজে এসেছি। যদি কখনো ভুল কিছু করে থাকি। তাহলে আমাকে মাফ করে দিবেন। 


প্রিন্সিপাল/: আরে তোমার মতো ছেলে কখনও অন্যায় করতে পারে না। তুমি ভালো থেকো। আমার দোয়া সবসময় তোমার সাথে আছে। 


আমি প্রিন্সিপাল স্যার কে সালাম দিয়ে সিফাত আর নয়ন এর সাথে হেলিকপ্টার এর সামনে যাওয়ার পর প্রেমা আমার সামনে এসে দাঁড়ালো। 


আমি/: তুমি আমার সামনে এসে দাঁড়ালে কেনো। 


প্রেমা/: আমাকে আপনি ক্ষমা করে দেন ‌ । আমি আপনাকে চিনতে পারি নাই। আমি কখনো ভাবিনি আপনি সেই মাফিয়া। প্লিজ আমাকে আপনি ক্ষমা করে দেন। 


আমি/: তুমি তো আমার সাথে কোনো দোষ করো নাই। তাহলে ক্ষমা চাচ্ছো কেনো।


প্রেমা/: আমি আপনাকে ভালোবেসে কষ্ট দিছি। যদি আগে জানতাম আপনি সেই মাফিয়া, তাহলে কখনোই আপনাকে ভালোবাসার কথা বলতাম না। 


আমি/: কেনো মাফিয়া হলে কি ভালোবাসা যায় না। 


প্রেমা/: যায়, কিন্তু আপনাকে তো আমি কষ্ট দিছি। আপনি যখন মেয়েদের সাথে আমার সামনে কথা বলেন, তখন আমার অনেক খারাপ লাগে। আপনি অনেক দিন এমন করছেন। তখন ফারহান আর আমি আপনার সামনে অভিনয় করি, আপনাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য। 


আমি/: তাহলে তুমি আমার সাথে কথা বলো না কেনো। তোমার সাথে কথা বলতে গেলে, আমাকে এড়িয়ে চললে কেনো। 


প্রেমা/: ওদিন আপনি আমার বাসায় আসবেন বলে আসলেন না দেখে, আপনার সাথে কথা বলি নাই। কিন্তু আপনি তো আমার সাথে একটা বার জোর করলেন না। আমি চাইছি আপনি আমার সাথে জোর করে কথা বলেন। কিন্তু আপনি বললেন না। 


আমি/: আমি তোমার সাথে যদি জোর করে কথা বলতে যাই, তাহলে ছাএ ছাত্রী কি ভাববে আমাকে। 


প্রেমা/: যে যা ভাবার ভাবুক , আপনি করলেন না কেন।


আমি/: আমি মনে করছি, তুমি আমার ওপর অভিমান করে এমন করছো। তাই পরিক্ষার পর তোমার সাথে কথা বলবো। কিন্তু পরিক্ষার কিছু দিন আগে থেকে তুমি ফারহান এর সাথে হেসে হেসে কথা বলো। তার হাত ধরে চলাফেরা করো। আমার সামনে ফারহান তোমাকে প্রপোজ করে, তুমি ওর হাত থেকে ফুল নিয়ে ফুলে একটা চুমু দাও। তার পর ওর হাত ধরে ক্লাসে চলে যাও। তাই আমি মনে করছি, তুমি এখন আর আমাকে ভালোবাসো না। 


প্রেমা/: সেটা তো আপনাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য করেছি। আমি আর ফারহান যাষ্ট ফ্রেন্ড। আমাদের মধ্যে অন্য কিছুই নেই। আর ফারহানের গার্লফ্রেন্ড আছে। আমি ওকে বলছি আমার সাথে অভিনয় করতে। 


আমি/: ওহ, তাহলে এই ব্যাপার। তুমি জানো আমি তোমার এসব দেখে অনেক কষ্ট পেয়েছি। পরে চিন্তা করলাম, আমার দ্বারা এসব প্রেম ভালোবাসা হবে না। জীবনের প্রথম কাউকে ভালোবাসলাম। প্রথম প্রেমে ব্যর্থ। তাই ভাবলাম, আমি যে কাজে এসেছি, সেটা শেষ করে নিজের বাসায় চলে যাবো। এসব প্রেম ভালোবাসা আর করবো না। একবারে বিয়ের পর বউয়ের সাথে প্রেম করবো। 


প্রেমা/: এখন কি আমাকে ভালোবাসেন না। 


আমি/: ভাসতে পারি, যদি এরকম কষ্ট আর কখনো না দাও। 


প্রেমা /: আমি আর এমন কষ্ট আপনাকে দিবো না। সবসময় আপনাকে ভালোবাসা দিয়ে আপন করে রাখবো। 


আমি/: তুমি আমাকে এবার আপনি বলা বাদ দাও। এখন থেকে তুমি করে বলবে। 


প্রেমা/: ঠিক আছে তুমি করে বলবো। 


আমি/: সিফাত আর নয়ন, তোরা দুইজন একটু অন্য দিকে তাকা তো। 


আমার কথা শুনে সিফাত আর নয়ন অন্য দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে। ওরা আমার মতলব বুঝে গেছে। আর বুঝবে না কেনো। তারা তো আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড। 


সিফাত আর নয়ন অন্য দিকে তাকানোর পর আমি প্রেমার ঠোঁটের সাথে ঠোট লাগিয়ে দিলাম। কারন প্রেমার ঠোঁট দুটো আমাকে তার দিকে টানছে, তাই আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলাম না। 


প্রেমা আমাকে জড়িয়ে ধরে পাগলের মতো কিস করতে লাগলো। প্রায় পাঁচ মিনিট পর ছেড়ে দিলাম। প্রেমা আমার বুকের ভিতরে মাথা লুকিয়ে ফেললো। 


আমি/: এই পাগলি, তোমার আবার কি হয়েছে। 


প্রেমা/: তুমি ওদের সামনে এটা কি করলে। তোমার দেখি লজ্জা সরম কিছুই নেই। 


আমি/: তুমি যখন আমাকে করতে। তখন আমি কিছু করেছি। আর ওরা আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড। তাই কিছু হবে না। 


প্রেমা/: ঠিক আছে। এখন কি তুমি বাসায় চলে যাবে।


আমি/: হুম, এখন আমি বাসায় যাবো। কালকে আব্বু্ আম্মুকে তোমাদের বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে পাঠাবো। 


প্রেমা/: সত্যি বলছো। 


আমি/: হুম পাগলি। তোমাকে আমি একবারের জন্য বাসায় নিয়ে আসবো। তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না। 


প্রেমা/: আমিও তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না। তুমি যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাকে বিয়ে করে, তোমাদের বাসায় নিয়ে যাও। 


আমি/: ঠিক আছে। এখন তুমি বাসায় যাও। কালকে আব্বু আম্মু কে পাঠিয়ে দিবো। 


প্রেমা): তোমাকে ছেড়ে যেতে ভালো লাগছে না। 


আমি/: আরে পাগলি, কিছু দিন অপেক্ষা করো। তার পর তো তোমাকে নিয়ে আসবো। 


প্রেমা/: ঠিক আছে। এখন আমাকে জড়িয়ে ধরে আরেক বার কিস করো। 


কি আর করার, প্রেমার কথা মতো আরেক বার কিস করলাম। তার নাজিম আর রাফি কে বললাম, প্রেমা কে বাসায় দিয়ে আসতে।


নাজিম এবং রাফির সাথে প্রেমা চলে গেলো। আমি একটা হেলিকপ্টারে উঠে পড়লাম। সিফাত আর নয়ন তারা অন্য টায় উঠলো। তার পর হেলিকপ্টার উপরে উঠে গেলো। বেশি সময় লাগলো না ঢাকায় আসতে। 


দেখতে দেখতে সে দিনটা চলে আসলো। মানে আমার আর প্রেমার বিয়ে হয়ে গেল। আমরা সবাই অনেক সুখে জীবন যাপন করতে লাগলাম। প্রেমাকে একটা কলেজে ভর্তি করিয়ে দিছি। প্রতিদিন সকালে আমার সাথে করে কলেজে নিয়ে যাই, আবার ছুটি হওয়ার পর নিয়ে আসি। 


সরকার আমার কথা রেখেছে। তারা অলরেডি কাজ শুরু করে দিছে। এখন দেশে কোনো সন্ত্রাসী গুন্ডা মাস্তান কিছুই নেই। কেউ কোনো খারাপ কাজ করার সাহস পায় না। ধন্যবাদ সবাইকে। 


  চশমা পরা সেই দুচোখের মাতাল করা দৃষ্টি, মন জমিনে নামিয়েছিলো মুসল ধারায় বৃষ্টি। তোর ঠিকানায় আছি আমি, মন পাড়াতে ঘুরি। সেদিন থেকে, যেদিন নিলি মনটা করে চুরি।


  মনের নীল খামে, প্রথম চিঠি তোমার নামে। তাও আবার মনে মনে, পাঠিয়েছি মোবাইল ফোনে। পরে দেখো শেষ লাইন, মিস করছি তোমায়...

*

*

*

*

*

*

* ::::::::::::::::::::::::::::::: সমাপ্ত::::::::::::::;:::::::::::

*

*

*

*

* গল্পটা বড় করার ইচ্ছে ছিলো। কিন্তু আপনাদের তেমন সাড়া পাচ্ছি না। খালি খালি সময় নষ্ট করে গল্প লিখে লাভ কি। তাই শেষ করে দিলাম। গল্প ভালো না লাগলে বলবেন, তাহলে অন্য গল্প লিখবো। 


নিজের সবকিছু নষ্ট করে গল্প লিখি। কিন্তু আপনাদের কোনো সাড়া শব্দ নেই। তাই এখন থেকে ভাবলাম, এখন থেকে নিজের মতো করে গল্প লিখবো। যখন খুশি তখন পোস্ট করবো। ভালো লাগলে থাকতে পারেন, আর না হলে আনফ্রেন্ড করে দিবেন। 


লাষ্ট পর্বে লাইক এবং কমেন্ট করলেও খুশি, না করলেও খুশি। আমি এখন থেকে লাইক এবং কমেন্ট কারো কাছে চাইবো না। হয়তো কেউ বলবেন আমি ভাব দেখাই, আপনাদের ধারনা ভুল, আমি কখনো ভাব দেখাই নাই , আর কখনো দেখাবো না।


বায় বায় বায় বায় বায় বায় বায় বায় সবাই ভালো থাকবেন।

2 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post